আশরাফুল মনে করেন
মিরাজকে না খেলিয়ে ভুল করেছে বাংলাদেশ
হেড কোচ হাথুরুসিংহের দাবি, ‘এবারের নিউজিল্যান্ড মিশন সফল।’ পাশাপাশি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ টাইগার হেড কোচ। শান্তর প্রশংসা করতে গিয়ে হাথুরু বলেছেন, ‘শান্ত নেতৃত্বে ছিল অসাধারণ। সে টেকটিক্যালি স্পট অন ছিল।’
কিন্তু বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল পুরোপুরি একমত নন। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সব সময়ের সবচেয়ে মেধাবী ও প্রতিভাবান ব্যাটার এবং সময়ের অন্যতম সেরা বিশেষজ্ঞ আশরাফুল মনে করেন, টিম ম্যানেজমেন্ট এবং অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কিছু ভুল ছিল।
আশরাফুলের ধারণা, টিম ম্যানেজমেন্ট আর ক্যাপ্টেন শান্তর অদূরদর্শিতায় টি-টোয়েন্টি সিরিজ হাতছাড়া হয়েছে। না হয় বাংলাদেশ আজকের ম্যাচের পাশাপাশি সিরিজ জিততো।
সেটা কীভাবে? কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আশরাফুল পরিষ্কার বলে ওঠেন, ‘প্রথম ম্যাচের পর মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়ে চিন্তা করলে ভালো হতো। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভাইস ক্যাপ্টেনকে বিশ্রাম দিয়ে দল সাজানো হলেও পরের দুই ম্যাচে তাকে খেলানো উচিত ছিল। আমার বিশ্বাস আজকে মিরাজ খেললে বাংলাদেশ জিতে যেত। মিরাজ এ বছর টি-টোয়েন্টিতে খারাপ করেনি। দেশের মাটিতে সব কটা টি-টোয়েন্টি সিরিজে ব্যাট ও বল হাতে মিরাজের পারফরমেন্স ভালো ছিল। আফিফ যেমন তেমন, শামীম পটোয়ারীর জায়গায় মিরাজকে বিবেচনা করলে দল লাভবান হতো।’
আশরাফুল মনে করেন, মিরাজকে ছাড়া প্রথম ম্যাচ জেতার পর বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্ট আর পেছনে ফিরে তাকায়নি। পরের ২ ম্যাচে মিরাজের দরকার আছে কি নেই, সে চিন্তাই কারো মাথায় আসেনি।
তাই আশরাফুলের এমন কথা, ‘নিউজিল্যান্ডের টিম দেখার পর আমার মনে হয়েছে মিরাজকে খেলানো উচিত ছিল। পরের দুই ম্যাচে মিরাজের একাদশে আসা উচিত ছিল।’
সেটা কেন? ‘এই কারণে যে, নিউজিল্যান্ডের যে দলটি আমাদের সাথে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচ খেলেছে, সেই দলে বেশ কজন বাঁহাতি ব্যাটার ছিলেন। নাম্বার ৫ , ৬ আর ৭ নম্বরে তিনজনই বাঁহাতি ব্যাটার। সেখানে একজন অফস্পিনার থাকলে অবশ্যই ভালো হতো।’
আশরাফুল যোগ করেন, ‘শেখ মেহেদীকে আমরা নতুন বলে বল করিয়েছি। সে নতুন বলে অসাধারণ করছে। সফলও হয়েছে। কিন্তু মাঝখানে বিশেষ করে ১০ ওভারের পর থেকে কিউই মিডিল ও লেট অর্ডারের ওই ৩ বাঁহাতি যখন ব্যাটিংয়ে আসবেন, তখন যে একজন বাড়তি অফস্পিনার থাকলে ভালো হবে, সে চিন্তা ছিলনা। অথচ ওই জায়গায় মিরাজ হতে পারতো বেস্ট অপশন। দল উপকৃত হতো। টিম ম্যানেজমেন্ট কেন এ চিন্তা করেনি, আমার তা বোধোগম্য হয়নি।’
‘দেখেন আজ দুই কিউই বাঁহাতি লেট অর্ডার নিশাম আর স্যান্টনার যখন ব্যাট করেছেন, তখন অধিনায়ক শান্ত তার অফস্পিন দিয়ে ১০ নম্বর ওভারে বল করতে এসে বুঝিয়ে দেন, এ সময় একজন অফস্পিনারের দরকার ছিল। কিন্তু তার সাদামাটা স্পিন দিয়ে কাজ হয়নি। উল্টো শান্ত ১৪ রান দিয়ে সর্বনাশ ডেকে আনেন। তার আগে কিউইরা কিন্তু ওভারপিছু রান তোলায় এবং ডিএল ম্যাথডে আমাদের চেয়ে পিছিয়ে ছিল। ওই জায়গায় গেম চেঞ্জ হয়ে গেছে। যদিও কেউ কেউ হয়ত বলবেন, ১১০ করে কী আর জেতা সম্ভব! আমি তা মনে করি না। ভুলে গেলে চলবে না কিউইদের ৪৯ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিল।’
আশরাফুলের উপলব্ধি, ‘প্রথম থেকে অনেকটা সময় কিউইরা ডিএল ম্যাথডে পেছনে ছিল। যেখানে দুপুরের পরে বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল, তা জানার পর ফ্রন্টলাইন বোলারদের আগে করিয়ে ফেললে মনে হয় ভালো হতো। শান্ত ব্রিলিয়ান্ট ক্যাপ্টেন্সি করেছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় ঘাটতি চোখে পড়েছে। অবশ্য যত বেশি ম্যাচ অধিনায়কত্ব করবে, ততই শিখবে। যেমন ২০ ওভারের চিন্তা না করে ১৫-১৬ ওভারের খেলা হবে চিন্তা করলে ভালো হতো। তখন জেনুইন বোলারদের বোলিং শেষ করে দেওয়া যেত। তাতে লাভ হতো। তখন হয়ত ডিএল ম্যাথডে কিউইরা এগিয়ে যেতে নাও পারতো।’
এমএমআর/এমএস