পেরুর বিপক্ষে খেললেই চ্যাম্পিয়ন!
পৃথিবী এখন এতো পরিমাণ এগিয়ে গেছে যে এখানে কুসংস্কারের বিন্দু পরিমাণ জায়গা নেই। তবে গ্রাম গঞ্জে এখনো বিভিন্ন জিনিস নিয়ে কুসংস্কার রয়েই গেছে। এটা এমন না যে খুব দ্রুতই পাল্টাবে, ধীরে ধীরে হয়তো একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে কুসংস্কারের এই রীতি।
বিশ্বকাপ ট্রফি জিততে ভাগ্যের দরকার হয়, এটা নিন্দুকেরাও বিশ্বাস করেন। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের জন্য পেরুর দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়েছে দলগুলোকে এটা কজনই বা বিশ্বাস করবেন?
একটু অবাক হওয়ারই কথা। আরো অবাক হবেন, যখন শুনবেন পেরুর কারণেই মূলত বিশ্বকাপ ট্রফি জয় লাভ করে দলগুলো তখন আকাশ থেকে পড়ার মত অবস্থা হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু এটাই হয়ে চলেছে বিশ্বকাপের ময়দানে।
এখন পর্যন্ত পাঁচবার বিশ্বকাপে খেলেছে পেরু। সবচেয়ে অবাক করার ব্যাপার হলো, এই পাঁচবার তারা যেসব দলের বিপক্ষে খেলেছে তাদের ভেতর থেকেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কোন না কোন দল।
ইতিহাসের দিকে তাকাই একটু। ১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপে তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে খেলেছিল দলগুলো। পেরুর গ্রুপে ছিল উরুগুয়ে ও রোমানিয়া। গ্রুপ পর্বে পেরুকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল উরুগুয়ে। শেষ পর্যন্ত প্রথম বিশ্বকাপ ট্রফি ঠিকই জিতে নিয়েছিল উরুগুয়াইনরা।
পেরু তাদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলে ৪০ বছর পর ১৯৭০ সালে। মেক্সিকোতে হওয়া সেই বিশ্বকাপে পশ্চিম জার্মানির সঙ্গে একই গ্রুপে ছিল পেরু। গ্রুপে দ্বিতীয় হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেও সেখানে ব্রাজিলের কাছে হারতে হয় তাদের। সেই ব্রাজিলই পরবর্তীতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায়।
১৯৭৮ সালে পেরু তাদের ফুটবল ইতিহাসের তৃতীয় বিশ্বকাপটি খেলে। আর্জেন্টিনায় হওয়া এই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের গ্রুপ ‘বি’-তে আর্জেন্টিনার কাছে ৬-০ ব্যবধানে হেরেছিল তারা। ওই বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মারিও কেম্পেসের আর্জেন্টিনা।
১৯৮২ সালে পেরু চতুর্থ বিশ্বকাপে ইতালির সঙ্গে একই গ্রুপে ছিল। গ্রুপ পর্বে ইতালির সঙ্গে ১-১ ব্যবধানে ড্রও করেছিল তারা। কিন্তু ওই বিশ্বকাপে ঠিকই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় ইতালি।
সর্বশেষ সংযোজন ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ। দীর্ঘ ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপে খেলতে আসে লাতিন আমেরিকার দেশটি। ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একই গ্রুপে পড়েছিল পেরু। গ্রুপ পর্বের ফ্রান্সের সঙ্গে ১-০ ব্যবধানে হেরেছিল পেরু। শেষ পর্যন্ত ২০১৮ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নই হয়ে যায় ফ্রান্স।
নিশ্চয়ই এখন ফেবারিট দলগুলো চাইবে আগামী বিশ্বকাপে পেরু তাদের গ্রুপে পড়ুক। তবে তার আগে দরকার পেরুর বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ করে নেওয়া। কিন্তু পেরু যে মিথ তৈরি করে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করলো সেটা অনন্তকাল ধরে টিকে থাকবে।
আরআর/পিআর