দক্ষিণ কোরিয়াকে বিদায় করে দ্বিতীয় রাউন্ডে মেক্সিকো

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১২ পিএম, ২৩ জুন ২০১৮

হারলেই বিদায়। এই শঙ্কাকে সামনে রেখে মেক্সিকোর বিপক্ষে রোস্তভ এরেনায় খেলতে নামে দক্ষিণ কোরিয়া। যে মেক্সিকো আবার প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে ১-০ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে এক পা দিয়েই রেখেছিল। সেই মেক্সিকোর সামনে ভালো ফুটবল খেলেও হেরে যেতে হলো এশিয়ার প্রতিনিধি দক্ষিণ কোরিয়াকে। ২-১ গোলে কোরিয়ানদের হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করে ফেললো মেক্সিকো। সে সঙ্গে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেলো দক্ষিণ কোরিয়ার।

২০০২ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম টানা দুটি ম্যাচ জিতলো মেক্সিকো। সেবার তারা ক্রোয়েশিয়া এবং ইকুয়েডরকে গ্রুপের টানা প্রথম দুটি ম্যাচে হারিয়েছিল। এবার জার্মানির পর তারা হারালো দক্ষিণ কোরিয়াকে। এই ম্যাচেও ৫৮ ভাগ বল পজেশন ছিল মেক্সিকোর দখলে। আর দক্ষিণ কোরিয়ার দখলে ছিল ৪২ ভাগ। গোল লক্ষ্যে তারা শট নিয়েছিল ১২টি। অন টার্গেট শট ছিল ৫টি।

ম্যাচের ২৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোলটি করে মেক্সিকোকে এগিয়ে দেন কার্লোস ভেলা। দক্ষিণ কোরিয়ার জ্যাং হিউন সু বক্সের মধ্যেই লোজানোর শট হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দেন। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ভিএআর নেয়ারও প্রয়োজন হয়নি। স্পষ্ট পেনাল্টি। কার্লোস ভেলা খুব ঠাণ্ডা মাথায় স্পট কিক নেন এবং জড়িয়ে দেন দক্ষিণ কোরিয়ার জালে।

agonews24.com

৬৬ মিনিটে হ্যাভিয়ের হার্নান্দেজ করেন দ্বিতীয় গোল। হার্ভিং লোজানোর ক্রস থেকে বল পেয়ে দুইজন ডিফেন্ডারকে বল কাটিয়ে ডান পায়ের দারুণ এক শটে দক্ষিণ কোরিয়ার জাল কাঁপিয়ে দেন হ্যাভিয়ের হার্নান্দেজ। মেক্সিকোর জার্সি গায়ে তার এটা ৫০তম গোল। এমনিতেই মেক্সিকোর হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন তিনি। এবার সেই পরিসংখ্যানকে আরও বাড়িয়ে নিলেন তিনি।

ইনজুরি সময়ে একটি গোল শোধ করে দেন দক্ষিণ কোরিয়ান তারকা সন হিউং মিন। টটেনহ্যামের এই তারকা ফুটবলারের কাছ থেকে এলো অসাধারণ একটি গোল। বিশ্বকাপে ১৮০ মিনিট খেলেও তিনি গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না। অবশেষে নিজের এবং দেশের আক্ষেপ ঘোচালেন তিনি। পেলেন একটি গোলের দেখা। বক্সের বাইরে, প্রায় ২০ গজ দুর থেকে বাম পায়ের দুর্দান্ত শটে মেক্সিকোর জাল কাঁপান তিনি।

খেলার শুরুটা ছিল কিছুটা মন্থর গতির। দু’দলই নিজেদের গুছিয়ে নিতে সময় নিয়েছে। তবে, ১২ মিনিটে গোলের দারুণ একটা সুযোগ পেয়েছিলে হ্যাভিয়ের হার্নান্দেজ। মিগুয়েল লাইয়ুনের ক্রস থেকে ভেসে আসা বলে হেড করেছিলেন হার্নান্দেজ। কিন্তু দুর্ভাগ্য, পোস্টের উপর দিয়ে চলে যায় বলটি।

১৭ মিনিটে আরও একটি দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল মেক্সিকো। কর্ণার কিক থেকে ভেসে আসা বলটি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে দারুণ ক্রস করেছিলেন আন্দ্রে গুয়ার্দাদো। তার ক্রস থেকে ভেসে আসা বলে হেড করেন কার্লোস স্যালসেদো। লাফ দিয়ে উঠে দক্ষিণ কোরিয়াকে এ যাত্রায় বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক জো হিউন উ।

agonews24.com

২২ মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার সন হিউং মিন গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। মেক্সিকোর রক্ষণে মোটামুটি ঝড় তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার ডান পায়ের শটটি পোস্টের আগেই মেক্সিকোর ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করে দেন। গোলের কোনো সুযোগই আর তৈরি হলো না। পরের মিনিটেই সন হিউং মিনের ক্রস থেকে ভেসে আসা বলে হেড নিয়েছিলেন কি সুং ইয়ং। কিন্তু সেই হেড আর মেক্সিকোর জাল খুঁজে পেলো না।

২৬ মিনিটেই পোস্টের মধ্যে ভুলটা করে বসলেন জ্যাং হিউন সু। বক্সের মধ্যে হাত দিয়ে বল ঠেকিয়ে দিলেন। পেনাল্টি দিলেন রেফারি। সেখান থেকেই গোল করলেন কার্লোস ভেলা। গোল দেয়ার দুই মিনিট পরই ব্যবধান বাড়ানোর একটি সুযোগ পেয়েছিল মেক্সিকো। কার্লোস ভেলার পাস থেকে বল পেয়ে ডান পায়ের শট নেন মিগুয়েল লাইয়ুন। তবে গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন বলটি।

৩১ মিনিটে সন হিউং মিন গোল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ফ্রি-কিক থেকে নেয়া তার সেই শট চলে যায় পোস্টের অনেক ওপর দিয়ে। ৩৯ মিনিটে সমতায় ফেরার আরও একটি সুযোগ পেয়ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু সন হিউং মিনের ৬ গজ দুর থেকে নেয়া শটটি ঠেকিয়ে দেন মেক্সিকো গোলরক্ষক। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধ শেষ হলো দক্ষিণ কোরিয়ার ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে।

দ্বিতীয়ার্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার জালে একের পর এক আক্রমণই করে গেছে শুধু মেক্সিকো। দারুণ সব গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল তারা; কিন্তু বল আর কোরিয়ানদের জালে প্রবেশ করাতে পারছিল না। কোরিয়ানরাও কাউন্টার অ্যাটাকে দারুণ খেলেছিল। কিন্তু হ্যাভিয়ের হার্নান্দেজই শেষ পর্যন্ত সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন। গোল করলেন ৬৬ মিনিটে। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে মেক্সিকো।

আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।