ব্রাজিলের সেই গোল নিয়ে বিতর্ক থামছেই না, দেখুন ভিডিও
কলম্বিয়ানরা মনে করছে রেফারিই তাদের জয় কেড়ে নিয়েছে। ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচে সুস্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে ছিল কলম্বিয়া। কিন্তু সে অবস্থায় রেফারি নিজে সহযোগিতা করে, পক্ষপাতিত্ব করে জয় উপহার দিয়েছে স্বাগতিক ব্রাজিলকে।
নেস্তর পিতানা। ব্রাজিল-কলম্বিয়া ম্যাচে রেফারির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আর্জেন্টাইন এই রেফারিকে দেখা গেলো স্বাগতিক ব্রাজিলকেই সুবিধা পাইয়ে দিতে। বিতর্কিত গোলটা এসেছে রেফারির কারণেই। পরের যে গোলটি ক্যাসেমিরো করেছিলেন এবং ব্রাজিল জিতেছিল- সেই গোলটিও বিতর্কমুক্ত হতে পারেনি। কারণ, রেফারি ইনজুরি সময় বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ১০ মিনিট।
ব্রাজিলের এই জয়ে গোল বিতর্ক থামছেই না। লাতিন আমেরিকায় তোলপাড় এ নিয়ে। বিশেষ করে কলম্বিয়ানরা মানতেই পারছে না বিষয়টা। তারা সরাসরি বলে দিচ্ছে, রেফারি ইচ্ছা করেই এমন কাজটি করেছে।
মূলতঃ এবারের কোপা আমেরিকায় যেন ব্রাজিল আর বিতর্ক সমার্থক হয়ে উঠেছে। প্রথমে করোনা পরিস্থিতিতে ব্রাজিলে কোপার আয়োজন নিয়ে তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে। এবার বিতর্ক কলম্বিয়া ম্যাচে ব্রাজিলের রবার্তো ফিরমিনোর সমতা ফেরানো গোলকে কেন্দ্র করে।
ম্যাচের ৬৬ মিনিটে বাঁ-দিক থেকে ভেসে আসা রেনান লোদির ক্রস থেকে দুরন্ত হেডে গোল করে ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান রর্বাতো ফিরমিনো। তবে তার আগে বলের গতি পরিবর্তন হয় রেফারির গায়ে বল লেগে।
নেইমারের ক্রস গিয়ে লাগে রেফারির গায়ে। সেখান থেকে বলটা লুকাস পাকুয়েতার পায়ে গেলে তিনি ঠেলে দেন রেনান লোদির কাছে। সেখান থেকেই ক্রস করেন লোদি, মাথার ছোঁয়ায় সেটি কলম্বিয়ার জালে জড়িয়ে দেন ফিরমিনো।
কিন্তু নিয়ম ছিল, রেফারির গায়ে বল লাগার পর খেলা থামিয়ে ড্রপ বলের মাধ্যমে আবার শুরু করা। কিন্তু নেস্তর পিতানো এমনটা করেননি। কলম্বিয়ার ফুটবলারদের ক্ষণিকের দ্বিধাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। গোলে বল জড়িয়ে ম্যাচে সমতা ফেরান ফিরমিনো।
কলম্বিয়া ফুটবলারদের তুমুল প্রতিবাদেও কাজ হয়নি। অবশেষে সেই ধাক্কার পর দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত সময়ে ব্রাজিলের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন ক্যাসেমিরো। ম্যাচের শেষেও নিয়মবিরুদ্ধ এই সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক চলছে।
লাতিন আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন (কনমেবল)- এর নিয়ম অনুযায়ী তিন ক্ষেত্রে ড্রপ বলের মাধ্যমে খেলা পুনরায় চালু করা উচিত-
১) বল হাওয়ায় বা মাটিতে থাকা অবস্থায় সম্পূর্ণভাবে টাচলাইন (থ্রো) বা বাইলাইনের (গোলকিক) বাইরে চলে গেলে।
২) রেফারি ম্যাচ থামিয়ে দিলে।
৩) বল মাঠের যে কোন রেফারির গায়ে লেগে যদি মাঠেই থাকে এবং কোন দল যদি সেই সুযোগে আক্রমণ শুরু করে বা যে দলের পায়ে বল ছিল তাঁর বদলে অন্য দলের কাছে বল চলে যায় বা সোজাসুজি গোলে বল জড়িয়ে যায়।
তৃতীয় নিয়ম অনুযায়ী স্পষ্টতই সঙ্গে সঙ্গে খেলা থামিয়ে ড্রপ বলের মাধ্যমে আবার খেলা শুরু করা উচিত ছিল রেফারি নেস্তার পিতানোর, যা তিনি করেননি। এর ফলেই যত বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। রেফারির বিরুদ্ধে একদিকে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন কলম্বিয়ার তারকা ফুটবলার জুয়ান কুয়াদ্রাদো, তো অপরদিকে মজার ছলে তাকে সুরক্ষিত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ব্রাজিল কোচ তিতে।
কুয়াদ্রাদো বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম সেরা দলের বিরুদ্ধে আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর এমন একটা সিদ্ধান্তে ম্যাচ হারা খুবই হতাশাজনক। একজন বিশ্বকাপ খেলানো অভিজ্ঞ রেফারি এমন একটা ভুল করে ম্যাচের রঙ বদলে দিল। ওই ঘটনার পর আমরা আর লড়াই করতেই পারিনি।’
কলম্বিয়ার কোচ রেইনালদো রুয়েদা বলেন, রেফারির এই আচরণের কারণে আমার দলের খেলোয়াড়দের ক্ষোভ বাড়িয়ে দিয়েছে। তার ওই একটি সিদ্ধান্তই ম্যাচের চেহারা পুরোপুরি পাল্টে দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ব্রাজিলের দুটি গোলই এসেছে ভিন্ন ভিন্ন দুটি পরিস্থিতিতে। প্রথম গোলটিতে রেফারি যে আচরণ করেছেন, তাতে খেলোয়াড়রা বেশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে ব্রাজিলও ম্যাচে ফিরে আসে। এটা হয়েছে পুরোপুরি রেফারির কারণে।’
ব্রাজিলের প্রশংসাও করেছেন কলম্বিয়ান কোচ। তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে বল পুরোপুরিই ছিল ব্রাজিল খেলোয়াড়ের পায়ে। তারা বার বার আমাদের ডিফেন্সের ঢোকার চেষ্টা করছিল। তবে রেফারির সেই ভুলের কারণে ব্রাজিল সফলতার মুখ দেখে। আমরা যেভাবে খেলেছি, ম্যাচ শেষে এই ফলাফল আমাদের কাম্য ছিল না।’
ব্রাজিল কোচ তিতে বলেন, ‘আমি যা বলতে যাচ্ছি তা হয়তো শুনতে ভাল লাগবে না। তবে আমি পিতানার সুরক্ষা নিয়ে বেশ চিন্তিত। আশা করছি ও সুরক্ষিত থাকবে।’
সোশ্যাল মিডিয়া, বিশেষ করে টুইটারেও চলছে এ নিয়ে তুমুল বিতর্কের ঝড়। পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলছেন ফুটবল ভক্তরা। তবে সেখানে সবচেয়ে বেশি বিদ্ধ করা হচ্ছে আর্জেন্টাইন রেফারি নেস্তর পিতানাকে।
#CopaAma
— Copa (@CopaAmerica) June 24, 2021
Chegou no empate! Roberto Firmino ganha de cabea e marca 1-1 para @cbf_futebol
el empate! Roberto Firmino gande cabeza y marcel 1-1 de Brasil
Brasil Colmbia #VibraElContinente #VibraOContinente pic.twitter.com/vIlCfuQiTH
আইএইচএস/এমকেএইচ