তরুণদের হাতেই ফুটবলের পতাকা

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১২:৪১ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০১৭

গত বছর অক্টোবরে ভুটানের কাছে জাতীয় দলের হারের পর বাংলাদেশ কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি। ওই হারটা বাংলাদেশের ফুটবলের ভিতটাই নাড়িয়ে দিয়েছে। অনেকের মতে ভুটানের কাছে হারে বাংলাদেশের ফুটবলের দেউলিয়াত্বই প্রকাশ পেয়েছে।

বাংলাদেশ আবার কবে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে, তা ঠিক নেই। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এখন ব্যস্ত বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট নিয়ে। এ বিভাগে সুফলটাও ভালো পাচ্ছে লাল-সবুজ জার্সিধারী বয়সভিত্তিক দলগুলো।

বয়সভিত্তিক এ টুর্নামেন্টের সর্বশেষ ছিল অনূর্ধ্ব-১৯ দলের তাজিকিস্তান মিশন। বুধবার দেশটির দুসানেবেতে শ্রীলংকাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বাছাই পর্ব শেষ করেছে বাংলাদেশ। চূড়ান্ত পর্বে ওঠা না হলেও বাংলাদেশের যুবারা যে ফুটবল খেলেছে, তা আশা জাগানিয়া।

গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চূড়ান্ত পর্বে ওঠা তাজিকিস্তানকে গোলশূণ্য রুখে দিয়ে মিশন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। মাঝের দুই ম্যাচের একটিতে মালদ্বীপকে হারিয়েছে ১-০ গোলে, একই ব্যবধানে হেরেছে উজবেকিস্তানের কাছে। চার ম্যাচের দুটি জয়, একটি করে ড্র ও হার। এ পর্যায়ের ফুটবলে এটা বাংলাদেশের জন্য খারাপ রেজাল্ট নয়।

গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ চারটি আন্তর্জাতিক বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে। যার দুটি এশিয়ান পর্যায়ের, দুটি দক্ষিণ এশিয়ান পর্যায়ের। চারটি টুর্নামেন্টেই বাংলাদেশ আশা জাগানিয়া ফুটবল খেলেছে।

বয়সভিত্তিক এ টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছিল সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের মধ্যে দিয়ে। নেপালে অনুষ্ঠিত এ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ চারটি ম্যাচ খেলে তিনটিতেই জিতেছে। সেমিফাইনালে নেপালের কাছে হারটা বাদ দিলে কিশোরদের খেলাটা ছিল প্রশংসনীয়।

শ্রীলংকাকে ৪-০, ভুটানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে লাল-সবুজ জার্সিধারী কিশোররা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ৪-২ গোলে হেরে যায় নেপালের কাছে। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশের ছেলেরা ভুটানের জালে গু নেগুনে দেয় ৮ গোল।

কিশোর ফুটবলের এ দলটির পরের অ্যাসাইনমেন্ট ছিল এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপ। কাতারে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ইতিহাস সৃষ্টি করে স্বাগতিকদের ২-০ গোলে হারিয়ে। প্রথম ম্যাচে ইয়েমেনের কাছে ২-০ গোলে হারে বাংলাদেশের কিশোররা।

সুন্দর ফুটবল খেলেও ওই ম্যাচে বাংলাদেশ দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুই অর্ধের শেষের দিকে দুই গোল হজম করে। কাতারকে হারিয়ে ঘরে ফেরা কিশোরদের দীর্ঘমেয়াদি অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছে বাফুফে।

তাজিকিস্তানে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের আগে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছিল সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে। সেখানেও বাংলাদেশের জন্য বাধা হয়েছিল নেপাল। প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৩ গোলে পিছিয়ে পড়েও বাংলাদেশ অবিস্মরণীয় জয় পেয়েছিল ৪-৩ ব্যবধানে।

এরপর মালদ্বীপকে ২-০ গোলে হারিয়ে পরের ম্যাচে নেপালের কাছে ২-১ গোলে হেরে যায়। শেষ ম্যাচে ভুটানকে হারায় ২-০ গোলে। দুই মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশ তিনবার হারিয়েছে ভুটানকে। এর মধ্যে কিশোররা দুই ম্যাচে ১১ গোল দিয়েছে পাহাড়ী দেশটির জালে। এক বছর আগে ভুটানের কাছে জাতীয় দলের হারের প্রতিশোধটা ভালোভাবেই নিয়েছে কিশোররা।

মামুনুল, এমিলিরা যেখানে লজ্জা দিয়েছে; সেখানে বয়সভিত্তিক দলগুলো প্রতিটি টুর্নামেন্ট থেকে পাঠিয়েছে জয়ের খবর। ট্রফি জয়ের মতো কোনো সাফল্য না এলেও পারফরম্যান্স দিয়ে তরুণরা জানিয়ে দিয়েছে দেশের ফুটবলের পতাকা তাদেরই হাতে।

আরআই/এমএমআর/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।