সাকিবকে এত দীর্ঘ সময় খারাপ খেলতে দেখেননি সুমন

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫৭ এএম, ২৭ জুন ২০২৪

কয়েক ঘণ্ট পরই যে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামবে আফগানিস্তান। অথচ এই আফগানিস্তানকে এক সময় দেখা হলেই নাকানিচুবানি খাওয়াতো বাংলাদেশ। সেটি হোক দ্বিপাক্ষিক সিরিজ কিংবা বিশ্বকাপ।

আর আফগানিস্তানকে পেলেই যেন জ্বলে উঠতেন সাকিব আল হাসান। ২০১৪ সালে আফগানদের বিপক্ষে প্রথম সাক্ষাতে ঢাকার শেরে বাংলায় ৪ ওভারে মাত্র ৮ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। আর ব্যাট হাতে করেছিলেন ১১ বলে ১৯ রানের হার না মানা ইনিংস।

সেটাই শেষ নয়, ২০১৯ সালে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাকিবের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সের কাছেই হেরেছিল আফগানিস্তান। এরপর গত বছর আফগানদের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজেও বাংলাদেশের বিজয়ের রূপকার এবং নায়ক ছিলেন সাকিব।

সেই সাকিব এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একেবারেরই অনুজ্জ্বল। পুরো আসরে নিজেকে খুঁজে পাননি একদম। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচে ৬৪ রান করা ছাড়া বাকি ৬ ম্যাচে সাকিবের সংগ্রহ মাত্র ৪৭ রান। আর উইকেট মোটে ৩টি।

যার ব্যাট ও বল দলের সেরা সম্পদ ও শক্তি; যিনি সবচেয়ে ইমপ্যাক্টফুল পারফর্মার হিসেবে এক যুগের বেশি সময় ধরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, সেই সাকিবের অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্স দেখে হতাশ একনিষ্ঠ ভক্তরাও।

সাকিব ইদানিং ক্রিকেটের পাশাপাশি সামাজিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমেও বেশ জড়িয়ে পড়েছেন। ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি নানাবিধ কর্মকাণ্ডেও সময় দিচ্ছেন। তার মনোযোগের একটা অংশ ক্রিকেটের বাইরে কাজ করছে। এসব সবারই জানা।

মোদ্দা কথা, এখন ক্রিকেটের সঙ্গে সাকিবের বাণ্যিজ্যিক সম্পৃক্ততাও প্রচুর। হতে পারে এটাও খারাপ খেলার একটা কারণ। তার গুরু ও বিকেএসপিতে ছেলেবেলার শিক্ষক নাজমুল আবেদিন ফাহিমও মনে করেন, ক্রিকেটের পাশাপাশি অন্য কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বেড়ে যাওয়ায় পারফরম্যান্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাকিবের। তিনি সাকিবকে আগের মতো শুধু ক্রিকেটে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

তারপরও অনেকের মনে প্রশ্ন, তবে কি সাকিবের ক্যারিয়ারের সূর্য ডুবুডুবু?

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন অবশ্য এমন কিছু ভাবতে নারাজ। সাকিবের বিশ্বকাপে ভালো খেলতে না পারাকে তিনি খুব অস্বাভাবিক ও অসম্ভব ব্যাপার বলে মানতে চাচ্ছেন না।

সুমন বলেন, ‘সাকিব কেন, যেকোনো ক্রিকেটারেরই একটা বিশ্বকাপ খারাপ যেতেই পারে। এই সাকিবই ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচের ৭টিতে ফিফটি হাঁকানোর পাশাপাশি এক জোড়া সেঞ্চুরি করার রেকর্ড করেছিলেন। এবার না হয় তার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা খারাপ কাটলো। বিশ্বের সেরা ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রেও এটি হয়। অস্বাভাবিক কিছু না। সেটির নজিরও আছে। অবশ্য এর মধ্যে সাকিব নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে একটা গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসও খেলেছে।’

তবে একটা ব্যাপার হাবিবুল বাশারকে খুব অবাক করেছে। তিনি বলেন, ‘আমি একটা বিষয় দেখে অবাক হয়েছি যে, সাকিব এত দীর্ঘ সময় খারাপ ফর্মে আছে। যা আগে কখনো দেখিনি।’

পাশাপাশি সুমন আরও একটি কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সত্যি বলতে কি, আমি সাকিবকে এত ফেইল করতে দেখিনি কখনো। একটা দুইটা খারাপ ম্যাচ গেছে। আবার খুব শীঘ্রই সে ফর্মে ফিরে এসেছে।’

হাবিবুল বাশার কিছুতেই মনে করেন না যে, সাকিব ‘অস্তগামী সূর্য’। তার সোজা ব্যাখ্যা, ‘সাকিবের দক্ষতা-সামর্থ্য নিয়ে আমি মোটেই চিন্তিত না। দক্ষতা অনুযায়ী সাকিব নিজের ফর্মে ফিরে আসবে। তার যে অভিজ্ঞতা আর দক্ষতা আছে, তা দিয়ে এখনো রান করতে পারে। কিন্তু সে খেলাটা কতটা উপভোগ করছে সেটার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে।’

সুমনের শেষ কথা হলো, ‘সাকিব এখন যেখানে দাঁড়িয়েছে, তাতে সে নিজে খেলাটাকে কতটা উপভোগ করছে সেটাই দেখার। সে সব সময়ই ভালো খেলোয়াড়। সব সময়ই ইমপ্যাক্টফুল প্লেয়ার। যখন আমরা শেষের দিকে আসি, তখন খেলাটা আমি কতটা উপভোগ করেছি সেটি ভেবেছি। খেলাটা সব সময় চ্যালেঞ্জ। উপভোগ না করলে সে চ্যালেঞ্জে বিজয়ী হওয়া সম্ভব না। সাকিবের ক্ষেত্রে সেটাই বড় প্রশ্ন।’

 

এআরবি/এমএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।