রোমাঞ্চকর জয়ে লিভারপুলের শিরোপা উল্লাস
লিভারপুলের জন্য রাতটা ছিল শুধুই আনন্দের। প্রায় ত্রিশ বছর পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ট্রফি ছোঁয়ার উচ্ছ্বাসের। কিন্তু প্রতিপক্ষ চেলসির জন্য কঠিন পরীক্ষার। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের টিকিট পাওয়ার জন্য প্রতিটি পয়েন্টই গুরুত্বপূর্ণ লন্ডনের ক্লাবটির কাছে। ফলে চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের নিয়মরক্ষার ম্যাচেও দেখা মিলল রোমাঞ্চকর এক লড়াইয়ের।
অলরেডদের শিরোপা উদযাপনের সাজানো মঞ্চে কঠিন পরীক্ষাই নিয়েছে চেলসি। তবে শেষতক জয় পেয়েছে ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা। ৮ গোলের ম্যাচে ৩-৫ ব্যবধানে হেরে যাওয়ায় ইউসিএল টিকিটের অপেক্ষা আরও বাড়ল ফ্র্যাংক ল্যাম্পার্ডের দলের। লিগে নিজেদের শেষ ম্যাচ থেকে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট লাগবে এখন চেলসির।
বুধবার রাতের ম্যাচটিতে চেলসিকে নিয়ে শুরুতে রীতিমতো ছেলেখেলা করেছে লিভারপুল। ম্যাচের প্রথমার্ধেই তারা করে ফেলে তিন গোল, যার একটি শোধ করতে পারে চেলসি। দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুই গোল করে চ্যাম্পিয়নরা, চেলসিও করে দুই গোল। কিন্তু প্রথমার্ধে তিন গোল হজম করার মাশুল গুনতে হয়েছে তাদের।
ম্যাচে প্রথম গোলের সুযোগটা পেয়েছিল চেলসিই। অষ্টম মিনিটের মাথায় লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় ম্যাসন মাউন্টের হেড। ফলে লিড নেয়া হয়নি লন্ডনের ক্লাবটির। তবে সুযোগ হাতছাড়া করেনি চেলসি। ম্যাচের ২৩ মিনিটে প্রায় ২০ গজ দূর থেকে জোরালো শট নেন নাবি কেইটা, ক্রসবারের ভেতরের অংশে লেগে বল জড়িয়ে যায় জালে।
দ্বিতীয় গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় আরও ১৫ মিনিট। এবার দর্শনীয় এক ফ্রি-কিকে স্কোরশিটে নাম তোলেন ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার আরনল্ড। দুই গোলে এগিয়ে থাকা লিভারপুলের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দেন জর্জিনিও উইজনাল্ডাম, ৪৩ মিনিটের সময় সুযোগসন্ধানী ফিনিশিংয়ে তৃতীয় গোলটি করেন তিনি।
তিন গোলে পিছিয়ে পড়া চেলসি প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে শোধ করে একটি গোল। উইলিয়ানের শট ঠিকভাবে বিপদমুক্ত করতে পারেননি লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। ফিরতি বল পেয়ে সেটি জালের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার অলিভার জিরুড। ফলে স্কোরলাইন হয় ৩-১।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে এটিকে আরও বাড়ান রবার্তো ফিরমিনো। ৫৫ মিনিটের মাথায় অ্যালেক্সান্ডার আরনল্ডের ক্রসে দারুণ এক হেড করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফিরমিনো। ম্যাচের স্কোর তখন ৪-১, তবু চেষ্টার কমতি রাখেনি চেলসি। ফল পায় ৬১ মিনিটের সময়, ট্যামি আব্রাহামের শটে ব্যবধান কমে হয় ৪-২।
এর ১২ মিনিট পর চেলসির হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন ২১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ। জমে ওঠে ম্যাচ। আরেকটি গোলের খোঁজে মরিয়া হয়ে ওঠে চেলসি। কিন্তু সেটি আর পাওয়া হয়নি তাদের। উল্টো ম্যাচের ৮৪ মিনিটের সময় চেলসির জালে শেষ গোলটি করেন অ্যালেক্স ওক্সল্যাড চেম্বারলিন।
এ পরাজয়ের ফলে ৩৭ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে নেমে গেছে চেলসি। সমান ৬৩ পয়েন্ট নিয়েই গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকার সুবাদে তিন নম্বরে রয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এক পয়েন্ট কম নিয়ে পাঁচ নম্বরে রয়েছে লিস্টার সিটি। এ তিন দলের মধ্যেই চলছে ইউসিএলের টিকিট পাওয়ার লড়াই।
এসএএস/পিআর