সাউদির বিদায়ী টেস্টে রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডকে হারালো নিউজিল্যান্ড
জয়টা নিউজিল্যান্ডের ভীষণ প্রয়োজন ছিল। না হয় টিম সাউদির বিদায় যে নিদারুণ ভীষণ্ন হতো! ক্যারিয়ারের শেষ সিরিজে দলের হোয়াইটওয়াশ দেখতে হতো ৩৬ বছর বয়সী পেসারকে। কিন্তু সতীর্থরা সেটি হতে দেয়নি। রেকর্ড গড়া এক জয় উপহার দিয়েই সাউদিকে বিদায় জানিয়েছেন তারা। এতে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে শেষ করেছে কিউইরা।
সিরিজের শেষ টেস্টে ইংল্যান্ডকে ৪২৩ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ইংলিশদের বিপক্ষে দীর্ঘ ফরম্যাটের ক্রিকেটে এটি কিউইদের রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড। এর আগে ২০১৫ সালে লিডসে ইংল্যান্ডকে সর্বোচ্চ ১৯৯ রানে হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড।
সাউদির বিদায়ী টেস্টে নিজেদের ইতিহাসে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডটিও আজ ছুঁয়ে ফেলেছে নিউজিল্যান্ড। ২০১৮ সালে ক্রাইস্টচার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪২৩ রানে জিতেছিল কিউইরা। আজকের দিনের আগে এটিই ছিল রানের হিসেবে টেস্টে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় জয়।
জয়ের জন্য ইংল্যান্ডকে ৬৫৮ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। অর্থাৎ নিউজিল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করতে হলে অলৌকিক কিছুই করতে হতো ইংলিশদের। অলৌকিক কিছু তো দূরে থাক, মিচেল স্যান্টনারের ঘূর্ণি আর ম্যাট হেনরি ও সাউদির পেসে দিশেহারাই হয়ে গেছে ইংলিশরা। শেষ পর্যন্ত গুটিয়ে গেছে ২৩৪ রানে।
ইংল্যান্ড যে হ্যামিল্টনে বিশাল ব্যবধানে হারতে যাচ্ছে, তার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে গতকাল তৃতীয় দিনের খেলা শেষেই। বিশাল রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৮ রানেই দুই ওপেনারের উইকেট বিলিয়ে দিয়েছিল তারা।
আজ মঙ্গলবার ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় উইকেটে ১১৮ রানের জুটি করে লড়াইয়ের আভাস দেন জো রুট ও জ্যাকব বেথেল। ৬৪ বলে ৫৪ রান (১০ চারে) করে রুট আউট হলে আর দাঁড়াতেই পারেনি ইংল্যান্ড। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে সফরকারীরা।
হ্যারি ব্রুক ৬ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান। ৯৬ বলে ৭৬ রান (১৩ চার ১ ছক্কা) আউট হন বেথেল। এরপর অলি পোপ ৩৬ বলে ১৭, গাস অ্যাটকিনসন ৪১ বলে ৪৩ ও ব্রাইডন কার্স ১২ বলে ১১ করেন। তৃতীয় দিন বল করতে গিয়ে হ্যামস্ট্রিং চোটে পড়ায় ব্যাট করতে নামেননি বেন স্টোকস। এতে ৪৭.২ ওভারে ২৩৪ রানে শেষ হয় ইংল্যান্ডের ইনিংস।
ক্যারিয়ারের শেষ দিনে একটি উইকেট শিকার করেন সাউদি। জ্যাকব বেথেলকে গ্লেন ফিলিপসের ক্যাচ বানিয়ে ইংল্যান্ডের পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটান তিনি। আগের দিন বোল্ড করেছিলেন ইংলিশ ওপেনার বেন ডাকেটকে। অর্থাৎ দ্বিতীয় ইনিংসে দুই উইকেট শিকার করেন সাউদি।
২০০৮ সালের মার্চে নেপিয়ারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড টেস্ট দলে অভিষেক হয় সাউদির। ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে ১০৭টি ম্যাচ খেলেছেন কিউই পেসার। উইকেট শিকার করেছেন ৩৯১ উইকেট। স্বীকৃত বোলার হলেও ব্যাট হাতে অবদান ছিল সাউদির। ১৫৬ ইনিংস ব্যাট করে নিয়েছেন ২ হাজার ২৪৫ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড: ৩৪৭ ও ৪৫৩।
ইংল্যান্ড: ১৪৩ ও ৪৭.২ ওভারে ২৩৪।
ফল: নিউজিল্যান্ড ৪২৩ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মিচেল স্যান্টনার
সিরিজসেরা: হ্যারি ব্রুক।
এমএইচ/জিকেএস