চার বাঁ-হাতি ব্যাটারের অসিদের বিপক্ষে একাদশে শেখ মেহেদি কেন নয়?

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:০৫ পিএম, ২০ জুন ২০২৪

উদ্বোধনী জুটির খুবই করুণ দশা। ইনিংস শুরু হতে না হতেই ভেঙ্গে যাচ্ছেন উদ্বোধনী জুটি। তবে সেই খারাপের রুপটা কত বেশি, আসুন তা জেনে নেই। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ৪ জন ওপেনার মিলে এখন পর্যন্ত প্রথম উইকেটে ১০ রানও তুলে দিতে পারেননি।

শ্রীলঙ্কার সাথে সৌম্য সরকার আর তানজিদ তামিমের উদ্বোধনী জুটি ভেঙ্গেছে মাত্র ১ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে সৌম্যকে বাদ দিয়ে তানজিদ তামিমের সঙ্গে ওপেনার হিসেবে খেলানো হয় লিটন দাসকে। লিটন ও তানজিদ তামিমের জুটিও ভাঙ্গে মোটে ৯ রানে।

নেদারল্যান্ডস ও নেপালের বিপক্ষে শেষ ২ ম্যাচে আবার উদ্বোধনী জুটিতে বদল। এবার তানজিদ তামিমের সাথে ওপেনার হিসেবে যুক্ত হন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তারাও ব্যর্থতার ঘানি টানছেন। নেদারল্যান্ডসের সাথে ৩ আর নেপালের সাথে শূন্য রানে খোয়া গেছে প্রথম উইকেট। সুতরাং, বলাই যায় ওপেনিং সংকটে নিমজ্জিত বাংলাদেশ।

রান যা করার করছেন তাওহিদ হৃদয় (৪ ম্যাচে ৯৫), সাকিব আল হাসান (৪ ম্যাচে ৯২) ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৪ ম্যাচে ৭২)। এর মধ্যে তাওহিদ হৃদয় শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একজোড়া ভাল ইনিংস (৪০ ও ৩৭) উপহার দিলেও নেদারল্যানন্ডস আর নেপালের সাথে শেষ ২ ম্যাচে ফিরে গেছেন ৯ রান করে।

সাকিব আল হাসান শ্রীলঙ্কা (৮), দক্ষিণ আফ্রিকা (৩) আর নেপালের সাথে (১৭) তেমন সুবিধা করতে না পারলেও নেদারল্যান্ডসের সাথে রান করেছেন এবং গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র হাফ সেঞ্চুরি (৬৪) হাঁকিয়েছেন ।

খুব বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটও সাবলীল আছে। ৪ ম্যাচে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলার চেষ্টা ছিল এ অভিজ্ঞ ক্রিকেট যোদ্ধার। তার সংগ্রহ (১৬*, ২০, ২৫ ও ১৩) = ৭২।

কিন্তু এই ৩ জনের সাথে যাকে স্পেশালিস্ট ব্যাটার হিসেবে খেলানো হচ্ছে সেই জাকের আলী অনিকের ব্যাট কিন্তু কথা বলছে না।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজ শহর সিলেটে এক ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তুলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা পান জাকের আলী অনিক। কিন্তু বিশ্বকাপের মাঠে নেমে মোটেও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি।

তাকে নেয়াই হয়েছে হাত খুলে খেলার জন্য; কিন্তু তিনি ৩ ম্যাচে একবারের জন্য একটি বিগ হিট নিতে পারেননি। প্রথম দিন একাদশের বাইরে থাকা জাকের আলীর ৩ ম্যাচে রান মোটে (৮, ১৪*, ১২) ৩৪। সর্বোচ্চ ১৪ নট আউট। তিন ম্যাচে একটি ছক্কাও হাঁকাতে পারেননি এ তরুণ ব্যাটার।

সুপার এইটে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচের আগে প্রশ্ন উঠেছে, জাকের আলী অনিককে খেলানোর যৌক্তিকতা কী? তিনি তিন-তিনবার সুযোগ পেয়ে একটি ঝোড়ো ইনিংসও উপহার দিতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে তাই জাকের আলী অনিকের পরিবর্তে শেখ মেহদিকে খেলানোর প্রস্তাব উঠেছে।

অনেকের মত, শেষ দিকে জাকের আলী যেমন হাত খুলে খেলেন, শেখ মেহেদিও তেমন খেলতে পারেন। জাকের আলী উইকেটরক্ষক। আর শেখ মেহেদি মূলতঃ অফস্পিনার। সে সঙ্গে লেট অর্ডারে ব্যাটিংটাও ভালো পারেন। ফিল্ডার হিসেবেও দক্ষ। তাই তাকে একাদশে অন্তর্ভুক্তর কথা শোনা যাচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিং লাইনআপে ২ ওপেনার ট্রাভিস হেড, ডেভিড ওয়ার্নার আর মিডল অর্ডারে ম্যাক্সওয়েল ও উইকেটরক্ষক ম্যাথ্যু ওয়েড- ৪ জন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটার বাঁ-হাতি। অন্যদিকে বাংলাদেশের হয়ে আগের ৪ ম্যাচ খেলা সাকিব (বা-হাতি) ও রিশাদ (লেগি) দু’জনই বাঁ-হাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলক কম, তাই একজন ডানহাতি অফস্পিনার খেলানোর যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন অনেকে।

যদিও রিয়াদকে ব্যবহার করা হচ্ছে। অধিনায়ক শান্ত প্রতিপক্ষের কোনো বাঁ-হাতি ব্যাটার মাথাচাড়া দিলে তাকে আটকাতে অফস্পিনার রিয়াদকে ব্যবহার করেছেন। রিয়াদ দীর্ঘ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সফলও হয়েছেন। তাই হয়ত শেখ মেহেদির সুযোগ মিলছে না; কিন্তু জাকের আলী অনিকের ব্যাট হাতে অনুজ্জ্বল ও অকার্যকর রূপ বিকল্প চিন্তার খোরাক।

বিকল্প হিসেবে শেখ মেহেদির চেয়ে বেটার কোন অপশনও নেই। তাই আগামীকাল শুক্রবার ভোরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যদি জাকের আলীর বদলে শেখ মেহদিকে খেলতে দেখা যায়, তাতে অবাক হবার কিছুই থাকবে না।

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।