অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবিশ্বাস্য টেস্ট জয়
জস হ্যাজলউডের স্ট্যাম্পটা উড়িয়ে দিয়েই বাঁধনহার এক দৌড়। পেছন পেছন দৌড়াচ্ছেন তার সতীর্থরা। কেউ তার নাগালই যেন পাচ্ছিলেন না। সামার জোসেফ। মাত্র ১১দিন আগে অ্যাডিলেডেই যে পেসারের অভিষেক হয়েছিলো। তার আগুনে বোলিংয়েই পুড়ে ছারখার হয়ে গেলো অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপ।
ব্রিসবেন টেস্টে জয়ের জন্য ২১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সামার জোসেফের ৬৮ রানে ৭ উইকেটের ওপর ভর করে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে ৮ রানের ব্যবধানে অবিশ্বাস্যভাবে হারিয়ে দিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০৭ রানে অলআউট হয়ে যায় অসিরা। ৭ উইকেটের মধ্যে চারজনকেই বোল্ড করেন জোসেফ।
গ্যাবার গ্যালারিতে যে ক’জন দর্শক উপস্থিত ছিলেন, সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানালেন ক্যারিবীয় তরুণ পেসার সামার জোসেফকে। ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের নেতৃত্বাধীন পুরোপুরি আনকোরা এবং তরুণ একটি দল বিশ্বের নাম্বার ওয়ান, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী অস্ট্রেলিয়াকে তাদেরই মাটিতে এভাবে হারিয়ে দিতে পারবে, তা অকল্পনীয়, অবিশ্বাস্য।
যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে পর্যন্ত খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি, তারা অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকেই হারিয়ে দিলো! তা শুধু এক তরুণ পেসারের সৌজন্যে। ক্রিকেট ইতিহাসে নামটা লিখে রাখার জন্যই হয়তো আবির্ভাব হয়েছে তার। দীর্ঘদিন ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে রাখতে হবে এই নামটা- সামার জোসেফ।
২১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে একা স্টিভেন স্মিথই শুধু একপ্রান্ত আগলে দাঁড়িয়েছিলেন। ইনিংস ওপেন করতে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিতই ছিলেন তিনি, ৯১ রানে। অন্যপ্রান্তে একের পর এক স্বাগতিকদের উইকেট তুলে নিয়েছে ক্যারিবীয়রা। ১১.৫ ওভার বল করে ৭ উইকেট নেন জোসেফ। ২টি নিলেন অ্যালজারি জোসেফ এবং ১টি নিলেন কেমার রোচ।
২১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষ বিকেলেই ২টি উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলো অস্ট্রেলিয়া। ৪২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ৬০ রানে দিন শেষ করে তারা। স্মিথ ৩৩ এবং ক্যামেরন গ্রিন ছিলেন ৯ রানে।
চতুর্থ দিন সকালে গ্রিন এবং স্মিথ মিলে ৭৩ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন। গ্রিন আউট হন ৪২ রান করে। ৭৩ বল খেলে এই রান করেন তিনি। মিচেল মার্শ ১০ এবং মিচেল স্টার্ক ২১ রান করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩১১ ও ১৯৩ (ম্যাকেনজি ৪১, অ্যাথানাজে ৩৫, গ্রিভস ৩৩; নাথান লিওন ৩/৪২, জস হ্যাজলউড ৩/)
অস্ট্রেলিয়া: ২৮৯/৯ ডি. ও ২০৭/১০ (স্মিথ ৯১, ক্যামেরন গ্রিন ৪২; শামার জোসেফ ৭/৬৮, অ্যালজারি জোসেফ ২/৬২)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: শামার জোসেফ।
আইএইচএস/