কেন তিন সেরা কোচ থাকছেন না এবারের বিপিএলে?

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৫৫ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২৪

তারা কি এবার কোচিং করাবেন? ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের একমাত্র আসর প্রিমিয়ার লিগ ও বিপিএলে কোচ হিসেবে যারা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, সফল ও অগ্রগণ্য, সেই খালেদ মাহমুদ সুজন, মোহাম্মদ সালাউদ্দীন ও সোহেল ইসলাম কি এবারের বিপিএলে কোচিং করাবেন না? তাদের সাথে এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত কোনো দলের কথা বার্তা চূড়ান্ত হয়নি? নাকি তারা নিজেরাই এবার বিপিএলে কোচিং করানো থেকে বিরত থাকতে চাচ্ছেন?

ক্রিকেট পাড়ায় ঢালাওভাবে জানাজানি হয়নি। তবে বিপিএলের দলগুলোর মধ্যে এরই মধ্যে এ প্রশ্ন যথেষ্ঠ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। কী কারণে সুজন, সালাউদ্দীন ও সোহেলের সাথে এখনও কোনো দলের কথা-বার্তা চূড়ান্ত হয়নি?

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, খালেদ মাহমুদ সুজন আর মোহাম্মদ সালাউদ্দীনকে মূলতঃ চড়ামূল্যে নিতে আগ্রহী দেখায়নি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। কারণ, তাদের পারিশ্রমিক অনেক বেশি। আর সোহেল ইসলাম আছেন বিসিবির অনুমতির অপেক্ষায়।

শোনা যাচ্ছে, গতবারের বিপিএলেও সুজন আর সালাউদ্দীনের পারিশ্রমিক ছিল ২০ লাখ টাকার ওপরে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই অর্থের পুরোটাই যে পারিশ্রমিক তা নয়। এর সাথে বিপিএল শুরুর আগে যেদিন থেকে অনুশীলন শুরু হয় সেদিন থেকে দৈনিক ভাতা, যাতায়াত, উইনিং বোনাস এবং পারিশ্রমিক যোগ করলে টাকার অংকটা ২০ লাখ ছাড়িয়ে যায়।

তাই ভেতরের খবর, তাদেরকে এত টাকা মূল্যে কোচ হিসেবে দলে টানতে এখন পর্যন্ত আগ্রহ দেখায়নি কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি। সত্যিই কি সুজন ও সালাউদ্দীন কোন দলের সাথে কথাবার্তা চূড়ান্ত করেননি, তাদেরকে এখন পর্যন্ত কোন দল কোচ হিসেবে নেয়নি?

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে যোগাযোগ করা হলে খালেদ মাহমুদ সুজন সেভাবে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি। শুধু জানিয়েছেন, আমার সাথে এখন পর্যন্ত কোন দলের মালিকপক্ষ সেভাবে কথা বলেনি। কোচিং করানোর অফারটা সেভাবে আসেনি। কেন আসেনি? তার উত্তর সরাসরি দেননি সুজন।

তবে মোহাম্মদ সালাউদ্দীন সরাসরি জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক কারণেই তিনি এখনও পর্যন্ত কোন দলের সাথে কথাবার্তা বলেননি। বলার অপেক্ষা রাখে না, বিপিএলে সালাউদ্দীনের ফিক্সড দল হলো কুমিল্লা ভিক্টেরিয়ান্স। এবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সত্তাধিকারী নাফিসা কামালের সাথে তার সম্পর্কটাও অনেক ভাল। উভয় পক্ষের বনিবনাও ছিল চমৎকার।

এবার যেহেতু নাফিসা কামাল নেই এবং তার দল কুমিল্লাও নেই, তাই কেউ কেউ মনে করতে পারেন, সে কারণেই বুঝি সালাউদ্দীন এবার কোচিং করাবেন না। আসলে তা নয়। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে সালাউদ্দীন পরিষ্কার জানিয়েছেন, পারিশ্রমিকের অংকটা বেশি থাকা এবার কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি তাকে কোচ হিসেবে নেয়নি বা নেয়ার ইচ্ছে পোষণ করেনি।

সালাউদ্দীন জানান, কোচ হিসেবে পেতে আমার পার্সোনাল ম্যানেজারের কাছে বেশ কয়েকটি দল যোগাযোগ করেছিল। জানতে চেয়েছিল, আমি বিপিএলে কোচিং করিয়ে কত পাই? টাকার অংকটা শোনার পর, আর কোন দল এগিয়ে আসেনি।

এদিকে সোহেল ইসলামের ব্যাপারটা অবশ্য তেমন নয়। তিনি বেঙ্গল টাইগারের অফিসিয়াল হেড কোচ এবং বিসিবি এরই মধ্যে বেঙ্গল টাইগার্সের হেড কোচ হিসেবে তার বেতন বাড়িয়ে দিয়েছে।

কাজেই তাকে আবার বিপিএলে কোচিং করানোর অনুমতি দেয়া হবে কি না- তা নিয়েই বিসিবির ভেতরে আছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। জাগো নিউজের সাথে আলাপেও সোহেল এমনটাই জানিয়েছেন। তার কথা, ‘অফিস (বিসিবি) আমাকে অনুমতি না দিলে বিপিএলে কোচিং করাতে পারবো না। আমি বোর্ডের অনুমতির দিকে তাকিয়ে আছি।’

জানা গেছে, বিসিবি বেঙ্গল টাইগার্সের হেড কোচ হিসেবে সোহেল ইসলামকে বেছে নেয়ার সময় কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে। তার একটি হলো, ‘বিপিএল কিংবা প্রিমিয়ার লিগ- এর যে কোনো একটিতে কোচিং করানো যাবে।’

বলার অপেক্ষা রাখে না, সোহেল ইসলাম বিপিএলে রংপুর আর প্রিমিয়ার লিগে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে কোচিং করান। এবার তিনি রংপুরের কোচ হিসেবে থাকার সম্ভাবনা খুব কম। রংপুর ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকেই মিলেছে এমন খবর। কাজেই শেষ পর্যন্ত সুজন, সালাউদ্দীন ও সোহেল ইসলামকে হয়ত এবারের বিপিএলে আর কোচ হিসেবে দেখা যাবে না।

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।