বাংলাদেশে ফুটবলকে ক্রিকেটের উপরে নিতে চাই : জেমি ডে

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:১০ পিএম, ০৬ জুন ২০১৯

আর কিছুক্ষণ পর কঠিন এক পরীক্ষায় নামছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ লাওসের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম পর্বের অ্যাওয়ে ম্যাচে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশ ইংলিশ কোচ জেমি ডে তার দেশের দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে শুনিয়েছেন আশার বাণী।

এক বছর আগে এই ইংলিশম্যান দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবলের প্রধান কোচের। গত মাসে প্রথম মেয়াদ পূর্ণ করে আবার চুক্তি বাড়িয়েছেন এক বছর। দীর্ঘ এক বছরে তিনি বাংলাদেশের ফুটবল ও দেশের আরেক প্রধান খেলা ক্রিকেটকে দেখেছেন কাছ থেকে। তিনি ফুটবল কোচ হলেও মাঝে মধ্যে ক্রিকেট মাঠেও গেছেন সাকিব-মাশরাফিদের খেলা দেখতে। এখানে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা কতটা, তাও বুঝেছেন এ ইংরেজ।

গার্ডিয়ানকে জেমি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ক্রিকেট বড় খেলা। তবে আমি বলবো এখানে ফুটবলকে ক্রিকেটের উপরে নেয়া সম্ভব। কারণ বাংলাদেশের মানুষ ফুটবলকে ভালোবাসে। কিন্তু তারা কখনো ফুটবলে বড় সাফল্য দেখেনি। আমি ঢাকার বাইরে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দেখেছিলাম। সেখানে সম্ভবত ২০ থেকে ৩০ হাজার দর্শক হয়েছিল। কিন্তু ফুটবলে একই শহরে ৩০ থেকে ৪০ হাজার দর্শক হয়েছে। সাফল্য ও পর্যাপ্ত সাপোর্ট পেলে বাংলাদেশে ফুটবলকে ক্রিকেটের উপরে নেয়া অবশ্যই সম্ভব।’

খেলাধুলার উন্নতিতে সাফল্যের ইতিবাচক প্রভাবের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ কোচ বলেছেন, ‘আপনি যদি কোনো খেলায় সাফল্য পান দেখবেন মানুষ সে খেলার দিকে আসছে এবং অনুসরণ করছে। আমি মনে করি ফুটবল এখনো সম্ভবত বাংলাদেশে বেশি জনপ্রিয়। ক্রিকেট একটু এগিয়ে গেছে কারণ এ খেলাটি স্পন্সর ও অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে আর্থিক সাপোর্টটা বেশি পেয়েছে।’

বাংলাদেশের দায়িত্ব নেয়ার পর জেমি যে প্রথম কাজটি করেছেন সেটা হলো- ফুটবলারদের খাদ্যাভাসে পরিবর্তন। দায়িত্বটাকে চমৎকার অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে জেমি ডে বলেছেন, ‘আমরা গত এশিয়ান গেমসে ভালো করেছি। এখন শুরু করছি বিশ্বকাপ বাছাই মিশন। আমরা যদি প্রথম পর্বটা টপকাতে পারি, তাহলে পরের রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া-জাপানের মতো দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পাব। এ ধরনের দেশের সঙ্গে ম্যাচ খেলা সব সময়ই স্বপ্নের মতো।’

বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালনকালে এখানকার কিছু সমস্যা ও মজার অভিজ্ঞতার কথাও গার্ডিয়ানে দেয়া সাক্ষাতকারে উল্লেখ করেছেন জেমি ডে। তিনি বলেন, ‘আমরা সাধারণত সন্ধ্যার দিকে অনুশীলন করি। সেটা ৫, ৬ কিংবা ৭টা। এই দেশটা একটু পূর্ণ উষ্ণতার দেশ। যখন বৃষ্টি হয়, তখন সব জায়গায় পানি জমে জমে যায়। রাস্তাঘাটে প্রচন্ড ট্র্যাফিক জ্যাম। রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করাও কষ্টকর। স্থানীয় মানুষ আবার আমাকে দেখলে এগিয়ে আসে। কথা বলতে চায়, সেলফি তুলতে চায়। যা ইংল্যান্ডের বিপরীত। লন্ডনের রাস্তা দিয়ে হাঁটলে আমাকে কে চিনবে? কিন্তু মিডিয়ার কল্যাণে বাংলাদেশের অনেক মানুষ আমাকে চেনে। বিষয়টা আমাকে হাসায়। কিন্তু আমি খুব উপভোগ করি।’

একবার এয়ারপোর্ট থেকে ফেরার পথে বাস থেকে নেমে যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে জেমি ডে বলেছেন, ‘এয়ারপোর্ট থেকে যে বাসে করে ফিরছিলাম খেলোয়াড়দের নিয়ে ওই বাসের চালকের লাইসেন্স ছিল না। পুুলিশ গাড়ি আটকিয়ে দিলে আমাদের নেমে উবারসহ অন্যান্য ব্যবস্থায় ফিরতে হয়েছিল। যদিও এখানে বাফুফের কোনো গাফিলতি ছিল না।’

আরআই/এমএমআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।