এনসিএলের পর বিপিএলেও সর্বাধিক রানের রেকর্ড গড়বেন নাইম শেখ?

নাইম শেখ কি আবার নিজেকে খুঁজে পেতে শুরু করেছেন? গত ডিসেম্বরে হওয়া ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টেই কিন্তু মিলেছিল তার আভাস। সে আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ১০ ম্যাচে ৩টি হাফসেঞ্চুরিসহ করেন ৩১৬ রান। স্ট্রাইক রেটও ভালো ছিল; ১৩৫.০৪।
সেই নাইম শেখ এবারের বিপিএলেও ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলছেন। আজকের আগে পর্যন্ত ১০ খেলায় ৩টি ফিফটি (৫৮, ৭৭, ৫১) এসেছে তার ব্যাট থেকে।
তবে এই ভালো খেলার মাত্রাটা আরও ওপরে উঠলো আজ। ধীরে ধীরে খোলস পাল্টে শেষের দিকে নাইম শেখের ব্যাট ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলো। ওপেন করতে নামা নাইমের প্রথম ১০ ওভার শেষে রান ছিল ২৩ বলে ২৯।
পরের ১০ ওভারে সেই নাইম ৩৯ বলে করলেন ৮২। চার ও ছক্কার মিশেলে শনিবার দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই শেরে বাংলায় টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের সেরা ইনিংসটা খেললেন নাইম। তার ব্যাট থেকে বেরিয়ে এলো দুর্দান্ত শতক।
নাইম শেখ শট খেলতে পারেন। বিগ হিট নেওয়ার ক্ষমতা আছে। উইকেটের সামনে ও পেছনে দুই দিকেই চটকদার ফ্রি স্ট্রোক খেলার সামর্থ্য আছে ভালোই। কিন্তু বেশিরভাগ সময় নাইমের ব্যাটে দুটি দরকারি উপাদান কম চোখে পড়ে-ধারাবাহিকতা ও রানের গতি বাড়ানোর ক্ষমতা।
অনেক সময় দেখা গেছে, নাইম শেখ দীর্ঘক্ষণ উইকেটে থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রানের গতি বাড়াতে পারেননি।অনেকক্ষণ উইকেটে থাকার পরও স্ট্রাইকরেট থেকে গেছে ১০০-এর আশপাশে বা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এবার যেন নাইম শেখ সেই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠেছেন।
এবারের বিপিএলে তার আগের ৩ ফিফটির দিকে তাকালেই সেটা পরিষ্কার হবে। আজ বৃহস্পতিবার রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ঝোড়ো শতকের আগে বরিশালের বিপক্ষে ২ পর্বেই জোড়া হাফসেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন বেশ আক্রমণাত্মক মেজাজে (২৭ বলে ৫১, স্ট্রাইক রেট ১৮৮.৮৮ ও ৫৯ বলে ৭৭, স্ট্রাইক রেট ১৩০.৫০)। এছাড়া রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ১৪১.৪১ স্ট্রাইক রেটে ৪১ বলে করেছেন ৫৮ ঝড়ের গতিতে।
বৃহস্পতিবার হোম অব ক্রিকেটে চার ও ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে, ঝড়ের বেগে ১৭৯.০৩ স্ট্রাইক রেটে ৮ বিশাল ছক্কা ও ৭ বাউন্ডারিতে নাইম শেখ উপহার দিয়েছেন ৬২ বলে ১১১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস।
আর সেই ইনিংসটিই খুলনা টাইগার্সকে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে এনে দিয়েছে ২২০ রানের বিশাল পুঁজি। যা পরবর্তীতে জয়ের জন্য যথেষ্ট বলেই প্রমাণ হয়।
দলকে সুপার ফোরের লড়াইয়ে রেখেই ক্ষান্ত হননি নাইম। দুর্বার রাজশাহীর দুই টপ অর্ডার তানজিদ তামিম (৪২৭) ও এনামুল বিজয় (৩৯২) টপকে এক লাফে বিপিএলের টপ স্কোরারও হয়ে গেলেন নাইম। ১১ ম্যাচে নাইম শেখের রান এখন ৪৪৪।
যদি দল সুপার ফোরে যায়, তাহলে ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি আসরের পর বিপিএলেও সর্বাধিক রান সংগ্রাহক হওয়ার হাতছানি নাইম শেখের সামনে।
বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে একই বছরে, একই ফরম্যাটে পরপর দুই আসরে সর্বোচ্চ স্কোরার হওয়ার নজির খুব কম। নাইম শেখ কি পারবেন?
এআরবি/এমএমআর/জেআইএম