পেট্রলপাম্প থেকে টানা দুই বিশ্বকাপের গোলদাতা

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:২১ পিএম, ২৫ জুন ২০১৮

‘যদি তারকা হতে চাও তাহলে বিশ্বকাপে গোল দাও’- এমন উক্তিটি কে করেছিলেন সেটি না জানা গেলেও আহমেদ মুসা দুই গোল করে যে তারকা বনে গেছেন সেটা এখন বলাইবাহুল্য। মূলত আইসল্যান্ডের বিপক্ষে তার জোড়া গোল নাইজেরিয়াকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে বিশ্বকাপের পরের রাউন্ডে যাওয়ার। ২০১৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জোড়া গোল করেছিলেন এই লেস্টার সিটির স্ট্রাইকার। আবারো সেই আর্জেন্টিনার মুখোমুখি তিনি। কিন্তু ফুটবলে এতদূর আসাটা তার জন্য সহজ কাজ ছিল না।

musa

২৫ বছর আগে নাইজেরিয়ার জস শহরে জন্মগ্রহণ করেন মুসা। মাত্র সাত বছর বয়সেই বাবার কাছ থেকে সরে যান। তার বাবার অনেকগুলো স্ত্রী থাকার কারণে নিজের মাকে নিয়েই দূরে সরে যেতে বাধ্য হন তিনি। নিজের ফুটবল অধ্যায় শুরু করেন তার দেশের কানো পিলার্সের হয়ে। ২০০৮ সালে জস শহরের পত্রিকায় প্রতিভা অন্বেষণে নাম লেখিয়ে সবাইকে নিজের ফুটবল শৈলী দিয়ে মুগ্ধ করেন এই নাইজেরিয়ান।

সেখান থেকে ২০১০ সালে যোগ দেন নেদারল্যান্ডসের ভিভিভি-ভেনলো ক্লাবে। ২০১২ সালে তাকে কিনে নেয় রুশ ক্লাব সিএসকেএ মস্কো। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ক্লাবের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে নজরকাড়া পারফর্ম করেছেন তিনি। ক্লাবটির হয়ে ছয় মৌসুমে করেন ৬১ গোল।

musa

তার পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে ২০১৬ সালে তখনকার প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন লেস্টার সিটি তাকে কিনে নেয়। যদিও এক মৌসুম পর আবারো লোনে চলে যান তার সাবেক ক্লাব মস্কোতে। যদিও ক্লাবগুলোর হয়ে তেমন বড় কোন সাফল্য পাননি মুসা কিন্তু আফ্রিকানদের খেলাধুলার বাইরেও অন্য একটি জীবন রয়েছে। যে জীবনে মুসা অন্য সবার থেকে অনেক আলাদা।

নাইজেরিয়ার একটি শহরের নাম কানো। যা মুসার জন্মভূমি জস থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূর্বে। সেই কানো শহরেই দুটি পেট্রল পাম্প কিনে নেন মুসা। এটার একটাই উদ্দেশ্য, নিজের বেকার বন্ধুদের কিছুটা হলেও সাহায্য করা। তিনি পাম্পটি কিনে সেখানে তার বন্ধুদের চাকরি দেন। পাম্পটির নামও দিয়েছেন রুশ ভাষায় নিজের নামে ‘মাইসা’। সঙ্গে নিজের জার্সি নাম্বার ‘৭’ কেও রেখেছেন।

musa

নিজের গাটের টাকা খরচ করে বন্ধুদেরকে বেতন দিচ্ছেন। ৪০ জনেরও বেশি মানুষ বর্তমানে তার পাম্পে কাজ করছে যাদের ভরণ পোষণ বহন করছেন মুসা নিজেই। শুধু এমন মানবদরদী কাজ করেই ক্ষান্ত হননি মুসা, রমজান মাসের প্রত্যেকদিন তিনি মানুষদের যতটা সম্ভব খাবারের ব্যবস্থা করে দিতেন। পবিত্র মাসে ৩০০০ বস্তা চাল ও লক্ষাধিক নাইজেরিয়ান নায়রা ডান করেছেন। জীবনের ধ্যান জ্ঞান ফুটবল কেন্দ্রিকই রেখেছেন তিনি। এই আশায় যে, ফুটবলও তাকে কিছু দিবে। কে জানে! হয়তো তার গোলেই নাইজেরিয়া আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে চলে যাবে।

আরআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।