বিশ্বকাপ মাতাবেন যেসব তরুণেরা
ফুটবল বিশ্বকাপ এমনই এক আসর যেখানে মূহুর্তের মাঝে নায়ক হয়ে যান অনেকে, ক্ষণিকের ভুলে আবার আজীবনের জন্য ভিলেন বনে যান অনেকেই। অভিজ্ঞতা, তারুণ্য, প্রতিভা, সামর্থ্য, ধৈর্য্য; সবকিছুর এক অদ্ভুত মিশেল ফুটবলের এই মহাযজ্ঞ।
সারাবিশ্বের কয়েকশ কোটি মানুষের নজর থাকে বিশ্বকাপের উপর। এর সাথে থাকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো নিজ নিজ দেশের প্রত্যাশার চাপ। প্রায়শই অনেক অভিজ্ঞ ফুটবলার এই চাপকে জয় করতে হিমশিম খান। সেখানে তরুণ ফুটবলারদের জন্য এই কাজটা যেন পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ।
তবু নিজেদের ছোট্ট ক্যারিয়ারে প্রতিভা এবং সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে অনেক তরুণই ছাপ রেখেছেন বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া তরুণ ফুটবলাররা। তাদের মধ্যেই উল্লেখযোগ্য কয়েকজনকে নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন। যাদের কিনা জোর সম্ভাবনা রয়েছে রাশিয়া বিশ্বকাপ মাতানোর:
কাইলিয়ান এমবাপে (ফ্রান্স)
বয়স মাত্র ১৯, অথচ এখনই বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামী খেলোয়াড় ফ্রান্সের ফরোয়ার্ড কাইলিয়ান এমবাপে। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ২০১৬-১৭ আসরে ফ্রেঞ্চ ক্লাব মোনাকোর হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করে আলোচনায় আসেন এমবাপে। ওই আসরে নকআউট পর্যায়ে ম্যানচেস্টার সিটি, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড এবং জুভেন্টাসের মতো দলগুলোর বিপক্ষে গোল করেন তিনি।
তার এই পারফরম্যান্স দেখেই প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ক্লাব ম্যানেজম্যান্ট চড়া মূল্যে তাকে দলে ভেড়ায়। নিজের দামের প্রতি সুবিচার করে নেইমার এবং কাভানির মতো খেলোয়াড়দের সাথে খেলেই সবশেষ মৌসুমে ২১টি গোল করেছেন এমবাপে। আসন্ন বিশ্বকাপে ফ্রান্সের সাফল্য-ব্যর্থতার অনেকাংশ জুড়েই থাকবেন ১৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।
রদ্রিগো ভেনটাঙ্কুর (উরুগুয়ে)
মূলত মিডফিল্ডার হলেও ডিফেন্ডার হিসেবেও কম যান না উরুগুয়ের ২০ বছর বয়সী ফুটবলার রদ্রিগো ভেনটাঙ্কুর। তার খেলায় মুগ্ধ হয়ে গত মৌসুমে বোকা জুনিয়র্স থেকে জুভেন্টাস কিনে নেয় তাকে। দুই পায়ে সমান দক্ষতায় খেলতে পারা ভেনটাঙ্কুর এরই নিজের খেলায় প্রমাণ দিয়েছেন নিজের সামর্থ্য।
রাশিয়ায় তুলনামূলক সহজ গ্রুপে রয়েছে উরুগুয়ে। তবু ওয়াল্টার গার্গানো এবং আরেভাল রিওসের মতো মিডফিল্ডারদের হারিয়ে বিপাকেই পড়েছিলেন উরুগিয়ের কোচ অস্কার তাবারেজ। বিশ্বকাপে নিজের জাত চিনিয়ে কোচের দুশ্চিন্তা অনেকাংশেই লাঘব করতে পারবেন ২০ বছর বয়সী রদ্রিগো ভেনটাঙ্কুর।
ম্যাক্সি গোমেজ (উরুগুয়ে)
উরুগুয়ের আরেক তরুণ তুর্কি ২১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড ম্যাক্সি গোমেজ। স্প্যানিশ ক্লাব সেল্টা ভিগোর হয়ে দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটিয়েছেন তিনি। স্প্যানিশ লা লিগায় ৩৬ ম্যাচে মাঠে ১৮ বার লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। উরুগুয়ে দলে এডিনসন কাভানি এবং লুইস সুয়ারেজের মতো পরীক্ষিত স্ট্রাইকাররা থাকায়, ম্যাচের মূল একাদশে জায়গা পাওয়াটা কঠিন হবে গোমেজের জন্য। তবে সুযোগ পেলে যে নিজের জাত চেনাবেন ৬ ফুট ১ ইঞ্চি উচ্চতার এই ফুটবলার, তা নিয়ে সংশয় থাকার কথা নয় কারোই।
ড্যানিয়েল আরজানি (অস্ট্রেলিয়া)
এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় অস্ট্রেলিয়ার ড্যানিয়েল আরজানি। অস্ট্রেলিয়ান লিগে মেলবোর্ন সিটির হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জোড়েই বিশ্বকাপের স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন আরজানি। সকারুদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ম্যাচের দুইটিতেই বেঞ্চ থেকে পরে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছিলন তিনি।
পরে হাঙ্গেরির বিপক্ষে দৃষ্টিনন্দন এক গোল করে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দেন তিনি। এরই মধ্যে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নজর পড়েছে তার উপর। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলে নিজ দেশকে সাফল্য এনে দিলেই বর্ণিল এক ক্যারিয়ার অপেক্ষা করছে আরজানির সামনে।
ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড (ইংল্যান্ড)
ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড। ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলের হয়ে সবশেষ মৌসুমে দুর্দান্ত খেলেছেন তিনি। এমনকি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালেও ছিল অসাধারণ কিছু ডিফেন্ডিং। তার এমন পারফরম্যানসের কারণেই মাত্র ১৯ বছর বয়সেই তার প্রতি বাজি ধরতে দ্বিধা নেই কারো।
এসএএস/আরআইপি