ম্যারাডোনার গোল্ডেন বল নিলামের মামলায় হেরে গেলো তার পরিবার
১৯৮৬ বিশ্বকাপে জেতা ডিয়েগো ম্যারাডোনার গোল্ডেন বলটি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেয় ফ্রান্সের নিলামকারী প্রতিষ্ঠান আগুত। কিন্তু প্রয়াত আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির পরিবার এতে বাধা দেয়।
তাদের দাবি ছিল, ট্রফিটি চুরি গিয়েছিল। আর এই ট্রফি নিলামে তোলার কোনো অধিকার নেই তার বর্তমান মালিকের। যার জেরে মামলাও করেন ম্যারাডোনার উত্তরাধিকারীরা।
তবে সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছেন ফরাসি আদালত। বৃহস্পতিবার তাদের আইনজীবী বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন এ কথা।
নিলাম বন্ধ করতে ম্যারাডোনার পরিবার একটি জরুরি বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। তবে তাদের আইনজীবী জিলেস মোরেউ দ্য এপিকে বলেন, আদালতের রায় ডিয়েগো ম্যারাডোনার উত্তরাধিকারীদের পক্ষে আসেনি। আগামী বৃহস্পতিবার ট্রফিটি প্যারিসে নিলামে তুলবে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান আগুতে।
আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জেতানো মহানায়কের গোল্ডেন বলের অনেক বছর ধরেই হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। কীভাবে নিখোঁজ হলো, সেটাও কেউ জানতেন না।
কিংবদন্তির মৃত্যুর সাড়ে তিন বছর পর হারিয়ে যাওয়া সেই গোল্ডেন বল হঠাৎ করেই আলোচনায়। ফ্রান্সের নিলামকারী প্রতিষ্ঠান আগুত ম্যারাডোনার গোল্ডেন বল ফিরে পাওয়ার ঘোষণা দিয়ে জানায়, সেটি নিলামে তোলা হবে।
এরই মধ্যে ম্যারাডোনার উত্তরাধিকারীদের (তার দুই মেয়ে) পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, গোল্ডেন বল ট্রফিটি চুরি গিয়েছিল। ট্রফিটি নিলাম থেকে সরিয়ে নিতে তারা প্যারিসের কাছাকাছি ন্যানতেরে বিচারিক আদালতকে জরুরি অনুরোধ জানান। চুরি ও চুরির পর ট্রফিটি লুকিয়ে রাখার জন্য আলাদা করে অভিযোগও করেন তারা।
তবে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান আগুত জানায়, ২০১৬ প্যারিসে একটি ব্যক্তিগত সংগ্রহশালার নিলাম থেকে অন্য জিনিসপত্রের সঙ্গে ম্যারাডোনার ছিয়াশির বিশ্বকাপের গোল্ডেন বলও পুনরায় পাওয়া গেছে।
২০২০ সালের নভেম্বরে ৬০ বছর বয়সে মারা যান ম্যারাডোনা। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বেই চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। ম্যারাোনা জেতেন গোল্ডেন বল।
গোল্ডেন বল ট্রফিটি হারিয়ে যাওয়ার পর কেউ কেউ দাবি করেছিলেন, পোকার খেলায় এটি ম্যারাডোনা হারিয়েছেন কিংবা ঋণ পরিশোধে বেচে দিয়েছেন।
তবে অনেকের দাবি, নেপলসের একটি ব্যাংকে ম্যারাডোনা তার গোল্ডেন বল ট্রফিটি রেখেছিলেন। কিন্তু ১৯৮৯ সালে স্থানীয় দুষ্কৃতকারীরা ব্যাংকটি লুট করে। ইতালিয়ান ক্লাব নেপলসে কিংবদন্তি তকমা পাওয়া ম্যারাডোনার উত্তরাধিকারীরাও বিশ্বাস করেন, ট্রফিটি ব্যাংক থেকে খোয়া গিয়েছিল। ফলে তারা ট্রফির নিলাম আটকাতে চান।
এদিকে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান আগুত দাবি করে, অনেক বছর আগে যিনি ওই ট্রফিটা কিনেছিলেন, তিনি জানতেন না ট্রফিটা চুরি গেছে। আগুতের পক্ষ থেকে বলা হয়, ট্রফিটি নিলামে তুলতে ‘প্রয়োজনীয় সব রকম গবেষণা ও ডেটাবেজ পরীক্ষা করা হয়েছে ফরাসি ও ইতালিয়ান কর্তৃপক্ষের সাহায্য নিয়ে।’
আদালতের রায় পক্ষে আসার পর ৬ জুন অনুষ্ঠিত হবে এই নিলাম। নিলামে অংশগ্রহণকারীদের বলা হয়েছে দেড় লাখ ইউরো জমা দিয়ে তারপর নিলামে অংশ নিতে।
এমএমআর/জিকেএস