কপাল পুড়লো ডর্টমুন্ডের, বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩০ পিএম, ২৮ মে ২০২৩

১১ বছর পর প্রথম জার্মান বুন্দেসলিগা শিরোপা জয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। শেষ ম্যাচে নিজেদের মাঠে মেইঞ্জকে হারাতে পারলেই সব হিসাব-নিকাশ বাদ দিয়ে জার্মান চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্য বরুশিয়ার। শেষ ম্যাচে এসে তারা গুরুত্বপূর্ণ ২টি পয়েন্ট হারিয়ে বসলো। মেইঞ্জকে হারাতে পারেনি তারা। উল্টো ড্র করেছে ২-২ গোলে।

বরুশিয়ার এই পরাজয়ের পরই বায়ার্ন মিউনিখের সামনে শিরোপা জয়ের রাস্তা খুলে যায়। এফসি কোলোনের মাঠে গিয়ে জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে বায়ার্ন। হিসাব-নিকাশ তৈরি করাই ছিল। ভুল করেনি টমাস টুখেলের শিষ্যরা। কোলোনেকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা ১১তম শিরোপা জয় করে নিলো ভাবারিয়ানরা।

Borusia

এবারের জার্মান বুন্দেসলিগায় হলো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কে শিরোপা জিতবে, তা নিশ্চিত ছিল না। একেবারে লিগের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে ফুটবলভক্তদের।

১৮ দলের লিগে প্রতিটি দলকে খেলতে হয়েছে ৩৪টি করে ম্যাচ। এই ৩৪ ম্যাচ শেষে বায়ার্ন মিউনিখ এবং বরুশিয়া ডর্টমুন্ড- দুই দলেরই পয়েন্ট সমান ৭১ করে। কিন্তু গোল ব্যবধানে এগিয়ে গেছে বায়ার্ন। বায়ার্ন গোল দিয়েছে মোট ৯২টি। হজম করেছে ৩৮টি। গোল ব্যবধান +৫৪। অন্যদিকে বরুশিয়া গোল দিয়েছে ৮৩টি, হজম করেছে ৪৪টি। গোল ব্যবধান +৩৯। এই ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত হলো বায়ার্নের।

বরুশিয়া-মেইঞ্জ (২-২)

১১ বছর শিরোপা জয়ের যে স্বপ্ন, তা মেইঞ্জের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের ফুটবলাররা।

২০১২ সালের পর বরুশিয়া শিরোপা জিতবে, এমন প্রত্যাশা নিয়ে সিগন্যাল ইদুনা পার্কে হাজির হয়েছিল প্রায় ৮১ হাজার দর্শক। পুরো ইদুনা পার্ক এদিন পরিণত হয় হলুদের সমুদ্রে।

হলুদ জার্সির ওপর কালো স্ট্রাইপের জার্সি পরা আরও হাজার দশেক সমর্থক ভিড় করেছিলেন স্টেডিয়ামের বাইরে। বরুশিয়া শিরোপা উদযাপন করবে, এ জন্য ক্লাবের পক্ষ থেকে এক লাখ ২০ হাজার লিটার বিয়ার অর্ডার করা হয়েছিল।

Borusia

কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের, কোনো কিছুই উদযাপন করা হলো না। ম্যাচের শুরুতেই বরুশিয়া সমর্থকদের স্তব্ধ করে দেন মেইঞ্জের আন্দ্রেস হ্যান্স ওলসেন। ১৫তম মিনিটেই গোল করে বসেন তিনি। ২৪ মিনিটে আরও একবার পুরো সিগন্যাল ইদুনা পার্ককে হতাশায় মুড়ে দেন করিম ওনিসিউ। খেলার আধাঘণ্টা যাওয়ার আগেই ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে বরুশিয়া।

২-০ গোলে পিছিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে তারা। দ্বিতীয়ার্ধে গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে বরুশিয়া। ৬৯তম মিনিটে প্রথম রাফায়েল গুয়েরেইরোর গোলে এক গোল পরিশোধ করে তারা।

Borusia

পরাজিত হচ্ছে, এই ভেবে যখন মাঠ থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বরুশিয়ার সমর্থকরা, তখন দ্বিতীয় গোল শোধ করেন নিকলাস সুলে। ৯০+৬ মিনিটে গোলটি করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ড্রয়ের সান্ত্বনা নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।

কোলোনেকে ১-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন

একদিকে যেমন দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছিল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, অন্যদিকে সৌভাগ্য ভর করেছিল বায়ার্নের ওপর। যেখানে ম্যাচটি তারা ১-১ গোলে ড্র করে মাঠ ছাড়বে, শিরোপা হাতছাড়া করার মানসিক প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছে প্রায়, সেখানে পুরো আলিয়াঞ্জ এরেনাকে উৎসবে পরিণত করে দেন জামাল মুসিয়ালা।

৮৯তম মিনিটে তার করা গোলেই জার্মান বুন্দেসলিগায় টানা ১১তম চ্যাম্পিয়নশিপ ঘরে তুলে নিলো বায়ার্ন মিউনিখ। বলা যায় নাটকীয়ভাবেই জয় পেয়েছে বায়ার্ন। মুসিয়ালার গোলটি ছিল নাটকীয়ই। এই নাটকীয় গোল করেই বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হাত থেকে শিরোপাটি কেড়ে নিলো বায়ার্ন।

বায়ার্ন মিউনিখ শিরোপা জিতবে- এ আশা তাদের কোনো অন্ধসমর্থকও করেনি এবার। কিন্তু নাটকীয়ভাবে বরুশিয়ার ড্র এবং শেষ মুহূর্তে জামাল মুসিয়ালার গোল, পুরো চিত্রই পরিবর্তন করে দিলো। পুরো মৌসুমে যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছিল, তার সমাপ্তি ঘটলো নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে।

Bayarn

বায়ার্ন, বরুশিয়ার সঙ্গে জার্মান বুন্দেসলিগা থেকে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলবে আরবি লেইপজিগ এবং ইউনিয়ন বার্লিন। তারা দু’দল হয়েছে যথাক্রমে তৃতীয় এবং চতুর্থ। হার্থা বার্লিন এবং শাল্কে জিরোফোর- এই দুই দল রেলিগেটেড হয়ে নেমে গেছে ফাস্ট ডিভিশিন। এছাড়া ভিএফবি স্টুটগার্টকে খেলতে হবে রেলিগেশন প্লে-অফ।

কোলোনের মাঠে ম্যাচের ৮ম মিনিটে কিংসলে কোম্যানের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। এই ১-০ গোলের ব্যবধান নিয়েই ম্যাচ গড়িয়ে যায় ৮১ মিনিট পর্যন্ত। ওই সময় গিয়ে পেনাল্টির দেখা পায় কোলোনে। স্পট কিক থেকে গোল করেন ডেজান লুবিসিস। ৮৯ মিনিটে নাটকীয় গোল করে জামাল মুসিয়ালা বায়ার্নকে শিরোপা উপহার দেন।

আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।