ইতালির কাছে ইউরোয় হারের প্রতিশোধের মিশন আজ স্পেনের
গেল বছরের নভেম্বরের পর সেমিফাইনাল দিয়ে আজ রাতে আবার মাঠে গড়াচ্ছে উয়েফা নেশনস লিগের ম্যাচ। প্রথম সেমিফাইনালে রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে মিলানের ঐতিহাসিক সানসিরো স্টেডিয়ামে ফাইনালের টিকিট কাটার লড়াইয়ে নামবে ইতালি-স্পেন। আর আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাতে তুরিনের জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে বেলজিয়াম-ফ্রান্স।
একটু কাকতালীয় অথবা অদ্ভুতুড়ে কি না! বড় কোনো টুর্নামেন্ট মানেই এখন ইতালি-স্পেন অথবা বেলজিয়াম-ফ্রান্স দ্বৈরথের দেখা মিলবেই। এই তো আজ থেকে ঠিক তিন মাস আগে জুলাইতে উয়েফা ইউরো কাপে সেমিফাইনালেই মুখোমুখি হয়েছিল ইতালি এবং স্পেন।
আর বেলজিয়াম-ফ্রান্সের সর্বশেষ দেখাও এই শেষ চারের লড়াইয়ে। সেটা অবশ্য বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ক্রীড়া আসর ২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে। মজার ব্যাপার আছে আরও একটা। স্পেনকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার পর ইতালি ইউরো জিতেছে। বেলজিয়ামকে শেষ চারে হারিয়ে যেমন বিশ্বকাপ জিতেছিল ফ্রান্স।
জুলাইয়ে সর্বশেষ দেখায় স্পেন কঠিন পরীক্ষাই নিয়েছিল ইতালির। ইউরোর সেমিতে আজ্জুরিদের প্রায় রুখেই দিয়েছিল রোজি ব্লাঙ্কোজরা। তবে শেষ পর্যন্ত ভাগ্যের শিকে ছিঁড়েনি তাদের। টাইব্রেকারে ইতালির কাছে হার মানতে হয় লুইস এনরিকে বাহিনীর।
সেই ম্যাচের পর ইতালি ম্যাচ খেলেছে আরও তিনটি। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসের দ্বিতীয় ইউরো জয়ের পর সেই তিন জয়ে বিশ্বরেকর্ডও গড়ে ফেলেছে বোনুচ্চি-কিয়েলিনিরা। আন্তর্জাতিক ফুটবলে টানা ৩৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড এখন তাদেরই দখলে।
২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট না পাওয়ার পর ইতালির কোচ হয়ে আসেন রবার্তো মানচিনি। তিনি দায়িত্ব নিতেই আমূলে বদলে যেতে থাকে দলটি। নিজেদের চিরায়ত রক্ষণাত্মক কৌশল কাতানেচ্চিও ধারা থেকে বের হয়ে দলটি আক্রমণাত্মক ফুটবলের নতুন বিজ্ঞাপন হয়ে ওঠে।
যে কৌশল দিয়ে তিন বছর ধরে অজেয় তারা। তবুও ম্যাচটা নেশনস লিগের সেমিফাইনাল বলে সতর্ক অবস্থানে মানচিনি, ‘ভালো খেলোয়াড় সমৃদ্ধ দারুণ একটি দল স্পেন। ইউরোতে তারা আমাদের আমাদের বেশ ভুগিয়েছিল। আমাদের তাই উন্নতির দরকার আছে।’
ইতালির বিপক্ষে ম্যাচটি স্পেনের জন্য রীতিমতো প্রতিশোধের লড়াই। তবে কঠিন সেই পরীক্ষায় একঝাঁক তারকা খেলোয়াড় ছাড়াই দল সাজাতে হবে স্পেন কোচ এনরিকেকে। চোটের কারণে নিয়মিত একাদশের পাঁচজনকে আজ পাবেন না এনরিকে।
তবুও স্প্যানিশ কোচের বিশ্বাস দারুণ একটি ম্যাচ উপভোগ করবেন দর্শকরা, ‘আমরা দুটি দল একই দর্শনে (আক্রমণাত্মক ফুটবলে) বিশ্বাসী। আশা করছি, দারুণ একটি উপভোগ্য ম্যাচ হবে।’
স্পেন যেমন আজ রাতে ইতালির বিপক্ষে সেমিফাইনালে হারার দুঃখ নেভাতে নামবে, কাল একই লক্ষ্য থাকবে বেলজিয়ামেরও। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসের সেরা সময়ে বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে ফ্রান্সের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল রেড ডেভিলসদের।
মনে প্রতিশোধ নেয়ার বাসনা থাকলেও বেলজিয়ান কোচ রবার্তো মার্টিনেজ সে কথা মুখে আনলেন না। শুধু জানালেন, দুই জায়ান্টের মধ্যে অসাধারণ একটি ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় তিনি। একই আপ্তবাক্য ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশমের মুখেও, ‘আশা করছি দর্শকদের উপস্থিতিতে দারুণ একটি ম্যাচ উপহার দিতে পারব আমরা।’
এসএস/আইএইচএস/জেআইএম