লুঝনিকিতে বিশ্বকাপের মাতাল হাওয়া
বড় তারকাদের দল বিদায় নিয়েছে আগেই। মেসি, নেইমার, রোনালদো, মোহামেদ সালাহ ও মারিও গোমেজদের কেউই নেই ফাইনাল মঞ্চে। তবে কি বিশ্বকাপ ঝিমিয়ে পড়লো? এ প্রশ্নের উত্তর বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের ক্ষেত্রে ‘হ্যাঁ’ হলেও আসল চিত্র তো আগের মতোই।
বিশেষ করে ফাইনালে। ফ্রান্সের সঙ্গে ফাইনাল খেলবে ক্রোয়েশিয়া। তাহলে কি শিরোপা নির্ধরাণী ম্যাচটি পানসে হয়ে যাবে? না। আজকের ফাইনাল ঘিরে মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামের যে পরিবেশ তাতে সেটা বলার উপায় নেই মোটেও।
বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা না থাকলেও তাদের উপস্থিতি কিন্তু কম নেই। এ মুহূর্তে লুঝনিকি স্টেডিয়ামের চারিদিকে ঢুঁ মারলে চোখে পড়বে শত শত ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থক। তারা নিজ দেশের জার্সি, ক্যাপ পরে দেখতে এসেছে ফাইনাল। না থাক তাদের দেশ, বিশ্বকাপের ফাইনাল তো ফাইনালই, সেটা বাছে না কোনো দেশ, জাতি, বর্ণ ভেদাভেদ।
গত এক মাস ধরে বিশ্বকে কাঁপিয়েছে বিশ্বকাপ। ধরার সবচেয়ে জনিপ্রয় ও উত্তেজনাপূর্ণ খেলার সবচেয়ে বড় ও মর্যাদার প্রতিযোগিতা বিশ্বকাপ। যাকে বলা হয় ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ।’ সেই শো’য়ের ফাইনালে আজ কারা খেলছে, তা যেন অবিবেচ্য। প্রধান কথা হলো বিশ্বকাপের ফাইনাল। মাসব্যাপী বিশ্বকাপের যে মাতাল হাওয়া ছিল দেশে দেশে, তার শেষটা আজ হচ্ছে লুঝনিকিতে।
ফাইনাল শুরুর ঠিক তিন ঘণ্টা আগে স্টেডিয়াম এলাকা যেভাবে দর্শকরা উৎসবমুখর করে রেখেছে, তাতে আজকের দিনের জন্য মানুষ ভুলেই গেছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাকে। চারিদিকের যে উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা তার বেশিরভাগই ক্রোয়েশিয়ার দর্শকরে জন্য। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা ইউরোপের দেশটিকে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কেউ হিসেবেই আনেনি। মাত্র ২৭ বছর আগে স্বাধীন হওয়া দেশটি ফুটবল বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে তারাও পারে।
দুই দেশের দর্শক-সমর্থক ছাড়াও যারা বিভিন্ন দেশ থেকে যারা এসেছেন, তাদের বেশিরভাগই মনে করেন রাশিয়া বিশ্বকাপ নতুন চ্যাম্পিয়ন উপহার দেবে। মানে ক্রোয়েশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনার কথাই বলছেন সাধারণ দর্শকরা। তবে লড়াইটা যে হাড্ডাহাড্ডি হবে তা বলতেও ভুলছেন না কেউ।
ঠিক এক মাস আগে এই স্টেডিয়ামেই পর্দা উঠেছিল বিশ্বকাপের ২১তম আসরের। আজ রাতে সেই লুঝনিকিতেই পর্দা নামছে। ফাইনালের আগে থাকবে আনুষ্ঠানিক সমাপনী অনুষ্ঠান। সব কিছুই নতুন করে সাজানো হয়েছে। লুঝনিকি স্টেডিয়ামের বাইরের উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করে বিদায় জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া বিশ্বকাপকে।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ দেশটির ১১ শহরের ১২ স্টেডিয়ামের এই বিশ্বকাপকে সর্বকালের সেরার স্বীকৃতি দিয়েছেন ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো। এটা কেবল বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থার বড় কর্তার স্বীকৃতিই নয়, বিশ্বকাপ কাভার করতে কিংবা দেখতে আসা অনেক মানুষই বলছেন সেরা বিশ্বকাপ এটি।
আরআই/আইএইচএস/আরআইপি