ছোট পুঁজি নিয়েই অস্ট্রেলিয়াকে চেপে ধরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা
লক্ষ্য ছোট, ২১৩ রানের। ৬ ওভারেই অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার আর ট্রাভিস হেড তুলে দেন ৬০ রান। এরপর আর ফিরে তাকানোর কথা না অসিদের। তবে সেই জায়গা থেকে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরেছে প্রোটিয়ারা।
১৮ বলে ২৯ করে মার্করামের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ওয়ার্নার। পরের ওভারে মিচেল মার্শকে (০) তুলে নেন কাগিসো রাবাদা। ট্রাভিস হেড তবু মারমুখী খেলেছেন। ৪০ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন অসি ওপেনার।
৪৮ বলে ৯ চার আর ২ ছক্কায় ৬২ রান করে হেড বোল্ড হন কেশভ মহারাজের বলে। এরপরই অসিদের চেপে ধরে দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই স্পিনার মহারাজ আর তাবরেজ শামসি এতটাই টার্ন করাচ্ছিলেন বল, স্টিভেন স্মিথ আর মার্নাস লাবুশেনের রান তুলতে রীতিমত ঘাম ঝরছিল।
৪৬ বল খেলে তারা দুজন যোগ করেন ২৭ রান। এর মধ্যে বারকয়েক ক্যাচও ফেলেছে প্রোটিয়ারা। অবশেষে লাবুশেনকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন শামসি।
৩১ বল খেলে ১৮ রান করে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে আম্পায়ার্স কলে ফেরেন লাবুশেন। ম্যাক্সওয়েলও ১ রান করে হন শামসির বলে বোল্ড। ১৩৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছে অসিরা।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৪.২ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৪১ রান। স্টিভেন স্মিথ ১৭ আর জস ইংলিশ ২ রানে অপরাজিত আছেন।
এর আগে ২৪ রানে ছিল না ৪ উইকেট। অসি বোলারদের তোপে ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেছেন ডেভিড মিলার।
তবে তার লড়াকু সেঞ্চুরির পরও পুঁজিটা বড় হয়নি প্রোটিয়াদের। ৪৯.৪ ওভারে ২১২ রানেই থেমে গেছে টেম্বা বাভুমার দল।
ইডেন গার্ডেনে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। পুরো টুর্নামেন্টে টস জয় মানেই দক্ষিণ আফ্রিকার রান উৎসব। এবারও তেমনটা হবে, ভাবছিলেন সবাই। তবে ঘটেছে তার উল্টো।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে শুরু থেকেই চেপে ধরেন অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। একদিকে তারা যেমন উইকেট তুলে নিয়েছেন, অন্যদিকে রানও আটকে রেখেছেন। ফলে শুরুতেই কোণঠাসা হয়ে পড়ে প্রোটিয়ারা।
২৪ রানের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন চার টপঅর্ডার ব্যাটার-টেম্বা বাভুমা (০), কুইন্টন ডি কক (৩), এইডেন মার্করাম (১০) আর রসি ফন ডার ডুসেন (৬)।
প্রথম ওভারের শেষ বলেই মিচেল স্টার্ক ফিরিয়ে দেন টেম্বা বাভুমাকে। উইকেটের পেছনে জস ইংলিশের হাতে ক্যাচ দেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। ৪ বলে কোনো রানই করতে পারেননি তিনি।
৬ষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে আউট হন কুইন্টন ডি কক। জস হ্যাজলউডের বলে প্যাট কামিন্সের হাতে ক্যাচ দেন ডি কক। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলে আসা ডি কক একেবারে জায়গামত এসে ব্যর্থ হন। দলীয় রান ছিল তখন ৮ রান।
দলীয় ২২ রানের মাথায় ফিরে যান এইডেন মার্করাম। ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে আউট হন তিনি। ১০ রান করে তিনি আউট হন হ্যাজলউডের বলে। ২৪ রানের মাথায় আউট হন রসি ফন ডার ডুসেন। তিনি করেন ৬ রান।
দলের সেই কঠিন বিপর্যয়ের মুখে হেনরিখ ক্লাসেনকে নিয়ে হাল ধরেন ডেভিড মিলার। পঞ্চম উইকেটে তারা ৯৫ রানের জুটি। ক্লাসেন হাফসেঞ্চুরির দোরগোড়ায় ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকাও অনেকট ঘুরে দাঁড়িয়েছিল।
৩১তম ওভারে এসে টানা দুই বলে দুই উইকেট শিকার করেন পার্টটাইম অফস্পিনার ট্রাভিস হেড। ক্লাসেন ৪৭ রানে বোল্ড আর মার্কো জানসেন এলবিডব্লিউ হন প্রথম বলেই।
১১৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দেড়শোর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ডেভিড মিলার একটা প্রান্ত ধরে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। ১১৫ বল খেলে লড়াকু এক সেঞ্চুরিও তুলে নেন।
তবে দলের রানকে একটু ভালো জায়গায় নিতে গিয়ে সেঞ্চুরির পরই ছক্কা হাঁকাতে যান মিলার। কিন্তু বল সীমানার বাইরে পাঠাতে পারেননি। প্যাট কামিন্সকে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে হয়ে যান ক্যাচ। ১১৬ বলে ১০১ রানের ইনিংসে ৮টি চার আর ৫টি ছক্কা হাঁকান মিলার।
মিলার আউট হওয়ার পরই আসলে দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াকু পুঁজি গড়ার স্বপ্নটা শেষ হয়ে যায়। ইনিংসের ২ বল বাকি থাকতে ২১২ রানে অলআউট হয় প্রোটিয়ারা।
অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক আর প্যাট কামিন্স নেন তিনটি করে উইকেট। দুটি করে উইকেট শিকার জস হ্যাজেলউড আর ট্রাভিস হেডের।
এমএমআর/এমএস