টাইব্রেকারে যে কথাগুলো বলে প্রতিপক্ষকে বিভ্রান্ত করেছেন মার্টিনেজ

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৫৬ পিএম, ০৭ জুলাই ২০২১

‘আমাদের দলে এমি রয়েছে, যে একটা ফেনোমেনন। আমরা ওর ওপর আস্থা রেখেছিলাম। আমর জানতাম সে ঠেকাবে। এটা ওর প্রাপ্য’- ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত হওয়ার পর এভাবেই নিজ দলের গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি।

কোপা আমেরিকার দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচটির পর এমিলিয়ানো মার্টিনেজের যত প্রশংসা করা হবে ততই যেন কম পড়বে। কেননা টাইব্রেকারে পাওয়া আর্জেন্টিনার জয়ের মূল নায়ক যে এই ২৮ বছর বয়সী গোলরক্ষক। পেনাল্টি শ্যুটআউটে গিয়ে কলম্বিয়ার তিনটি শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন তিনি।

খালি চোখে মনে হবে তিনটি শট বাম দিকে ঝাঁপিয়ে সহজেই ঠেকিয়ে দিয়েছেন মার্টিনেজ। কিন্তু এই প্রতিটি শটেই তিনি প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের নিয়েছেন খেলেছেন মেন্টাল গেম। শটের আগে-পরে নানান মন্তব্য করে মানসিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছেন কলম্বিয়ার খেলোয়াড়দের। আর এর সুবিধা মার্টিনেজ পেয়েছেন শট ঠেকানোর ক্ষেত্রে।

টাইব্রেকারে প্রথম শট নেন কলম্বিয়ার হুয়ান কুয়াদ্রাদো। এ তারকা মিডফিল্ডারের শট সঠিক দিকে (ডান দিক) ঝাঁপালেও ধরতে পারেননি মার্টিনেজ। সেই শটে আর কিছু বলেননি তিনি। তবে পরের শট করতে আসা ডেভিনসন সানচেজ হতাশ করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন মার্টিনেজ।

বাম দিয়ে ঝাঁপিয়ে ডেভিনসনের শট ঠেকানোর পর টিপন্নি কেটে মার্টিনেজ বলেন, ‘আমি দুঃখিত। তবে আমি তোমাকে (ডেভিনসন) পছন্দ করি ভাই।’ এরপর আর্জেন্টিনার পক্ষে দ্বিতীয় শট নিতে এসে বারের ওপর দিয়ে মেরে বসেন রদ্রিগো ডি পল। ফলে চাপ বাড়ে মার্টিনেজের ওপর।

তবে এতে ভেঙে পড়েননি দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এ গোলরক্ষক। তৃতীয় শট নিতে আসা ইয়েরি মিনার উদ্দেশ্যে আগেই বলেন, ‘তুমি ভয় পাচ্ছো। (ডি পল গোল করতে না পারায়) তোমার উদযাপনের কিছু নেই। আমি তোমাকে চিনি। তুমি নিজের নার্ভের ওপরেই হাসো।’

argerntina2

এই কথা বলে রেফারির কাছ থেকে সতর্কবার্তা শোনার পর বাম দিকে ঝাঁপিয়ে মিনার শট ঠেকিয়ে দেন মার্টিনেজ। যার ফলে ফের সুযোগ বাড়ে আর্জেন্টিনার আর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন গোলরক্ষক মার্টিনেজ।

এরপর কলম্বিয়ার চতুর্থ শট নিতে আসেন মিগুয়েল বোরহা। সেই শট ঠেকাতে পারেননি মার্টিনেজ। তবে কথার লড়াই ঠিকই চালিয়ে নেন। বোরহাকে নার্ভাস করার জন্য তিনি বলেন, ‘তুমি তো শেষ। বিরতির সময় আমি দেখেছি তোমরা কথা বলছ। তুমি দেখতে পছন্দ করো। এখন আমাকে দেখো।’

পরপর তিন পেনাল্টি শ্যুটারকে ‘স্লেজিং’ করায় রেফারির কাছ থেকে কড়া সতর্কবার্তা পান মার্টিনেজ। তাই শেষ শট নিতে আসা এডউইন কারদোনাকে কিছু বলার সুযোগ পাননি। তবে সেই শটটিও বাম দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান তিনি এবং নায়কোচিত পারফরম্যান্সে দলকে এনে ফাইনালের টিকিট।

কলম্বিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে এমন পারফরম্যান্সের পর উচ্ছ্বসিত মার্টিনেজ বলেছেন, ‘আমি অনেকদিন আগে ঘর থেকে বেরিয়েছি এমন সময় পাওয়ার জন্যই। আমরা ৪০ দিন ধরে (জৈব সুরক্ষা বলয়ে) বন্দী। সত্যি কথা বলতে, আমার বোঝানোর ভাষা নেই। আমার মতে, আমরাই একমাত্র দল যারা অন্য কাউকে দেখছি না।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘এখানে ৭০ জনের একটা গ্রুপ, একটা অভিন্ন স্বপ্নের জন্য এসেছে। আমরা ফাইনাল খেলতে চেয়েছি। সেটা ব্রাজিলের বিপক্ষে, ব্রাজিলের মাটিতে হওয়ার চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? তারা দুর্দান্ত দল, যোগ্য দাবিদার। তবে আমাদের দারুণ একজন কোচ এবং বিশ্বের সেরা (মেসি) আছেন।’

সূত্রঃ টিওয়াইসি স্পোর্টস

এসএএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।