আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একমাত্র জয়টি ৪০ বছর আগে
কথায় আছে- শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। মঙ্গলবার রাতে তাজিকিস্তানের দুশানবেতে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচ শেষের ভালোটা কাদের হবে সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে দুই দেশের সর্বশেষ সাক্ষাতের ভালোটা কিন্তু আফগানিস্তানেরই।
২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর দুই দেশ সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল আন্তর্জাতিক ফুটবলে (সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ)। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আফগানিস্তান তাদের ঐতিহাসিক জয়টি পেয়েছিল ৪-০ গোলে। ১৮ বছর ফিফার নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশটি ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরে ১৩ বছরে কতটা এগিয়েছিল তার উদাহরণ ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাদের প্রথম জয়টি।
১৯৮৪ থেকে ২০০২ সাল- এই ১৮ বছর ফিফার নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকে ছিল আফগানিস্তান। ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে তারা নতুন করে অন্তর্ভূক্ত হয় ফিফার র্যাংকিংয়ে। ওই সময় ২০৪ দলের মধ্যে সবার শেষে ছিল যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি। ওই সময় বাংলাদেশের র্যাংকিং ছিল ১৫৭।
২০৪ থেকে উঠতে উঠতে ১৬ বছরে আফগানিস্তান ১৪৯। আর বাংলাদেশ ১৬ বছরে নামতে নামতে ১৮২। দুই দেশের উত্থান-পতনের প্রভাবটা এখন মাঠেও। এক সময় যে আফগানদের হালি-হালি গোল দিতো বাংলাদেশ, সেই গোল এখন ফিরিয়ে দিচ্ছে মধ্য এশিয়ার দেশটি।
ফিফার নিষেধাজ্ঞায় পড়ার পাঁচ বছর আগে ঢাকায় এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে দুইবার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। ১৯৭৯ সালের ১২ জানুয়ারি প্রথম ম্যাচটি ড্র হয়েছিল ২-২ গোলে এবং ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৪-১ গোলে।
২৯ বছর পর আবার দুই দেশ মুখোমুখি হয়েছিল ২০০৮ সালে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে। কিরগিজস্তানে অনুষ্ঠিত সে ম্যাচটি ড্র হয়েছিল গোলশূন্য। একই বছর কলম্বো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ২-২ এবং ২০১৫ সালে ঢাকায় একটি ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র করেছিল দুই দল।
১৯৭৯ সালে যে আফগানিস্তান হালি গোল খেয়ে হেরিছিল বাংলাদেশের কাছে সেই আফগানিস্তান গুনেগুনে গোল ফেরত দিয়েছে ৩৬ বছর পর ২০১৫ সালে। ১৯৭৯ সালের সেই সুখস্মৃতি নিয়েই ৪০ বছর পর আবার জয়ের প্রত্যাশায় আফগানদের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে বাংলাদেশ।
কেমন দল আফগানিস্তান?
কেবল ফিফা র্যাংকিংয়েই বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে নেই আফগানিস্তান, মাঠের শক্তিতেও তাই। ঘরে অশান্তি বলে আফগানিস্তানের ফুটবলারা খেলে থাকেন দেশের বাইরে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের জন্য যে ২৩ ফুটবলার নিয়ে স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন দলের কোচ আনুষ দস্তগির সেখানে মাত্র ৩ জন খেলেন আফগানিস্তানের ঘরোয়া ফুটবলে। বাকি ২০ জনই দেশের বাইরে।
আফগানিস্তান স্কোয়াডের সর্বোচ্চ ৫ জন খেলেন জার্মানিতে, দুই জন করে অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস ও মালদ্বীপে। বাকি ৯ জন খেলেন কানাডা, সাইপ্রাস, যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, থাইল্যান্ড, বেলজিয়াম, সুইডেন, পোল্যান্ড ও ফিনল্যান্ডে।
এক নজরে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান লড়াই
ম্যাচ বাংলাদেশের জয় আফগানিস্তানের জয় ড্র
৬ ১ ১ ৪
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব ১৯৭৯, বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ২-২ আফগানিস্তান
বাংলাদেশ ৪-১ আফগানিস্তান
এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ ২০০৮, কিরগিজস্তান
বাংলাদেশ ০-০ আফগানিস্তান
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ২০০৮, শ্রীলঙ্কা
বাংলাদেশ ২-২ আফগানিস্তান
ফিফা ফ্রেন্ডলি ২০১৫, বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ১-১ আফগানিস্তান
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১৫, ভারত
বাংলাদেশ ০-৪ আফগানিস্তান
আরআই/আইএইচএস/পিআর