কিংস-আবাহনী ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিলেন দুই ব্রাজিলিয়ান
প্রথম চার ম্যাচে ৫ পয়েন্ট হারিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শুরুতেই খাদের কিনারায় পড়েছিল আবাহনী। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সর্বাধিক ৬ বারের চ্যাম্পিয়নদের সামনে একটাই পথ ছিল বসুন্ধরা কিংসকে হারানো।
সে লক্ষ্য নিয়েই শুক্রবার পঞ্চম রাউন্ডে হোমভেন্যু গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল আবাহনী। তবে পারেনি আর্জেন্টাইন কোচ দিয়েগো আন্দ্রেস ক্রুসিয়ার দল। ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচ উল্টো আবাহনী হেরে গেছে ২-০ গোলে। ৫ ম্যাচে দ্বিতীয় হারে কিংসের চেয়ে ৮ পয়েন্ট পেছনে পড়ে গেলো আকাশি-নীলরা।
এ ম্যাচে দুই দলে ছিলেন ৫ ব্রাজিলিয়ান। কিংসের জার্সিতে ৩ জন, আবাহনীর ২। পুরো ম্যাচেই ছিল এই ব্রাজিলিয়ানদের দাপট। আবাহনীর ব্রাজিলিয়ানরা কাজের কাজটি করতে না পারলেও ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন কিংসের দুই ব্রাজিলিয়ান রবসন রবিনহো ও মিগুয়েল। দুই জনের দুই গোলে লিগে টানা ৫ ম্যাচ জিতলে কিংস। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান আরো মজবুত করলো অস্কার ব্রুজনের দল।
গোপালগঞ্জের দর্শকরা ঘরে ফিরেছেন ২ গোল দেখে; কিন্তু তারা দেখতে পারতেন আরো কিছু গোল। গোল সংখ্যা বেশি হয়নি দুই দলের দুই গোলরক্ষকের দৃঢ়তায়। দারুণ কিছু সেভ করেছেন কিংসের আনিসুর রহমান জিকো ও আবাহনীর শহিদুল আলম সোহেল।
ম্যাচের প্রথম দর্শণীয় সেভ করেছিলেন কিংসের আনিসুর রহমান জিকো। ৬ মিনিটে রিদয়ের ক্রসে ব্রাজিলিয়ান ওয়াশিংটন হেড নিয়েছিলেন। জিকু দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন আবাহনীর প্রথম আক্রমণ। ২৪ মিনিটে জিকোকেও ছাড়িয়ে যান আবাহনীর গোলরক্ষক সোহেল। বাম দিক থেকে রবসনের ক্রসে মাপা হেড ছিল রাকিবের। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে কিংসের প্রথম আক্রমণ রুখে দেন সোহেল।
তবে লিড নিতে বেশি সময় নেয়নি আবাহনী। ২৬ মিনিটে ডান দিক থেকে মিগুয়েলের কর্নারে হেড নিয়েছিলেন ডরিয়েলটন। বক্সে দাঁড়ানো রবসন ব্যাকভলিতে বল পাঠান আবাহনীর জালে।
এগিয়ে যাওয়ার পর কিংসের আক্রমণের ধার আরো বেড়ে যায়। যদিও ব্যবধান দ্বিগুণ করতে অপেক্ষা করতে হয় ৭২ মিনিট পর্যন্ত। ডরিয়েলটনের বাড়ানো বল ধরে কাছের পোস্ট দিয়ে আবাহনীর জালে বল পাঠান মিগুয়েল।
মিগুয়েল গোল করেছেন, করানোয় ভুমিকা রেখেছেন। আবার গোল সেভও করেছেন। শেষ দিকে আবাহনীর পোস্টে ভালো একটি শটও নিয়েছিলেন। সোহেলের সেভে দ্বিতীয় গোলবঞ্চিত হন মিগুয়েল। সবকিছু মিলিয়ে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও উঠেছে তার হাতে।
আবাহনীর ব্যবধান কমানোর শেষ সুযোগটিও রুখে দিয়েছেন জিকো। এনামুল গাজীর শট রুখে দিয়ে শেষবারের মতো কিংসকে বিপদমুক্ত করেন জিকো। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর রেফারির সঙ্গে অসদাচারণ করায় লালকার্ড দেখেন কিংসের ববুরবেক।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে এটি বসুন্ধরা কিংসের কাছে আবাহনীর টানা চার হার। ২০২২ সালের প্রথম পর্বে দুই দলের ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল। পরের সব ম্যাচই জিতলো চ্যাম্পিয়নরা। এ মৌসুমে দ্বিতীয়বার আবাহনীকে হারালো কিংস। স্বাধীনতা কাপের সেমিফাইনালে আবাহনী ৪-০ গোলে হেরেছিল।
আরআই/আইএইচএস/