প্রাথমিক দল, স্ট্যান্ডবাই- কোথাও ছিল না, সেই বিজয়ই এখন এশিয়া কাপে
এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গত ৩১ জুলাই শুরু হয়েছিলো ৩২ সদস্যের প্রাথমিক ক্যাম্প। যেখানে ডাক পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকারের মত ক্রিকেটাররাও।
রিয়াদ বেশ কিছুদিন ধরেই দলের বাইরে। ফিটনেস আর ফর্মহীনতাও ভর করেছিলো তার ওপর। সৌম্য সরকার নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটেও পারফরম্যান্স করতে পারছিলেন না। তবুও ‘এ’ দল, এইচপি দলে সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। তবুও তাদেরকে ডাকা হয়েছিলো ৩২ সদস্যের প্রাথমিক দলে।
৩২ সদস্যের এই দলে ঠাঁই মেলেনি এনামুল হক বিজয়ের মত ঘরোয়া ক্রিকেটে রান বন্যা বইয়ে দেয়ার ব্যাটারকে। টানা দুই মৌসুম ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষ রান সংগ্রহকারী বিজয়। ঘরোয়া ক্রিকেটে ৫০ ওভারের ফরম্যাটে বিজয় নিজেকে প্রমাণ করেছেন বারবার। তবুও, তিনি ছিলেন উপেক্ষিত।
৩২ জনের দলকে ছোট করে গত ১২ আগস্ট ঘোষণা করা হলো এশিয়া কাপের ১৭ সদস্যের দল। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে বিজয়ের থাকার কথা নয়। যাকে প্রাথমিক দলে ডেকে ফিটনেসও টেস্ট করা হয়নি, তাকে ১৭ সদস্যের দলে রাখা হবে না- এটা জানা কথাই।
শুধু তাই নয়, ১৭ সদস্যের বাইরে আরও ৮ জনের একটি স্ট্যান্ডবাই প্যানেল করা হয়েছে। যাদেরকে অনুশীলনের মধ্যে রাখা হবে এবং যে কোনো প্রয়োজনে তাদের কাউকে কাউকে দলে অন্তর্ভূক্তও করা হতে পারে। এদের মধ্যে ছিলেন সাইফ হাসান, তাইজুল ইসলাম, জাকির হাসান, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতসহ মোট ৮ জন। কিন্তু সেখানেও উপেক্ষিত এনামুল হক বিজয়।
অর্থ্যাৎ জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেল, জাতীয় দল ম্যানেজমেন্ট কমিটি, কোচ-অধিনায়ক, কারো মাথাতেই ছিল না এনামুল হক বিজয়ের নাম। কেউ চিন্তাই করতে পারেনি, এই উইকেরক্ষক ব্যাটারেরও প্রয়োজন দেখা দিতে পারে।
শেষ পর্যন্ত তাই হলো। তামিম ইকবাল নেই। যে কারণে দলে নেয়া হয়েছে তানজিদ হাসান তামিমকে। ওপেনিংয়ে লিটন দাস তো আছেই। সঙ্গে তানজিদ তামিম কিংবা নাঈম শেখকে দিয়ে ওপেন করানো হবে। কিন্তু তীব্র জ্বরের কারণে শ্রীলঙ্কা যেতে পারেননি লিটন দাস। জ্বর কমলেও তিনি খেলার মত সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি।
এদিকে লিটনের পরিবর্তে যাকে শ্রীলঙ্কা পাঠানোর চিন্তা ছিল, সেই সাইফ হাসানও জ্বরে আক্রান্ত। তিনি তো একটু এগিয়ে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এদিকে দলে প্রয়োজন একজন টপ অর্ডার এবং সঙ্গে তিনি কিপিংও করতে পারবেন। যেটা লিটন দাস করতেন।
বাধ্য হয়ে, পুরোপুরি উপেক্ষিত থাকা, কোথাও কোনো অনুশীলনে পর্যন্ত না ডাকা এমানুল বিজয়ের দ্বারস্থই হতে হলো বিসিবিকে। হুট করেই ডেকে নেয়া হলো ওপেনার বিজয়কে। বিসিবি থেকে আজ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হলো, লিটনের পরিবর্তে বিজয়ই যাচ্ছেন শ্রীলঙ্কায়।
বিসিবির সেই বিজ্ঞপ্তিতে আবার সাফাইও গাইলেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। তাদের নাকি সব সময় বিবেচনায় ছিলেন বিজয়। অথচ, তাকে ৩২ জনের প্রাথমিক তালিকাতেও রাখেননি।
প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘সে (এনামুল বিজয়) ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের মধ্যেই ছিলো। এছাড়া তাকে বাংলাদেশ টাইগার প্রোগ্রামেও খুব কাছ থেকে মনিটর করেছি। যে কারণে, সব সময়ই সে আমাদের বিবেচনায় ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘লিটন দাসের অনুপস্থিতির কারণে আমাদের একজন টপ অর্ডার ব্যাটার প্রয়োজন ছিল, যিনি একই সঙ্গে উইকেটকিপিংও করতে পারবেন। সে কারণেই মূলত এনামুল হক বিজয়কে ডাকা হয়েছে।’
এখন বিজয়ের হাতে দারুণ সুযোগ, ব্যাট হাতে মাঠেই সব উপেক্ষার জবাব দেয়া। ফরম্যাটটাও যে তার নিজের খুব ফেবারিট!
আইএইচএস/