ভয়ে বার্সার মাঠে খেলতে যেতে চায় না ন্যাপোলি
করোনার ভয়াবহতা ইতালির চেয়ে সম্ভবত খুব বেশি টের পায়নি অন্য কোনো দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারত, যুক্তরাজ্যের তুলনায় দেশটিতে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা কম। কিন্তু শুরুর দিকে প্রতিদিন আক্রান্ত এবং মৃতের ফলে দেশটি যেন পরিণত হয়েছিল এক মৃত্যু উপত্যকায়।
পাশাপাশি একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল স্পেনেও। সেখানেও আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা সমানহারে বাড়ছিল। যদিও মে মাসের শেষ এবং জুনের শুরুর দিকে পরিস্থিতি উন্নতি হতে থাকে ইউরোপের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ দুটিতে। যে কারণে সেখানে জনপ্রিয় লা লিগা কিংবা ইতালিয়ান সিরি-আ শুরু করা হয়।
এরই মধ্যে লা লিগা শেষ। বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদসহ ক্লাবগুলোর প্রায় সবাই এখন ব্যাস্ত উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলতে। যে টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ফাইনাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে পর্তুগালের লিসবনে। তবে তার আগে কয়েকটি দ্বিতীয় রাউন্ডের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ বাকি। সে হিসেবে ইতালিয়ান ক্লাব ন্যাপোলির খেলতে আসার কথা স্পেনের বার্সেলোনায়।
কিন্তু এরই মধ্যে আফটার ওয়েভে আরও একবার স্পেনে করোনা সংক্রামণ ঘচছে উল্লেখযোগ্যহারে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ৮ অগস্ট চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের ফিরতি লেগে ন্যু ক্যাম্পে বার্সেলোনার মুখোমুখি হওয়ার কথা ন্যাপোলির। কিন্তু স্পেনে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে মেসিদের মাঠে গিয়ে খেলার ব্যাপারে বেঁকে বসল ইতালিয়ান ক্লাবটি। শঙ্কা মাথায় নিয়ে কোনোভাবেই কাতালোনিয়া প্রদেশে খেলতে যাবে না তারা। বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন ন্যাপোলি প্রেসিডেন্ট অরিলিও দি লরিয়েন্তিস।
জুলাইয়ের শুরুতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচগুলো পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডের বাকি ম্যাচগুলি পূর্ব নির্ধারিত ভেন্যু অনুযায়ীই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা উয়েফা।
তবে, স্পেনে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরও কোনও হেলদোল নেই উয়েফার। ন্যাপোলি প্রেসিডেন্টের অভিযোগ অন্তত তেমনই। তার কথায়, ‘স্পেন থেকে একের পর এক খারাপ খবর কানে আসছে। অথচ তারা এমন করছে যেন কিছুই হয়নি। এটাকে কী বলা যায়?’
একইসঙ্গে নাপোলি প্রেসিডেন্ট উয়েফাকে জানিয়ে রেখেছেন- লিসবন, জার্মানি কিংবা জেনেভাতে যদি ওই ম্যাচের আয়োজন করা হয়, তাহলে তাদের খেলতে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু বার্সেলোনা এ ক্ষেত্রে এখনও চুপচাপ।
লরিয়েন্তিস বলেছেন, ‘ওরা যদি দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে পর্তুগাল কিংবা জার্মানিতে ডাকে তাহলে কোনো সমস্যা নেই। আমার মাথায় ঢুকছে না, এমন একটা আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে বার্সেলোনায় ওরা কিভাবে আমাদের খেলার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে?’
অন্যদিকে বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষও উয়েফার সঙ্গে তাল মিলিয়ে অভয় প্রদান করছে ন্যাপোলিকে। তাদের কথায়, ‘ফাঁকা গ্যালারিতে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ায় সেই অর্থে সংক্রমণের কোনও শঙ্কাই নেই।’
প্রসঙ্গতঃ করোনার জেরে বিশ্ব ফুটবল কয়েকমাসের জন্য স্থগিত থাকার আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর প্রথম লেগের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ন্যাপোলি ও বার্সেলোনা। ন্যাপোলির ঘরের মাঠে ১-১ গোলে শেষ হয়েছিল সেই ম্যাচ।
তাই কোয়ার্টারে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে আগামী ৮ অগস্টের ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন দেখার বিষয়, গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে ভেন্যু নিয়ে ন্যাপোলির যুক্তিপূর্ণ দাবি কতটা গ্রহণযোগ্য হয় উয়েফার কাছে?
আইএইচএস/