রানরেটের হিসাবই জানতো না আফগানিস্তান!
এশিয়া কাপের মত একটি টুর্নামেন্ট। তার ওপর ম্যাচটা শুরুর আগে থেকেই শুরু হয়েছিলো নানা হিসাব-নিকাশ। কত ওভারে কত রান করলে, কত ওভারের মধ্যে রান তাড়া করতে পারলে কে যাবে সুপার ফোরে- এসব হিসাব-নিকাশ ম্যাচ শুরুর আগেই করে ফেলা শেষ। একেবারে বল টু বল হিসাব লেখা হয়ে গিয়েছিলো।
সে জায়গায় শ্রীলঙ্কা ২৯১ রান করার পর আফগানদের কত ওভারের মধ্যে জিততে হবে, শেষ মুহূর্তে কত বলে কত রান করলে সুপার ফোরে যাওয়া সম্ভব হবে- সে হিসাবও নিশ্চিত করে ফেলা হয়েছিলো।
কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, আফগানিস্তান ক্রিকেট দল নাকি সেই হিসাবই করে রাখেনি, কিংবা তাদেরকে কেউ বলেওনি যে, ৩৭.১ ওভারের মধ্যে ২৯২ রান করে জিততে হবে, কিংবা ৩৭.৪ ওভারের মধ্যে ২৯৫ রান করতে হবে। যে কারণে তারা নাকি ছিল এ বিষয়ে পুরোপুরি অজ্ঞ। আর এই অজ্ঞতার কারণেই শেষ মুহূর্তে তীরে এসে তরি ডুবলো তাদের!
আফগানিস্তান অধিনায়ক, সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার জোনাথন ট্রট ম্যাচ শেষে এই স্বীকারোক্তিই দিয়ে গেছেন। সুপার ফোরে ওঠার জন্য যে একটা সুক্ষ ক্যালকুলেশন ছিল, সেটাই তাদের জানা ছিল না। যে কারণে শেষের তিন বলে সুযোগ থাকলেও, না জানার কারণে সেই সুযোগ আর নিতে পারেননি তারা।
শ্রীলঙ্কার করা ২৯১ রান তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তান জেনেছিলো, এশিয়া কাপের সুপার ফোরে উঠতে হলে তাদেরকে এই রান টপকাতে হবে ৩৭.১ ওভারে। তাহলেই শ্রীলংকাকে নেট রান রেটে টপকে সুপার ফোরে চলে যেতেন আফগানরা।
কিন্তু লড়াই করেও পারলেন না তারা। ৩৭.১ ওভারের পর তাদের রান দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ২৮৯। এরপরও সুপার ফোরে যেতে পারতেন তারা। ৩৭.৪ ওভারে ২৯৫ রান তুলতে পারলেও সুপার ফোরে চলে যেত আফগানিস্তান।
কিন্তু সে চেষ্টাটাই করলেন না রশিদ খানরা। ৩৭.১ ওভারে ২৯২ রান তুলতে না পারার পরেই হাল ছেড়ে দেন তারা। কারণ, নেট রান রেটের নিয়মই জানতো আফগান ক্রিকেটাররা। মাঠের দুই ব্যাটার তো বটেই, আফগানিস্তানের সাজঘরের কেউও বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামাননি। যে কারণে মাঠে তারা বার্তাও পাঠাতে পারেননি। যে কারণে কেউ বড় শট মেরে চেষ্টাও করেননি ৩৭.৪ ওভারে ২৯৫ রান তোলার।
অথচ উইকেটে ছিলেন রশিদ খানের মতো দক্ষ ক্রিকেটার। আফগান শিবিরের এই অপেশাদারি মানসিকতায় বিস্মিত হয়েছেন ধারাভাষ্যকারেরাও। ম্যাচের সময় তীব্র সমালোচনাও করলেন তারা।
৩৭ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ২৮৯ রান। এক বলে আর তিন রান করতে পারলেই সুপার ফোর নিশ্চিত। উইকেটে ছিলেন মুজিব-উর রহমান। ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে তিনি বাউন্ডারি মারতে ধরা পড়েন লংঅনে। ওই সমই নন স্ট্রাইকে দেখা গেছে রশিদ খান হতাশায় হাঁটু মুড়ে বসে পড়েছেন।
কিন্তু এরপরও যে সুযোগ ছিলো সেটা রশিদরা জানতেন না। ম্যাচ শেষে সেই অবিশ্বাস্য বার্তাটিই দিলেন কোচ জোনাথন ট্রট। ৩৭.১ ওভারে ২৯২ রান রান করতে না পারলেও সুযোগ ছিল আফগানদের সামনে। ৩৭.২ ওভারে ২৯৩, ৩৭.৩ ওভারে ২৯৪, ৩৭.৫ ওভারে ২৯৫, ৩৮ ওভারে ২৯৬ কিংবা, ৩৮.১ ওভারে ২৯৭ রান করতে পারলেও সুপার ফোরে উঠতে পারতো আফগানিস্তান।
অথচ, এই হিসাব-নিকাশটিই কেউ জানতো না আফগান শিবিরে। ম্যাচ শেষে নেট রান রেটের এই বিষয়টা না জানা নিয়ে কোচ জোনাথন ট্রট বলেন, ‘আমরা আসলে এ ধরনের হিসাব-নিকাশ সম্পর্কে একদমই জানতাম না।’
আইএইচএস/