এ দলটার ওপর আস্থা রাখতে বললেন খালেদ মাহমুদ সুজন

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৫৫ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

পাকিস্তান সফরে আকাশে ওড়া দলটি হঠাৎই মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছিল। ভারত সফরে ভারতীয়দের কাছে আর ঘরের মাঠে প্রোটিয়াদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। চরমভাবে পর্যদুস্ত হয়েছিল। ওয়েষ্ট ইন্ডিজ সফরের প্রথম টেস্টেও ছিল সেই জরাজীর্ণ দশা। বোলাররা মোটামুটি উতরে গেলেও ব্যাটারদের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। শ্রী-হীন, অনুজ্জ্বল, দায়িত্ব-জ্ঞানহীন ব্যাটিং করে পরপর ৫ টেস্টে করুনভাবে হেরে টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের অবস্থান প্রায় নষ্ট করে ফেলতে বসেছিল বাংলাদেশ।

অ্যান্টিগায় ক্যারিবীয় পেসারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি সাদমান, জাকির, জয়, মুমিনুল, লিটন, মিরাজরা। খাবি খেয়েছেন। জেতা বহুদুরে, ম্যাচে একটি ভাল সেশন কাটিয়ে জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ। সারাক্ষণ ব্যর্থতার ঘানি টেনেছে।

ওই অগোছালো, অবিন্যস্ত আর আড়ষ্ট অবস্থা থেকে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের মাটিতে ক্যারিবীয়দের হারানো প্রায় অলিক কল্পনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ঠিক সেখান থেকে সবাইকে অবাক করে শতভাগ ইউটার্ন মিরাজ বাহিনীর। অ্যান্টিাগায় ২০১ রানের বিরাট পরাজয়ের পর জ্যামাইকায় লড়াই - সংগ্রামে ভরা টেস্টটি টাইগারদের সত্যিকার বীরের মত ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপম দলিল হয়ে থাকলো।

যে দলের ব্যাটাররা রান করতে ভুলে গিয়েছিলেন? দেড়শোর আশপাশে ইনিংস শেষ করাই যাদের ‘স্ট্যান্ডার্ড’ হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেই দল জ্যামাইকায় প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হয়েও ম্যাচ জিতলো ১০১ রানে। কি করে? কিভাবে সম্ভব এমন এক অপ্রত্যাশিত জয়? একি স্বপ্ন, নাকি মায়া? টাইগার ভক্ত- সমর্থকদের যেন এখনো ঘোর কাটছে না।

কি করে সম্ভব হলো এমন জয়? খালেদ মাহমুদ সুজন মনে করেন, ‘এটা এক অবিস্মরণীয় জয়। এক কথায় আমি বলবো যে দারুণ জয়। সত্যি কথা বলতে গেলে বলতে হবে যে আমরা হঠাৎ একটু বেশি খারাপ খেলছিলাম। পাকিস্তানের সাথে ২ টেস্টে চমৎকার ও দুটি স্মরণীয় জয়ের পর ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে চরমভাবে পর্যদুস্ত হয়েছি।’

‘এরপর ওয়েষ্ট ইন্ডিজে গিয়ে কয়েকজন সিনিয়র প্লেয়ার ছাড়া একঝাঁক তরুণে গড়া দল অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে জ্বলে উঠতে পারেনি। বাজেভাবে হেরেছে। যেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো ছিল খুব কঠিন। টিম পারফরমেন্স ও ব্যক্তিগত পারফরমেন্স কোনটাই ভাল ছিল না; কিন্তু ওই খাদের কিনারা থেকেও উঠে দাড়িয়েছে ছেলেরা। জ্যামাইকায় শেষ টেস্টে আমরা ট্রিমেন্ডাস কাম ব্যাক করেছি। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ছেলেরা।’

শুনে অবাক হবেন, এই সিরিজের না হলেও এই তারুণ্যনির্ভর দল খুব শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াবে, এমন বিশ্বাস ছিল জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সুজনের। মিরাজ, সাদমান, মাহমুদুল হাসান জয়, শাহাদাত দিপু, মুমিনুল হক, লিটন দাস, মেহেদি মিরাজ, জাকের আলী অনিক, তাসকিন, তাইজুল, হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানাকে খুব কাছ থেকে বেশ কয়েক বছর ধরে দেখছেন।

ঘরোয়া ক্রিকেটে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও বিপিএলে এদের অনেকেই খালেদ মাহমুদ সুজনের অধীনে খেলেন। সেই কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা থেকে সুজনের বিশ্বাস ছিল, এই তরুণ ছেলেরা ঘুরে দাঁড়াবে। সেই ক্যাপাবিলিটি তাদের আছে। একটু সময় লাগবে। ছেলেদের সময় দিতে হবে। ধৈর্য্য ধরতে হবে ভক্ত, সমর্থক সবার।

তাই মুখে এমন কথা, আমার মনে হয়েছে ওরা পারবে। পেরেছেও। আসলে আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। আমরা মনে হয় ভুলেই গেছি সিনিয়র প্লেয়াররা নেই। ম্যাক্সিমামই তরুণ। নবীন। তাদের সময় লাগবে নিজেদের মেলে ধরতে। ছেলেরা হারতে হারতে জিততে শিখবে। দেখলেন তো কিভাবে লড়াই- সংগ্রাম করে জিতে দেখালো। আসুন আমরা ধৈর্য্য ধরে তাদের ওপর বিশ্বাস এবং আস্থা রাখি। দেখবেন এই তরুণরা আগামীতে আরও ভাল কিছু উপহার দেবে দেশকে।

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।