মাঠে কাউকে ভয় পাই না, বাহরাইনকে রুখে দিয়ে অধিনায়ক তানভীর
ফিফা র্যাংকিংয়ে বাহরাইন ও বাংলাদেশের অবস্থানই বলে দেয় দুই দেশের লড়াইয়ে ফেভারিট কারা। বাংলাদেশ ১৯২, বাহরাইন ৮৫; পার্থক্য ১০৭ ধাপ। এই দুই দেশের জাতীয় দল হোক কিংবা বয়সভিত্তিক দলের খেলা হোক, মাঠে নামার আগে তো পরিস্কার ফেভারিট মধ্যপ্রাচ্যের দলটি।
কিন্তু শনিবার রাতে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দল র্যাংকিংকে শুধুই কাগজের হিসেব বানিয়ে ছেড়েছে। মাঠে লড়েছে সমানে সমান। ভয়ডরহীন ফুটবল খেলে বাহরাইনকে তাদের মাঠেই রুখে দিয়েছে গোলশূন্যভাবে।
দেশের মানুষ যখন গভীর ঘুমে তখন বাহরাইনের ইসা শহরের শেখ আলি বিন মোহাম্মদ বিন খলিফা স্টেডিয়ামে লাল-সবুজ জার্সি গায়ে একদল যুবক বুক চিতিয়ে লড়াই করছিল বাহরাইনের বিপক্ষে। বাহরাইনকে তাদের মাটিতে রুখে দিয়ে হোটেলে ফিরেছেন তারা। বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য অনন্য এক রাতই বলা যায়।
দুর্দান্ত সূচনা এশিয়ান অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বে। বাকি তিন প্রতিপক্ষ ভুটান, কাতার ও নেপালের বিপক্ষে ভালো কিছু করতে পারলে চূড়ান্ত পর্বে ওঠার প্রত্যাশাও পূরণ হতে পারে যুব দলের। স্বাগতিকদের রুখে দিয়ে আত্মবিশ্বাসও এখন তুঙ্গে তানভীর হোসেনদের।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দলের অধিনায়ক তানভীর হোসেন বাহরাইন থেকে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন শনিবার রাতে তাদের যুদ্ধজয়ের (ড্রটা জয়ের সমানই) কাহিনী।
কীভাবে সম্ভব হলো বাহরাইনকে রুখে দেওয়া? তানভীরের জবাব, ‘আমরা কিছুদিন আগে ভারতের ভুবনেশ্বরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলে এসেছি। সেখান থেকে যে রেজাল্ট নিয়ে ফিরেছি সেটাই আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন আমরা মাঠে নামার আগেই হেরে যাই না, খেলা শুরুর আগেই মাথা নোয়াই না। প্রতিপক্ষ যেই হোক, মাঠে খেলি বুক চিতিয়ে। আগের বাংলাদেশের মধ্যে এখনকার বাংলাদেশের অনেক তফাৎ।’
প্রতিপক্ষ বাহরাইন। মাঠে নেমে কী মনে হয়েছিল? ‘আমাদের সবার প্রতিজ্ঞা ছিল, ভারতে যা করেছি এখানেও সেটা করতে হবে। আমরা কিছুতেই ওদের ছেড়ে দেবো না। নিজেদের শতভাগ উজার করে দেবো। আল্লার রহমতে আমরা ভালো রেজাল্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছি। এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারতো?’- বলছিলেন তানভীর হোসেন।
তানভীররা কখনোই হারের কথা মাথায় আনেননি, ‘ম্যাচ হেরে যাবো সেটা কখনও মাথায় আনিনি।’ বাংলাদেশ গোলের কয়েকটা সুযোগ পেয়েছিল। তাহলে কি জয়ের সম্ভাবনাও ছিল? ‘জিততে পারতাম কি না জানি না। তবে আমরা গোটা তিনেক ভালো সুযোগ পেয়েছিলাম। একটা ফ্রি কিক গোলের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল। দুইবার গোলরক্ষককে একা পেয়েও মিস হয়েছে। এগুলোর একটা কাজে লাগলে তো ম্যাচের ফল অন্যরকম হতে পারতো’- বাহরাইন থেকে বলছিলেন তানভীর।
একটা ভালো শুরু। এখন কী লক্ষ্য বাছাইপর্বে? অধিনায়ক তানভীর হোসেনের জবাব, ‘আমরা প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের পেয়ে ভালো হয়েছে। আমরাও চেয়েছিলাম স্বাগতিকদের বিপক্ষে যদি ভালো একটা রেজাল্ট করতে পারি তাহলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে, সেটাই হয়েছে। এখন আমাদের পরের ম্যাচ ভুটানের বিপক্ষে। ঐ ম্যাচেও ভালো ফলাফল করতে চাই।’
র্যাংকিংয়ে বাইরাইনের চেয়েও অনেক এগিয়ে কাতার। এখন কি মনে হয় কাতারের বিপক্ষেও ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব? ‘আসলে এ মুহূর্তে আমার কাতারকে নিয়ে ভাবছি না। পরের ম্যাচ আমাদের ভুটানের বিপক্ষে। এখন ওই ম্যাচ নিয়ে যত ভাবনা ও পরিকল্পনা আমাদের। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগুতে চাই। মাঠে আমাদের প্রতিপক্ষ কে তা নিয়ে এখন আর ভাবি না। আমাদেরকে নিজেদের খেলাটা খেলতে হবে। কোন দলকে ভয় পেলে চলবে না, ভয় পাইও না’- বাকি ম্যাচগুলো নিয়ে বলছিলেন অধিনায়ক তানভীর।
আরআই/এসএএস/জিকেএস