এল ক্লাসিকো: বার্সার মনে ভয় না থাকলেও আছে রিয়ালের
ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে পুরনো এবং মর্যাদার দ্বৈরথের একটি ‘এল ক্লাসিকো’। আবেগ-সম্মানের সেই লড়াইয়ে আজ রাত ৮টা ১৫ মিনিটে মাঠে নামছে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ।
ন্যু ক্যাম্পে চলতি মৌসুমে প্রথমবার দেখা হতে যাচ্ছে বার্সা-রিয়ালের। লা লিগার এই ম্যাচে দুদলেই চায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে মানসিকভাবে এগিয়ে যেতে। ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় বার্সার কোচ রোনাল্ড কোম্যান জানিয়েছেন, এল ক্লাসিকো নিয়ে কোনো ভীতি কাজ করছে না তার মনে। ওদিকে, রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তির সুর ভিন্ন। তিনি বলছেন, বহুল চর্চিত এই দ্বৈরথের আগে ভয় পাওয়াটাই ভালো।
বার্সার বিপক্ষে শেষ তিন ম্যাচেই জয় পেয়েছে রিয়াল। ন্যু ক্যাম্পে শেষ দুই দেখাতেও হার নেই লস ব্লাঙ্কোসদের। তবুও বড় ম্যাচ বলে রিয়ালের বর্ষীয়ান কোচ আনচেলত্তির মনে ভয় কাজ করছে। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এই ইতালিয়ান বলেছেন, ‘এসব ম্যাচের আগে হালকা ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। আর এই ভয় ভালো ফলাফল এনে দিতে পারে। আমি বলছি না, আমরা আতঙ্কে আছি। তবে হারের চেয়ে বাজে স্বাদ কিন্তু আর কিছুতে নেই।’
সাম্প্রতিক সময় বিবেচনায় রিয়ালের চেয়ে বেশ দুরাবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন পার করছে বার্সা। মাঠ ও মাঠের বাইরে টালমাটাল অবস্থা কাতালান ক্লাবটির। তবুও তাদের ম্যানেজার কোম্যানের উচ্চবাচ্যের যেন শেষ নেই। এল ক্লাসিকোকে সামনে রেখে তিনি বলছিলেন, ‘আমরা এই ম্যাচটা খেলতে মুখিয়ে আছি। জানি আমাদের মাঠে কী করতে হবে এবং আমরা ঘরেই খেলছি। সুতরাং, আমি ভয়ের কিছু দেখছি না।’
বার্সা-রিয়াল ম্যানেজারের এমন দুই মন্তব্য চরম উত্তেজনার এল ক্লাসিকোর উত্তাপে যেমন পানি ঢেলে দিয়েছে, তেমনি দুই দলের অনেক তারকা খেলোয়াড় চলতি মৌসুমে শুরুর আগে ক্লাব ছাড়ায় খানিকটা রঙও হারিয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই লড়াই।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো তো বছর তিনেক আগে রিয়াল ছেড়েছেন। এরপর থেকে বার্সার লিওনেল মেসি এবং রিয়ালের সার্জিও রামোসদের কল্যাণে এতদিন ধরে বাড়তি কদর পেয়ে আসছিল এল ক্লাসিকো। সেই মেসি-রামোসও চলে গেছেন। দুই দলের দুই অধিনায়ক এখন ফরাসি ক্লাব পিএসজির ফুটবলার!
তবে তারকারা চলে যাওয়ায় বার্সা-রিয়ালের তরুণ ফুটবলারদের সুযোগ আলোড়ন কারার। বার্সায় আনসু ফাতিকে ধরা হয় মেসির যোগ্য উত্তরসূরি। প্রায় এক বছর ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে থাকা এই ফরোয়ার্ড চলতি মৌসুমে ফিরে দেখাচ্ছেন নিজের ঝলক। আগের দুই মৌসুম অনেক সমালোচনার শিকার হওয়া রিয়ালের ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুসও আনচেলত্তির অধীনে নিজেকে মেলে ধরছেন। আজকের লড়াইটা তাই যেমন বার্সা-রিয়ালের, তেমনি অনেকাংশে ফাতি-ভিনিসিয়ুসেরও।
শেষ চার দেখায় বার্সার কাছে না হারায় আজ নিশ্চিতভাবে ফেবারিট হিসেবেই ন্যু ক্যাম্পে নামবে রিয়াল। এ ছাড়া মুখোমুখি দেখায়ও চিরশত্রু কাতালান রাজ্যের ক্লাবটির বিপক্ষে এগিয়ে মাদ্রিদের ক্লাবটি। প্রাক-মৌসুম, কিংবা প্রীতি ম্যাচের হিসাব বাদ দিলে, এখন পর্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ২৪৬বার একে অপরের বিপক্ষে খেলেছে বার্সা-রিয়াল। যেখানে বার্সার ৯৬ জয়ের বিপরীতে, রিয়ালের জয় ৯৮ ম্যাচ।
জয়ের সংখ্যাটাকে সেঞ্চুরির পথে আরও একধাপ নিতেই আজ তাই লড়বে রিয়াল। তবে বার্সা কি এত সহজেই ছেড়ে কথা বলবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের?
প্রশ্নটি তোলা থাক, আর উত্তরের জন্য অপেক্ষা করা যাক রাত পর্যন্ত।
এসএস/এমএস