আবাহনীর ড্রেসিংরুম যেন উৎসবমঞ্চ
‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে, আমরা ক’জন নদীর মাঝি হাল ধরেছি রে।’-গানটি শুরু করলেন সিনিয়র খেলোয়াড় ওয়ালি ফয়সাল। সঙ্গে কণ্ঠ মেলালেন আবাহনীর বাকি সবাই। ভারতীয় ক্লাব মিনারভা পাঞ্জাবকে হারিয়ে গুয়াহাটির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমকে উৎসবমঞ্চ বানিয়ে ফেললো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ৬ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
অধিনায়ক শহিদুল আলম সোহেলের ফেসবুক পেজে লাইভ চলছিল আবাহনীর আনন্দ-উৎসবের সময়টুকু। খেলোয়াড়, কোচ কর্মকর্তা-সবাই অংশ নিলেন গান আর নৃত্যে। আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রুপুর সাধারণত হেলদোল কম। তাকেও দেখা গেলো খেলোয়াড়দের সঙ্গে নাচতে। মোবাইল ক্যামেরার সামনে একজন আসছেন আর আঙ্গুলে ভিক্টোরি চিহ্ন দেখাচ্ছেন। মুখে বলছেন-‘আবাহনী আবাহনী।’
আন্তর্জাতিক ফুটবলে আবাহনীর এ সাফল্য অনন্য অসাধারণ। বাংলাদেশের জায়ান্টরা এর আগে ৫ বার এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপ এবং দুই বার এএফসি কাপে অংশ নিয়েও কখনো প্রথম রাউন্ডের হার্ডল টপকাতে পারেনি। এই প্রথম আবাহনী নকআউট পর্বে উঠে নিজেদের সমৃদ্ধের পাতায় যোগ করলো আরেকটি সাফল্য। দলের খেলোয়াড় কর্মকর্তাদের আনন্দটা বেশি সে কারণেই।
এবারের এএফসি কাপে ৬ ম্যাচে আবাহনীর এটি চতুর্থ জয়। একটি ম্যাচ ড্র করেছিল এই মিনারভা পাঞ্জাবের সঙ্গে ঢাকায় ২-২ গোলে। আর হেরেছে একটি ম্যাচ ভারতের চেন্নাইন এফসির কাছে। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘ই’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই আবাহনী উঠলো নকআউট পর্বে।
গ্রুপের শেষ দুই ম্যাচের আগে আবাহনীই ছিল শীর্ষে। সমীকরণটা ছিল আবাহনী জিতলেই রচিত হবে ইতিহাস। আবার হারলেও সমস্যা হতো না, অন্য ম্যাচে নেপালের মানাং মার্সিয়াংদি ক্লাবের বিরুদ্ধে চেন্নাইন না জিতলে।
ভারতের ক্লাবটি জিতেছে নেপালের ক্লাবের বিরুদ্ধে। তখনই আবাহনীর আশা হয়ে যায় নিভু নিভু। আবাহনীর জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না। ড্র করলেও তরী ডুববে তীরে এসে। কিন্তু মাসি সাইঘানি নামের এক ত্রাতা আবাহনীকে উদ্ধার করেন ৯৩ মিনিটে। তার নিঁখুত হেড আবাহনীর ইতিহাসের পাতায় লিখে দেয় নতুন এক লাইন-‘আবাহনী এএফসি কাপের দ্বিতীয় পর্বে।’
আরআই/এমএমআর/এমএস