নিউইয়র্কে টসই গড়ে দিতে পারে ম্যাচের ভাগ্য

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:১৭ পিএম, ১০ জুন ২০২৪

নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের ‘ড্রপ ইন পিচ’ এবার শুরু থেকেই ফাস্ট বোলারদের পক্ষে। সবচেয়ে বড় খবর হলো বাংলাদেশের আজ সোমবারের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা এই মাঠেই আগের ২ ম্যাচ জিতে নিয়েছে।

নাসাউতে এরইমধ্যে শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েছে প্রোটিয়ারা। দুই ম্যাচেই পেসারদের দাপটে যথাক্রমে লঙ্কানদের ৭৭ ও ডাচদের ১০৩ রানে বেঁধে সহজেই ৬ উইকেট ও ৪ উইকেটের ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে এইডেন মারক্রামের প্রোটিয়া বাহিনী।

দুই ম্যাচেই একজন করে প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার ৪ উইকেট করে পতন ঘটিয়েছেন। ফাস্ট বোলার অ্যানরিক নরকিয়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেট দখল করেন মাত্র ৭ রান খরচায়। আর ডাচদের বিপক্ষে প্রোটিয়া দ্রুত গতির বোলার ওটনিয়েল বার্টম্যানও (৪/১১) বিধ্বংসী বোলিং করেন।

এছাড়া অপর প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার কাগিসো রাবাদা, মার্কো ইয়ানসেনও বারুদে বোলিং করে যাচ্ছেন। এই মাঠেই গতকাল ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচে ১১৯ রানে অলআউট হয়েছিলো ভারত। জবাবে পাকিস্তান করতে পেরেছে ১১৩ রান।

যেহেতু নিউইয়র্কের এই নাসাউ স্টেডিয়ামে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে কোন দলই লড়াকু পুঁজি গড়তে পারেনি, উল্টো মুখ থুবড়ে পড়েছে, তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই আজ সোমবার বাংলাদেশের সাথে একই মাঠে একই সময়ে টস জিতে আগে বোলিং করতে চাইবে প্রোটিয়ারা।

Bd team

কাজেই বাংলাদেশের ভক্ত ও সমর্থক সবার আন্তরিক চাওয়া টস ভাগ্য যন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেনের শান্তর সাথে থাকে। তিনি যেন টস জেতেন। মুদ্রা ভাগ্যে জিততে না পারলে নিউইয়র্কের ড্রপ ইন পিচের বাড়তি গতি, বাউন্স ও সুইংয়ে বিপর্যয় ঘটতে পারে শান্ত বাহিনীর।

এতকাল জানা ছিল, ড্রপ ইন পিচ মূলত স্লথ ও মন্থর গতির খানিক নির্জিব পিচ হয়; কিন্তু নাসাউ স্টেডিয়ামের এই ড্রপ ইন পিচের আচরণ অনেকটাই ভিন্ন। খানিক পাগলাটে। ড্রপইন পিচ মানেই মাটির উইকেটের মাটিরই একটি স্ল্যাব ভিন্ন জায়গায় তৈরি করে একদম ওপরের স্তরে বসানো উইকেট।

তাতে করে ড্রপ ইন পিচের ওপরের স্তরের সাথে মূল স্তরের একটা সূক্ষ্ম ফারাক থাকে। এ কারণেই উইকেটের গতি কমে যায়। কিন্তু নিউইয়র্কের নাসাউ স্টেডিয়ামের উইকেটের গতি কম নয়। অনেক বেশি। অনেক আনইভেন বাউন্স আছে, যা পেস বোলারদের জন্য অনেক কার্যকরি। তাই এ পিচ এখন পেসারদের অনুকুল ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

পরিসংখ্যান জানিয়ে দিয়েছে, এই মাঠে এখনও পর্যন্ত যারা আগে ব্যাট করেছে তাদের কেউই ভালো করতে পারেনি। আজ সোমবার এই পিচে দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে কী করবে বাংলাদেশের ব্যাটাররা?

এমনিতেই সৌম্য, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্তরা অফ ফর্মে। সাকিবের ব্যাটও সেভাবে জ্বলে উঠছে না। তাওহিদ হৃদয় আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকেই শুধু রান আসছে। শ্রীলঙ্কার সাথে ১২৫ করতেই নাভিশ্বাস উঠেছে। হৃদয় ২০০ স্ট্রাইকরেটে ৪০ আর রিয়াদ শেষ দিকে একদিক আগলে না রাখলে জেতা কঠিন ছিল। এমন এক ভাঙ্গাচোরা, দূর্বল ও জীর্ন ব্যাটিং নিয়ে প্রোটিয়া পেসারদের সামনে দাঁড়ানো সহজ হবে না।

তাই আজকের ম্যাচ নিয়ে প্রথম চাওয়াই থাকবে, সৃষ্টিকর্তা যেনো টস ভাগ্যটা টাইগারদের উপহার দেন। অন্যথায় আগে ব্যাট করতে হলে দক্ষিণ আফ্রিকার এই পেস বোলিংয়ের সামনে বাংলাদেশি ব্যাটারদের দাঁড়ানো হবে খুব কঠিন। মোট কথা ব্যাটিং ভাল করতেই হবে। তার বিকল্প নেই।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লিটন দাস, তাহিদ হৃদয় আর রিয়াদ- মাত্র ৩ জন রান করেছেন। আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাত্র এই ৩ জনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। পুরো ব্যাটিং ডিপার্টমেন্টের ভাল খেলতেই হবে। এছাড়া টস জিততে পারলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আগে ব্যাটিংয়ে নামাতে পারলেও একটা সম্ভাবনা থাকবে।

Shariful

নাসাউয়ের পিচে তাসকিন, মোস্তাফিজ ও তানজিম সাকিব (শরিফুল হয়তা আও খেলা হবে না) প্রথম বল করতে পারলে দক্ষিণ আফ্রিকার টপঅর্ডারকেও একটা কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দেয়ার সামর্থ্য রাখেন। এই ম্যাচে শরিফুলকে পেলে খুব ভাল হতো। মোস্তাফিজ, তাসকিন ও শরিফুলকে নিয়ে সাজানো বাংলাদেশের পেস বোলিং লাইনআপ পুরোপুরি বিশ্বমানের না হলেও পেস বোলিং সহায়ক পিচে যেকোন দলের ব্যাটিং লাইনআপের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারেন।

শরিফুলের অনুপস্থিতির পরও টাইগারদের পেস বোলিংটা মন্দ নয়। টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠাতে পারলে এই ম্যাচে বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছুর সম্ভাবনা থাকবে। কিন্তু শেষ কথা একটাই; ব্যাটারদের রান করতে হবে। ছোট কিংবা বড়; টার্গেট যাই হোক না কেন, ব্যাটারদের রান করতেই হবে। বোলাররা প্রতিপক্ষকে কম রানে আটকে নিজেদের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসলেও ম্যাচ জিততে ব্যাটারদের সময়মত জ্বলে উঠতেই হবে।

নিজেদের হারিয়ে খোঁজা শান্ত, লিটন, সৌম্য আর সাকিবরা কি তা পারবেন?

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।