ভেন্যু কমছে, কদর বাড়ছে কুমিল্লা ধীরেন্দ্রনাথ স্টেডিয়ামের
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের কল্যাণে গত মৌসুমে পেশাদার ফুটবল লিগের ভেন্যু হিসেবে অভিষেক হয়েছিল কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামের। এটা ছিল মোহামেডানের হোম ভেন্যু। এক সময়ের জেলা স্টেডিয়াম নতুনভাবে সংস্কার করে উদ্বোধন করা হয়েছে ২০১৮ সালে। মনোরম পরিবেশের এ ফুটবল ভেন্যুটি নজর করেছে ক্রীড়ামোদীদের।
আসন্ন ফুটবল মৌসুমে ভেন্যু কমিয়ে ফেলবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের প্রফেশনাল লিগ কমিটি। গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের ভেন্যু ছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, কুমিল্লা ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম. চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, ময়মনসিংহ রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া স্টেডিয়াম, সিলেট জেলা স্টেডিয়াম, নীলফামারী শেখ কামাল স্টেডিয়াম ও গোপালগঞ্জ শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়াম।
করোনাভাইরাসের কারণে গত মৌসুম পরিত্যক্ত হয়েছে ৬ রাউন্ড হওয়ার পর। নতুন মৌসুম শুরু হবে ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে। করোনা পরবর্তীতে দলগুলো ভেন্যু কমানোর জন্য বলেছে বাফুফের প্রফেশনাল লিগ কমিটিকে। বিশেষ করে দূরের ভেন্যুগুলো বাদ দেয়ার কথাই বলা হয়েছে।
লিগ কমিটি সর্বশেষ সভার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ক্লাবগুলোর কাছ থেকে আসন্ন লিগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখিত যে মতামত চেয়েছিল, তা জমা দেয়ার শেষ দিন আজ (বুধবার)। মতামত পেলেই আবার সভা ডেকে নতুন মৌসুমের বাইলজ তৈরি করবে লিগ কমিটি।
লিগ কমিটি যে মতামতগুলো চেয়েছে ক্লাবগুলোর কাছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভেন্যু, বিদেশি খেলোয়াড়দের কোটা, দলবদল ও খেলা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ। বাফুফে চেয়েছিল সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে দলবদল শুরু করতে। তবে সেটা হয়তো হবে না। কেননা বাফুফের নির্বাচন ৩ অক্টোবর। এর আগে দলবদল শুরুর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ গত সভাতেই বেশিরভাগ ক্লাব দাবি করেছিল দলবদল আরও পরে করতে।
দলগুলোর ভ্রমণক্লান্তি হ্রাস করতে দূরের ভেন্যু রাখবে না বাফুফে। সেক্ষেত্রে ধরেই নেয়া যায় শেখ রাসেলের সিলেট জেলা স্টেডিয়াম, বসুন্ধরা কিংসের নীলফামারীর শহীদ শেখ কামাল স্টেডিয়াম এবং চট্টগ্রাম আবাহনীর এমএ আজিজ স্টেডিয়াম ভেন্যুর তালিকা থেকে বাদ পড়ছে এবার।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া স্টেডিয়াম এবং কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম- এই তিন ভেন্যুতে হতে পারে আগামী মৌসুমের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। একটি বাড়ালে সেটা হবে গোপালগঞ্জ। তবে গোপালগঞ্জ দূরত্বের দিক দিয়ে কম হলেও পদ্মার কারণে এটা নিয়েও দ্বিমত আছে ক্লাবগুলোর মধ্যে।
ভেন্যু কমে যাচ্ছে- এমন আভাসের পর ক্লাবগুলোর নজর এখন কুমিল্লার দিকে। মোহামেডান গতবারের মতো নতুন মৌসুমেও কুমিল্লায় হোম ভেন্যু করবে। তারা আগেভাবেই কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে চিঠি দিয়ে তাদের অনাপত্তিপত্র এনে রেখেছে।
কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান ফারুক (রোমেন) জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘মোহামেডান আমাদের কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছিল গতবারের মতো এবারও তারা কুমিল্লাকে হোম ভেন্যু করতে চায়। আমাদের কোনো আপত্তি আছে কি না? আমরা তাদের অনাপত্তিপত্র দিয়েছি।’
মোহামেডানের পাশাপাশি আরও কয়েকটি ক্লাব কুমিল্লায় হোম ভেন্যু করতে চায় বলেও শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে নাজমুল আহসান ফারুক (রোমেন) বলেন, ‘অফিসিয়ালি অন্য কোনো ক্লাব এখনও কিছু জানায়নি। তবে বসুন্ধরা কিংসের পক্ষ থেকে আনঅফিসিয়ালি প্রস্তাবনা পেয়েছি। আমরা বলেছি, আগ্রহী থাকলে অফিসিয়ালি জানাতে।’
স্টেডিয়ামটির গ্যালারিতে চেয়ার নেই। তাই এখন দর্শকধারণ ক্ষমতা ২০ হাজার। ‘এখন ২০ হাজার দর্শক বসতে পারে গ্যালারিতে। চেয়ার বসালে দর্শকধারণ ক্ষমতা কমে যাবে। তবে যখন এ স্টেডিয়ামে চেয়ার বসানো হবে তখন গ্যালারি দোতলা করা হবে। স্টেডিয়ামের গ্যালারি দোতলা করার ও চেয়ার বসানোর জন্য একটা প্রস্তাবনা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে দেয়া আছে’- জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক।
কুমিল্লার দর্শক প্রসঙ্গে নাজমুল আহসান ফারুক (রোমেন) বলেন, ‘এখানে ভালো ম্যাচ হলে গ্যালারিতে জায়গা দেয়া যায় না। গত লিগে মোহামেডান ও বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচের দিন আমরা ২০ টাকা মূল্যের ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি করেছিলাম। সবাইকে টিকিট দিতে পারিনি। এবার আরও দর্শক হবে। মাঠও সংস্কার করা হয়েছে। আশা করি, দর্শকরা কুমিল্লায় আরও ভালো ফুটবল খেলা উপভোগ করবে।’
আরআই/এসএএস/এমকেএইচ