যে কারণে পাপনের পর বিসিবি সভাপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ফারুক আহমেদ

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:০১ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০২৪

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বোর্ডের পরিচালক পদ ধরে রাখবেন তিনি। কিন্তু এই বোর্ড টিকবে কিনা, সেটি নির্ভর করছে বাকি পরিচালকদের ওপর। পাপন একা পরিচালক পদ ধরে রাখলেও পরিচালক পর্ষদের বাকি সবাই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে বোর্ড আপনা-আপনিই ভেঙে যাবে।

আইসিসির নিয়ম-নীতি ও বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বোর্ড ভেঙে হুট করে নতুন বা অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন সম্ভব নয়। পুরো বোর্ড তখনই ভেঙে যাবে, যখন এই পরিচালক পর্ষদের সবাই একযোগে পদত্যাগ করবেন।

ক্রিকেট পাড়ায় জোর গুঞ্জন, প্রয়াত পরিচালক আলমগীর আলো ছাড়া ২৪ সদস্যর পরিচালক পর্ষদের সবাই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে বোর্ড ভেঙে যাবে। তখন অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করা সম্ভব হবে। কিন্তু যদি অন্তত ৯ জন পরিচালক থাকেন, মানে বাকি ১৫ জন পদত্যাগ করলেও বোর্ড ভাঙবে না। কারণ, তখন কোরাম থাকবে। কাজেই শেষ কথা হলো, সব পরিচালক স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা ছাড়া নতুন বোর্ড গঠনের সুযোগ নেই।

একই ভাবে পাপন সভাপতি পদ ছাড়লেও বোর্ডের পরিচালক পর্ষদের বাইরে কাউকে নতুন সভাপতি নিয়োগ দেওয়ার বিধানও নেই। এখন পাপন পদত্যাগ করলে বর্তমান পরিচালক পর্ষদের সহ-সভাপতি তৈরি করে তাদের মধ্য থেকে একজনকে ভোটের মাধ্যমে বোর্ডপ্রধান করা যাবে।

তবে সহ-সভাপতি বর্তমান পরিচালক পর্ষদের বাইরে থেকেও করা সম্ভব। সেটা কিভাবে?

উপায়টি হলো, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিসিবির যে ১৭০+ কাউন্সিলর আছেন, তাদের মধ্য থেকে ক্লাব কিংবা এনএসসি কোটায় একজন অথবা কয়েকজনকে বোর্ডে আনা সম্ভব।

ঢাকার ক্লাব কোটায় থাকা আহমেদ নজিব, মঞ্জুর কাদের, ওবায়েদ নিজাম ও গোলাম মর্তুজা পাপ্পা এবং এনএসসির কোটায় নির্বাচন ছাড়া সরাসরি বোর্ড পরিচালক হওয়া জালাল ইউনূস আর আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববির জায়গায় নতুন কাউন্সিলর নিয়োগ করার নিয়ম আছে। সেক্ষেত্রে তাদের সবাইকে পদত্যাগ করতে হবে।

চার ক্লাব কর্তার জায়গায় তাদের নিজ নিজ ক্লাব কাউন্সিলরশিপ পাল্টাতে পারে। ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব এই কয়েক মাস আগে কাউন্সিলর বদল করে মিজানুর রহমানের জায়গায় আমিন খানকে কাউন্সিলর পদে মনোনীত করেছে। তা বিসিবির নিয়ম ও গঠনতন্ত্র মোতাবেক হয়েছে বিধায় তা বোর্ডে অনুমোদনও পেয়েছে।

একই ভাবে ক্লাব কোটায় কাউন্সিলরশিপ পাল্টে নতুন কাউকে কাউন্সিলরশিপ দিলে আপনা আপনি মঞ্জুর কাদের, আহমেদ নজিব, গোলাম মর্তুজা পাপ্পা ও ওবায়েদ নজিবের কাউন্সিলরশিপ বাতিল হয়ে যাবে।

কাউন্সিলরশিপ না থাকলে তখন তাদের পক্ষে আর বোর্ডেও থাকা সম্ভব হবে না। একইভাবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে সরাসরি বোর্ড পরিচালক হওয়াদের সরিয়ে কাউন্সিলরদের মধ্যে কাউকে বোর্ড পরিচালক করার নিয়ম-নীতি আছে গঠনতন্ত্রে। সেই নিয়মে নির্বাচন না করে সরাসরি বোর্ড পরিচালক হয়েছিলেন জালাল ইউনুস ও আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি।

এখন তাদের জায়গায় ক্রীড়া পরিষদ নতুন করে ২ জনকে বোর্ড পরিচালক নিয়োগ দিতে পারবে। তবে যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক ক্রীড়া পরিষদের পক্ষ থেকে, তাকে এবং তাদেরকে অবশ্যই বিসিবির কাউন্সিলর হতে হবে।

সেই জায়গায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ। যিনি জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ক্যাটাগরিতে বিসিবির কাউন্সিলর। কাজেই পাপন সভাপতি পদ ছাড়লে ফারুক আহমেদকে ক্রীড়া পরিষদ থেকে সরাসরি বোর্ড পরিচালক করে প্রথমে সহ-সভাপতি নিয়োগ এবং পরে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি করার সুযোগ থাকবে।

কিন্তু পরিচালক পর্ষদের সবাই পদত্যাগ করলে উপরে উল্লেখিত নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করতে হবে না। তখন অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করা হবে। আর এই বোর্ডের একাংশ পদত্যাগ না করে থেকে গেলে গঠনতন্ত্র মেনে ফারুক আহমেদের সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

এআরবি/এমএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।