ফুটবলে আরও বড় বিনিয়োগ নিয়ে আসছে বসুন্ধরা কিংস

রফিকুল ইসলাম
রফিকুল ইসলাম রফিকুল ইসলাম , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৩৯ এএম, ২৮ জুলাই ২০১৯

এবারের মৌসুমে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মালিকানাধীন নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামকে হোম ভেন্যু বানিয়েছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নতুন চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। তবে কেবল নেয়ার জন্যই নেয়া নয়, প্রচুর অর্থ খরচ করে ভেন্যুটির মাঠ উন্নয়ন ও সংস্কারও করেছে প্রিমিয়ারের নতুন দলটি।

তাদের বিশ্বকাপ খেলা তারকা কোস্টারিকান ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস এবারের ৬ ভেন্যুর মধ্যে ফুলমার্ক দিয়েছেন এই ভেন্যুকেই। এখানে ফুটবলকে বেশি উপভোগ করেছেন দলকে চ্যাম্পিয়ন করার প্রধান এই কারিগর।

কিন্তু নীলফামারীর এই স্টেডিয়াম বেশিদিন ধরে রাখতে পারবে না ঘরোয়া ফুটবলের নতুন পরাশক্তি বসুন্ধরা কিংসকে, বড়জোড় আগামী মৌসুম। কারণ, ধন্যাঢ্য এ ক্লাবটি এবার নিজেরাই স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শুরু করেছে। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৫৪ বিঘা জায়গার ওপর বসুন্ধরা কিংস তৈরি করবে অত্যাধুনিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স।

‘বসুন্ধরা কিংস স্পোর্টস কমপ্লেক্স’ নামে এই বিশাল ক্রীড়া স্থাপনাতেই থাকবে ফুটবল স্টেডিয়াম। যে স্টেডিয়াম আগামীতে হবে তাদের হোম ভেন্যু। নিজেদের এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান।

স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি শুধু পরিকল্পনার মধ্যে থেমে নেই। ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে। ক্লাবটির সভাপতি জানালেন এক বছরের মধ্যেই তাদের এই স্পোর্টস কমপ্লেক্স পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে। কী কী থাকছে আধুনিক এই ‘বসুন্ধরা কিংস স্পোর্টস কমপ্লেক্সে?’ এখানেই হবে আমাদের ক্লাব ভবন। থাকবে ফুটবল, ক্রিকেট ও হকির মাঠ। ফুটসালের মাঠ থাকবে কয়েকটি। প্রত্যেকটি মাঠেই থাকবে আলাদা আলাদা ফ্লাডলাইট। সুইমিংপুল, জিমন্যাসিয়াম, ডরমেটরি। একটি আধুনিক ক্রীড়া কমপ্লেক্সে যা থাকে সবই হবে এখানে’- বললেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি।

B kingsবসুন্ধরা কিংস স্পোর্টস কমপ্লেক্সের প্রস্তাবিত মডেল

কমপ্লেক্স তৈরি পরিকল্পনার সময় অবশ্য ফুটবলের হোম ভেন্যুর বিষয়টি ভাবেনি ক্লাব কর্তৃপক্ষ। কাজ শুরুর পর তাদের পরিকল্পনায় আনছে এই পরিবর্তন। ইমরুল হাসান বলেন, ‘আমাদের বর্তমান নকশায় ফুটসালের জন্যই আছে ৭টি মাঠ। এখন ফুটসাল মাঠ কমিয়ে এবং হকির মাঠকে একটু ছোট করে বাড়ানো হবে ফুটবল স্টেডিয়াম। আগে গ্যালারির চিন্তা ছিল না। এখন সেটা করা হবে। আমার মনে হয় সর্বোচ্চ ১৫ হাজার দর্শকধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন গ্যালারি থাকলেই যথেষ্ট। অত্যাধুনিক করে তৈরি করলে এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচও খেলা সম্ভব হবে।’

আপনাদের তো পরিকল্পনা চূড়ান্ত। কাজও শুরু হয়েছে। এই স্পোর্টস কমপ্লেক্সের জন্য কত টাকা লাগবে? ‘দেখুন জমির দাম বাদ দিয়েই আমাদের খরচ হবে ১০০ কোটির বেশি টাকা। আর আমাদের এই আবাসিক এলাকায় জমির যে মূল্য তাতে ৫৪ বিঘার দাম হবে ৫০০ কোটি টাকার উপরে।’

বসুন্ধরা কিংস কি আগামীতে ফুটবলার তৈরিতে মননিবেশ করবে? ‘আমাদের প্লান সেরকমই। স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ২০০ থেকে ২৫০ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। আমরা বয়সভিত্তিক দলের ওপর জোর দেবো। যাতে সেখান থেকে কোয়ালিটি ফুটবলার বেরিয়ে আসে। আমাদের কর্তৃপক্ষ দুটি বিষয়কে প্রধান্য দিয়ে ফুটবলে বিনিয়োগ করছে। এক. ফুটবলের মান বাড়ানো এবং দুই. ফুটবলে দর্শক বাড়ানো’- বলছিলেন নতুন চ্যাম্পিয়ন দলের সভাপতি।

আপনি কি মনে করেন আপনাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে বা হচ্ছে? ইমরুল হাসানের জবাব, ‘আমাদের মূল্যায়ন পরিবর্তন কিছু আছে। মানের দিক থেকে এবারে লিগটা ভালো, অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়েছে। ক্লাবগুলো ফিটনেসের ওপর জোর দিয়েছিল। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে জাতীয় দলে। জাতীয় দল বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বে উঠেছে। আবাহনীও এএফসি কাপের দ্বিতীয় পর্বে উঠেছে। সব কিছুই কিন্ত ঘরোয়া ফুটবলের মান বাড়ার ফল।’

আর দর্শক? ‘আমরা কিন্ত দর্শকের কথা মাথায় রেখেই কলিন্দ্রেসকে উড়িয়ে এনেছিলাম। কারণ, দেশে এমন কোন ফুটবলার নেই যার নাম শুনে এবং যার খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে আসবে। এবার কিন্তু লিগে দর্শক বেশি হয়েছে। এক্ষেত্রে তো আমরা সফল। এখনতো দেশে ফুটবল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে’- জবাব বসুন্ধরা গ্রুপের এই কর্মকর্তার।

এই যে এবারের মৌসুমের তিনটি ট্রফির মধ্যে দুটি জিতলেন। বিগ বাজেটের দল গড়েছিলেন। এই সাফল্য পেতে কত টাকা ব্যয় হয়েছে আপনাদের? ‘আমাদের দলের পেছনে ১০ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। আর এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের বেতনে। এছাড়া ক্যাম্প খরচ, বিভিন্ন ভেন্যুতে যাতায়াত এবং আরো আনুষাঙ্গিক অনেক খরচ তো আছেই’- বলেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি।

আরআই/এসএএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।