কক্সবাজারবাসীর বাড়তি আকর্ষণ স্থানীয় চার ফুটবলার

রফিকুল ইসলাম
রফিকুল ইসলাম রফিকুল ইসলাম , বিশেষ সংবাদদাতা কক্সবাজার থেকে
প্রকাশিত: ০৭:৩৩ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০১৮

সুফিল, বিপলু, জনি ও মতিন মিয়াকে নিয়ে উচ্ছ্বাস ছিল সিলেটে। 'লোকাল বয়'দের কাছে যে প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণ করেছেন বিপলু আহমেদ লাওসের বিরুদ্ধে জয়সূচক গোল করে। সিলেটের পর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ এবার কক্সবাজারে। এখানেও আছেন স্থানীয় চার ফুটবলার-গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকু, ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা এবং দুই ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও তৌহিদুল আলম সবুজ।

সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ দল যখন কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন স্টেডিয়ামে অনুশীলন করছিল তখন স্থানীয়দের চোখ ছিল এ চার ফুটবলারের উপর। ‘ইব্রাহিমকে তো মনে হয় খেলাবেন কোচ, সুযোগ আছে সুশান্ত ও সবুজেরও তাই না?’-স্থানীয় কয়েকজনের এমন আত্মবিশ্বাস। একজনের মন্তব্য তো অনেকটা দাবির মতো, ‘ওদের খেলাবেন না কেন? অবশ্যই খেলাবেন। ওদের এটা ঘরের মাঠ। সবাই তাদের খেলা দেখতে চান।’

প্রধান কোচ জেমি ডে’র অনুপস্থিতিতে খেলোয়াড়দের দুইভাগ করে ম্যাচ খেলিয়েছেন সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট। জামাল ভুঁইয়া, সুফিল, বিপলুদের দলে সবুজ, ইব্রাহিম ও সুশান্তকে দেখে স্থানীয়রা ছিলেন আরো পুলকিত। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘন্টা দেড়েক আগে টিম হোটেলে কোচ জেমি ডে’র কাছে স্থানীয় চার ফুটবলারের প্রসঙ্গ ওঠাতেই তিনি হাসতে হাসতে বলছিলেন, ‘সিলেটেও চার লোকাল বয় ছিল, এখানেও চারজন।’ ওরা তো খেলার জন্য উম্মুখ হয়ে আছেন বলতেই কোচের জবাব, ‘নিজের মাঠে সবাই খেলতে চায়।’

স্থানীয় চার ফুটবলারের মধ্যে এখনো জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলা হয়নি গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকুর। ম্যাচটি সেমিফাইনালে বলে ঘরের মাঠে তার সাইডলাইনে বসে থাকার সম্ভাবনাই বেশি। তবে সবুজ, সুশান্ত ও ইব্রাহিমকে মাঠে দেখতেও পারেন কক্সবাজারের দর্শকরা।

তৌহিদুল আলম সবুজ ঘরের মাঠে খেলতে মুখিয়ে আছেন। সিলেটে গোল করে ম্যাচ জিতিয়েছেন 'লোকাল বয়' বিপলু আহমেদ। কক্সবাজারে খেলতে নামলে গোল করতেই হবে-এমন কোন চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘আমি কখনো চাপ মনে করি না। এখানে পরিচিত মাঠ, পরিচিত দর্শক। খেলার সুযোগ পেলে গোল করার চেষ্টা করবো। গোল করতে পারলে অবশ্যই ভালো লাগবে।’

ঘরের মাঠে খেলার অধীর আগ্রহে আছেন ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরাও। অনেকটা রোমাঞ্চিত তিনি। সোমবার অনুশীলন শেষে বলছিলেন, ‘আমাদের মাঠে প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল হচ্ছে। খেলার সুযোগ পাবো কিনা জানি না। তবে দল ভালো ফলাফল করুক, সেটাই আমার প্রত্যাশা। আমার বাবা-মায়ের খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে আসার ইচ্ছে আছে। অনেক আত্মীয়-স্বজনও আসবেন। তাদের উপস্থিতি আমাকে আরো বেশি অনুপ্রাণিত করবে।’

জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছে আগেই মোহাম্মদ ইব্রাহিমের। সিলেটে ফিলিপাইনের বিরুদ্ধে বদলি হিসেবে নেমে ভালোই খেলেছেন ইব্রাহিম। এখন তিনি ঘরের মাঠে খেলতে উম্মুখ হয়ে আছেন। ‘নিজের মাঠে ম্যাচ। তাই খেলতে অবশ্যই চাই। আমি আগে দুই ম্যাচে বদলি হিসেবে খেলেছি। এখানে খেলার সুযোগ পাবো কিনা, তা নির্ভর করে কোচের উপর। সুযোগ পেলে ভালো করার চেষ্টা করবো। আমার বাবার জন্যই আজ আমি এতদূর আসতে পেরেছি। তিনি খেলা দেখতে আসবেন। আরো অনেকে আসবেন। আমি খুব রোমাঞ্চিত।’

অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা গোলরক্ষক আানিসুর রহমান জিকু বলেন, ‘এখানেই বড় হয়েছি। এ মাঠে অনেক খেলেছি। ফুটবলের শুরুটাই আমার এ মাঠ থেকে। সেই মাঠেই আমি জাতীয় দলের সদস্য হয়ে এসেছি। এটা অবশ্যই গর্বের বিষয়। আমার এলাকার লোকজন খেলা দেখবেন। সুযোগ পেলে অবশ্যই কোচের আস্থার প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করবো।’

আরআই/এমএমআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।