ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ের পেছনে মুশফিকের অবদান দেখছেন শরিফুল
কি আশ্চর্য! ১৭ মাস আগে যে কাজটি করেছিল আফগানরা, এবার সেই কাজ করলো টাইগাররা। প্রায় দেড় বছর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এই আফগানিস্তনকে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্যে শেষ ম্যাচে মাঠে নেমেছিল তামিম ইকবালের দল। আর আফগানিস্তানের সামনে ছিল ‘বাংলাওয়াশ’ থেকে বাঁচার লড়াই।
শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য পূরণ হয়নি টাইগারদের। ৭ উইকেটের জয়ে ধবলধোলাইয়ের লজ্জা নিবারণ করেছিল আফগানরা। কাকতালীয়ভাবে আজ (মঙ্গলবার) সেই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঠিক সেই ব্যবধানে (২-১) হাসমতউল্লাহ শহীদির দলের কাছে হারলো টাইগাররা।
সিরিজ জিততে না পারলেও আজকের জয়ে অন্তত হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাঁচলেন সাকিব-লিটন-মুশফিকরা। এই মিশনে টাইগারদের হিরো ফাস্টবোলার শরিফুল ইসলাম।
এ ২২ বছরের দীর্ঘদেহী পেসার আজ তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং স্পেল (৪/২২) উপহার দিয়ে আফগান ব্যাটিং লাইনআপকে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। তার বারুদমাখা বোলিংয়ে মাত্র ১২৬ রানে শেষ হয়েছে আফগান ইনিংস।
যে আফগান টপঅর্ডার আগের ম্যাচে এবাদত হোসেন, হাসান মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদি মিরাজ আর সাকিব আল হাসানের বোলিং দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছিল, আজ সেই আফগানদের ব্যাটিং মেরুদণ্ড শুরুতেই ভেঙে দেন শরিফুল।
মোস্তাফিজের বদলে সুযোগ পেয়ে শরিফুল নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। হঠাৎ কী এমন হলো যে শরিফুল এমন দুর্বার দুর্মনীয়? দেখে মনে হলো বাড়তি জেদ কাজ করছে ভেতরে। আসলেই কি তাই?
খেলা শেষে শরিফুল নিজেই দিয়েছেন এ প্রশ্নের উত্তর। বলেন, ‘না। জেদ ছিল না। আমি অনুশীলনে যেমন চেষ্টা করছিলাম ম্যাচেও তেমনি চেষ্টা করেছি। বডি ল্যাংগুয়েজটা চলে আসে। ড্রেসিংরুমে গিয়ে ভাবি যে, এমন করা যাবে না। কিন্তু তবুও অটোমেটিক চলে আসে।’
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো চার উইকেট, তাও ১০ ওভারের পুরো কোটা পূর্ণ না করেই। কী মনে হয়, আর এক ওভার করলে ৫ উইকেট পেতে পারতেন?
শরিফুল মনে করেন, পায়ে টান না পড়লে সম্ভাবনা ছিল। তার কথা, ‘চেষ্টা তো ছিল। কিন্তু দেখছিলাম ক্র্যাম্প করছে। আামি যদি জোরে বল করতাম, ইনজুরিতে পড়তে পারতাম। এদিকে লুজ বল হলে বাউন্ডারি হয়ে যেতো। আমি চেষ্টা করেছি।’
শেষ দুই ম্যাচে ভালো হয়নি, পেস বোলিং ইউনিটের জেদ ছিল কি না? এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বাঁহাতি শরিফুল বলে ওঠেন, ‘হ্যাঁ, এখানে অবশ্যই একটা জেদ কাজ করেছে। আমরা মিটিংয়ে আলোচনা করেছি, আমরা যেরকম বোলার ওরকম চেষ্টা করেছি। আমরা যেন নেক্সট ম্যাচগুলোতে আগের মত ফিরে আসতে পারি, ওভাবে চেষ্টা করছি।’
দলের জয়ে বড় ভূমিকা আপনার। অনুভূতি কেমন? শরিফুলের কথা, ‘ভালো লাগছে। কিছু করতে পারলে অবশ্যই সবার ভালো লাগে। আমাকে পুরো দল সাপোর্ট করছে তাই ভালো পারফর্ম্যান্স হয়েছে। বিশেষ করে মুশফিক ভাই। উনি আমাকে বারবারই বলছে ভালো করতে হবে।’
এআরবি/এমএমআর/জিকেএস