বিপিএল শুরুর আগে শিরোপা নিয়ে কে কী ভাবছে?

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:২০ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

দেখতে দেখতে চলে এলো সময়। বিপিএল দিয়ে তারুণ্যের উৎসব শুরু করার পরিকল্পনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানের স্পিরিটকে ধরে রাখতেই তারুণ্যের উৎসব করতে চায় সরকার। বিপিএল যে কারণে এবার ভিন্ন তাৎপর্য নিয়ে হাজির হচ্ছে আমাদের সামনে।

এমন একটি টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অবশ্যই প্রতিটি অংশগ্রহণকারী ফ্রাঞ্চাইজি রয়েছে সর্বোচ্চ উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে। কাগজে কলমে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও, খুব বেশি পার্থক্য নেই দলগুলোর মধ্যে। শিরোপা জয়ের সামর্থ্য রাখে প্রতিটি দলই।

তো, এবার শিরোপা জিততে চায় কে কিভাবে? প্রতিটি দলের ক্রিকেটার, কোচ এবং অধিনায়কের ভাবনাই বা কী? বিপিএল শুরুর আগেরদিন জেনে নেয়া যাক সে সম্পর্কে। সাত দলের প্রতিনিধিরা আজ মিডিয়ার সামনে যেভাবে বিপিএল নিয়ে কথা বলেছেন, সেভাবেই হুবহু তুলে ধরা হলো।

তামিম ইকবাল (ফরচুন বরিশাল)

‘যখনই আপনি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য খেলবেন আপনার একটা দায়িত্ব থাকে। ওরা নিশ্চয়ই একটা পরিকল্পনা করেই নেয় যে এই খেলোয়াড়টার কাছ থেকে আমি এটা আশা করতে পারি। কিছু সময় ওই খেলোয়াড়টা পূরণ করে কিছু সময় করে না। এটাই ক্রিকেট। আমি নিশ্চিত আমাকে যখন ফরচুন বরিশাল দলে নেয় তাদেরও একটা প্রত্যাশা ছিল, প্রথম মৌসুম অসাধারণ ছিল। এই বছরটা আমরা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন, অবশ্য শিরোপা ধরে রাখার চেষ্টা করবো।’

‘গত বছর কাগজে-কলমে হয়তো আমরা তৃতীয় শক্তিশালী দল ছিলাম। আমাদের যদি কুমিল্লা বা রংপুরের সঙ্গে তুলনা করা হয় তারা আমাদের থেকে ভালো দল ছিল। সেখান থেকে আমরা চ্যাম্পিয়ন হই। এ বছরও কয়েকটা দল..., তাদের হয়তো বড় নামের ক্রিকেটার নেই, তবে তারা খুব ভারসাম্যপূর্ণ দল। খেলা শুরু হলে বুঝতে পারবো কার শক্তি কতটুকু বা কোন দল কোন জায়গায় আছে। প্রথম রাউন্ডের পর বোঝা যাবে কোন দলগুলো টাইটেলের জন্য লড়বে।’

থিসারা পেরেরা (ঢাকা ক্যাপিটালস)

‘আমি সব ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের মধ্যে তুলনা করতে পারব না। তবে যেগুলোতে আমি খেলেছি এটা তার মধ্যে অন্যতম সেরা একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ বিপিএল। আমি অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেছি। আমি এসবের মধ্যে অর্ডার করতে পারি না। আমি বলতে পারি না এটা ভালো অথবা এটা খারাপ।’

‘এটা আগের থেকে ভালো হচ্ছে প্রতি বছর। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিপিএল কে হ্যাটস অফ করতে চাই। এখানে আমি অনেক বছর খেলেছি, আমার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। বিপিএল একটানা ১১তম আসরে চলে গেছে এটা দেখেই ভালো লাগছে। কিছু দেশ আছে যাদের লিগ এক-দুই বছর হয় এরপর আবার বন্ধ হয়, আবার চালু হয়। প্লেয়ার হিসেবে ওসব টুর্নামেন্টে খেলা আনন্দদায়ক নয়। বিপিএল আয়োজকদের আমি ধন্যবাদ জানাই, গত কয়েক বছর তারা একটানা আসরটি আয়োজন করেছে। তাই আমি বলেছি সবগুলো লিগের মধ্যে আমি তুলনা করতে পারব না। তবে বিপিএলে দারুণ খেলা হয়।’

ইজাজ আহমেদ (প্রধান কোচ, দুর্বার রাজশাহী)

‘আমাদের দলটা বেশ তরুণ এবং ভালো। কিছু অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও আমাদের দলে আছে, যারা বাংলাদেশের হয়ে খেলেছে...। যেমন ইয়াসির, তাসকিন, এনামুল হক। এরা সবাই দারুণ ক্রিকেটার। হারিস আমাদের সঙ্গে যোগ দেবে, সে চলে এসেছে। জিম্বাবুয়ে থেকে রায়ান বার্লও চলে এসেছে। আমাদের দলে অভিজ্ঞ এবং তারুণ্যের দারুণ এক কম্বিনেশন আছে।’

‘উপমহাদেশে উইকেটে কিছুটা টার্ন থাকে। আমি এটা নিয়েই ভাবছি। কেননা আগে আমি এখানে অনেক ক্রিকেট খেলেছি। অনেক বছর ধরে বিপিএলের খেলাও আমি দেখেছি। এখানে কী ধরনের উইকেটে খেলা হয় সেটা আমি জানি। এটাই আমি ক্রিকেটারদের বলব।’

কাজী নুরুল হাসান সোহান (অধিনায়ক, রংপুর রাইডার্স)

‘দল হিসেবে মাঠে কিভাবে খেলছি এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিনদিক থেকেই। অনেক বেশি অলরাউন্ডারও আমাদের দলে আছে। সবদিক থেকেই কম্প্যাক্ট। দল হিসেবে আমরা কতটা খেলতে পারছি এবং ওই অনুভূতিটা কত তাড়াতাড়ি গড়ে তুলতে পারতেছি এটা গুরুত্বপূর্ণ।’

‘এটা (গ্লোবাল সুপার লিগের শিরোপা) আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণাদায়ী। অবশ্যই দলের জন্য ভালো একটা ভাইব তৈরি করবে; কিন্তু এটা আলাদা একটা টুর্নামেন্ট। এখানে নতুন করে শুরু করতে হবে। ওই জায়গা থেকে যে ইতিবাচক দিকগুলো আছে এর সঙ্গে ভুলগুলো যদি না করি, তাহলে হয়তো আমাদের জন্য আরও ভালো হবে।’

‘রংপুর প্রতিবারই ভালো দল গড়ে। রংপুরের যারা সমর্থক আছে, তাদের একটা প্রত্যাশা আছে। গত দুবারই আমরা কোয়ালিফায়ার খেলেছি। অবশ্যই চেষ্টা করবো ওই হার্ডলটা পার হয়ে পরের ধাপে যাওয়ার।’

আফিফ হোসেন (ক্রিকেটার, খুলনা টাইগার্স)

‘আমাদের দল অনেক ভালো হয়েছে। বিশেষ করে আমাদের স্থানীয় ক্রিকেটাররা অনেক ভালো আছে এবং বিদেশী খেলোয়াড় যারা আছে তারা যদি ফ্রি থাকে তাহলে তো কম্বিনেশন অনুযায়ী অবশ্যই খুব ভালো দল হয়েছে।’

‘প্রত্যেকটা বিপিএলই প্রতিটা খেলোয়াড়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ভালো করতে পারলে সামনে অনেক অনেক জায়গায় সুযোগ আসে। শুধু ইন্টারন্যাশন্যালে না, অন্যান্য ফ্রাঞ্চাইজিতেও সুযোগ আসে। আশা থাকবে নিজের সেরাটা দিতে পারি দলের জন্য।’

‘এটা অনেক বড় একটা টুর্নামেন্ট। বিদেশী খেলোয়াড়দের অনেক সময় যাওয়া-আসার মধ্যে থাকতে হয়। কম্বিনেশনটা আছে, আমার মনে হয় ভালো মতো আছে। সবারই এটা মেনে নিয়ে আগাতে হবে যে সব সময় সবাই ফ্রি থাকবে না।’

জর্জ মানজি (স্কটিশ ক্রিকেটার, সিলেট স্ট্রাইকার্স)

‘এটা আমার প্রথম বাংলাদেশে আসা। আমি সুযোগটি কাজে লাগাতে মুখিয়ে আছি। যেটা এসে বুঝেছি, এখানের তিনটি ভেন্যু ভিন্ন। নিজেকে খোলা মনে নিয়ে এসেছে। এখানে সময়টা উপভোগ করবো, যতটা সম্ভব নিজেকে মেলে ধরবো। ক্রিকেট নিয়মিত আমাকে ভালো কিছু উপহার দিচ্ছে। আমি বেশ কয়েকটি কন্ডিশনে খেলেছি। সেসব অভিজ্ঞতা আমি এখানে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো যতটা সম্ভব। সঙ্গে নতুন কিছু শেখারও চেষ্টা করবো।’

মোহাম্মদ মিঠুন (অধিনায়ক, চিটাগং কিংস)

‘আমাদের দলটা ভারসাম্যপূর্ণ। ব্যাটিং ও বোলিং বিভাগ বৈচিত্র্যপূর্ণ। যেকোনো প্রতিযোগিতায় শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগিয়ে যেতে চাই। আমরা তিনটি ট্রেনিং সেশন পেয়েছি। আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উঠার চেষ্টা করছি।’

‘আমরা সাকিবকে নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা করেছি। এখন মাঠে নামলে কাউকে মিস করার সুযোগ নেই। কে আমাদের সঙ্গে নেই তাকে নিয়ে ভেবে লাভ নেই। আমাদের সঙ্গে যদি থাকত তাহলে ভালো; কিন্তু সে এখন নেই। আমি মনে করি আমাদের সামর্থ্য রয়েছে মাঠে ভালো কিছু দেওয়ার।’

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।