ক্রিকেট বদলে দেওয়া তামিমের সেই সব মুহূর্ত

ইমাম হোসাইন সোহেল
ইমাম হোসাইন সোহেল ইমাম হোসাইন সোহেল
প্রকাশিত: ০৯:৩৮ পিএম, ০৬ জুলাই ২০২৩

যে কোনো একটি পারফরম্যান্স কিংবা যে কোনো একটি মুহূর্ত বদলে দিতে পারে অনেক কিছু। কারও শিরোপা জয়, কারও পরাজয় নির্ভর করে সেই ক্ষুদ্র মুহূর্তটির ওপর। ক্রিকেটের গতিপথ পাল্টে দেওয়া অনেকগুলো মুহূর্তও তৈরি করেন ক্রিকেটাররা। এমন ভুরি ভুরি উদাহরণ দেওয়া সম্ভব। বাংলাদেশের ক্রিকেটের গতি পাল্টে দেওয়ার মতো বেশ কিছু মুহূর্ত উপহার দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল খান।

২০০৭ সালে অভিষেক। এরপর ক্রিকেট মাঠে দাপটের সঙ্গে কাটিয়েছেন ১৬টি বছর। হয়তো খেলতে পারবেন আর ২,৩ কিংবা ৫টি বছর। কিন্তু নানা কারণে তাকে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকতে দিলো না। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের অসন্তুষ্টি বলুন কিংবা বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের মিডিয়ার সামনে গিয়ে তামিম সম্পর্কে ক্ষোভ উগরে দেয়া বলুন- যে কারণেই হোক, তামিম ইকবাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে গুডবাই বলে দিয়েছেন, আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই, ২০২৩) দুপুরে।

Tamim

বিশ্বকাপের বাকি আর মাত্র তিন মাস, এশিয়া কাপের বাকি পৌনে দুই মাস। একজন ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে এমন মহাদেশীয় কিংবা বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট খেলেই না হয় কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু তামিম মানসিকভাবে এতটাই আহত হলেন যে, তিনি আর সে পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন না। ক্ষোভে, দুঃখে, অপমানে, অভিমানে বিদায়ের ঘোষণা দিলেন। এ সময় তিনি ছিলেন অশ্রুসজল।

অভিষেকের পর তামিম বাংলাদেশের সেরা ব্যাটারে পরিণত হয়েছেন তার পারফরম্যান্স দিয়ে। একমাত্র ক্রিকেটার, তিন ফরম্যাট মিলিয়ে যার নামের পাশে রয়েছে ১৫ হাজার রান। ওয়ানডেতে ১০ হাজার রান করার যে ইচ্ছা ছিল তার, সেটা আর হলো না।

বাংলাদেশের ক্রিকেটের গতিপথ বদলে দেয়ার মত পারফরম্যান্স তিনি অভিষেকের পরপরই দেখিয়েছেন। তামিমের বিদায়ের দিনে জাগোনিউজের পাঠকদের জন্য তামিমের সে সব মুহূর্তগুলো স্মরণ করার চেষ্টা।

Tamim

ভারতের বিপক্ষে ৫১ রানের টর্নেডো, ২০০৭ বিশ্বকাপ

ত্রিনিদাদের সুন্দর শহর পোর্ট অব স্পেন। এই শহরের আরেক নয়ানাভিরাম স্টেডিয়াম কুইন্স পার্ক ওভাল। ২০০৭ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ। রাহুল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে সৌরভ গাঙ্গুলি, বিরেন্দর শেবাগ, শচিন টেন্ডুলকার, যুবরাজ সিং, মহেন্দ্র সিং ধোনি, হরভজন সিং, অজিত আগারকার, জহির খান কিংবা রবিন উথাপ্পাদের মত ক্রিকেটার।

বাংলাদেশ দলে তখন একঝাঁক তরুণ তারকা। তামিম, মুশফিক, সাকিব, আফতাব- এরা তখন মাত্র ক্রিকেট আঙ্গিনায় নিজেদের পায়ের ছাপ ফেলে চলতে শুরু করেছিলো। এমন ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নামে ভারত। মাশরাফির আগুনে বোলিংয়ের সামনে মাত্র ১৯১ রানে গুটিয়ে গেলো বিশ্বের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের দলটি। ৬৬ রান করলেন সৌরভ গাঙ্গুলি।

Tamim

জবাব দিতে নেমে শাহরিয়ার নাফীস ২ রানে ফিরে গেলেন; কিন্তু ভারতীয়দের জন্য বিস্ময় নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন তিন তরুণ তুর্কি তামিম, মুশফিক এবং সাকিব। শুরুতেই তামিমের ভয়-ডরহীন সেই সব শর্ট- হৃদয়ে ঝঙ্কার তুলেছিলো বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। জহির খান, মুনাফ প্যাটেল, হরভজন সিং কিংবা অজিত আগারকার, কাউকেই ক্ষমা কররেননি তামিম।

৫৩ বলে ৫১ রানের যে সাহসী ইনিংস খেললেন বাংলাদেশ দলের এই ওপেনার, সেদিনই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিলো বাংলাদেশের পরবর্তী গতিপথ। জহির খানকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে যে বাউন্ডারিটা মেরেছিলেন, সেই দৃশ্য এখনও চোখে লেগে আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের। অথচ, ওটা ছিল তামিমের ক্যারিয়ারের মাত্র পঞ্চম ম্যাচ এবং প্রথম হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস।

মুশফিকের ১০৭ বলে সংযমী ৫৬ এবং সাকিবের ধীরে-সুস্থে ৮৬ বলে ৫৩ রানের ওপর ভর করে বাংলাদেশ জিতে গিয়েছিলো ৫ উইকেটের ব্যবধানে। ওই ম্যাচেই যেন জন্ম হয়েছিলো নতুন এক বাংলাদেশের। আর সেটা নিশ্চিত অর্থেই তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে।

Tamim at lords

লর্ডসের অনার্স বোর্ডে তামিমের নাম, ২০১০

২০১০ সালে ইউরোপ সফরে গিয়েছিলো বাংলাদেশ দল। এক সফরে নেদারল্যান্ডস, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছে টাইগাররা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছিল ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজও। যার প্রথমটি অনুষ্ঠিত হয়েছিলো, স্বপ্নের লর্ডসে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল দ্বিতীয়বারের মত লর্ডসে টেস্ট খেলতে নামলো। দলে থাকা তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য সেবারই প্রথম। তামিম, সাকিব, মুশফিকদের জন্য তো অবশ্যই। অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড দলটি বেশ শক্তিশালী। জোনাথন ট্রটের ২২৬ রানের ওপর ভর করে প্রথম ইনিংসেই ৫০৫ রানের বিশাল স্কোর ইংল্যান্ডের।

জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ অলআউট ২৮২ রানে। তামিম করলেন ৫৫ রান। অলোঅন করালো ইংল্যান্ড। এবার অসাধারণ ব্যাটিং করলো বাংলাদেশ। বিশেষ করে তামিম ইকবাল। জেমস অ্যান্ডারসন, স্টিভেন ফিন, টিম ব্রেসনান, গ্রায়েম সোয়ানদের থোড়াই কেয়ার করে ঝড়ের গতিতে রান তুললেন তামিম। ৯৪ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করে ফেললেন তিনি।

লর্ডসের মাঠে সেঞ্চুরি। যে কারো জন্যে স্বপ্নের। বাংলাদেশের মত একটি দলের জন্য আরও বেশি স্বপ্নময় ব্যাপার এটা। তামিম সেঞ্চুরি করার আনন্দে ব্যাট নিয়ে যেভাবে শূন্যে লাফিয়ে উঠেছিলেন, সেই দৃশ্য এখনও চোখে ভাসে ক্রিকেটপ্রেমীদের। প্রথমবারের মত লর্ডসের অনার্সবোর্ডে লিখা হলো কোনো বাংলাদেশির নাম। তামিম কিন্তু ওই সফরে দ্বিতীয় টেস্টে ম্যানচেস্টারেও সেঞ্চুরি করেছিলেন।

Tamim

কভেন্ট্রিকে ম্লান করে তামিমের অতিমানবীয় ইনিংস, ২০০৯

তখনও পর্যন্ত ওয়ানডে ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি করতে পারেননি কেউ। পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ার একবার ডাবল সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৪ রানের মাথায় থামতে হয়েছিলো তাকে।

সাঈদ আনোয়ারের সেই ইনিংসের দীর্ঘদিন পর জিম্বাবুইয়ান চার্লস কভেন্ট্রিও পৌঁছে গিয়েছেলেন ডাবল সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে। আর মাত্র ৬টি রান। এরপরই প্রথম ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়বেন তিনি। কিন্তু না, ১৯৪ রানেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাকে। অপরাজিত থাকলেও ডাবল সেঞ্চুরিটা করতে পারেননি।

২০০৯ সালের ১৬ আগস্ট বুলাওয়েতে চার্লস কভেন্ট্রি একা যে ইনিংস খেলেছিলেন, তাতে বাংলাদেশের তো সেখানেই হেরে যাওয়ার কথা। ৩১২ রানের বিশাল স্কোর গড়েছিলো জিম্বাবুয়ে।

কিন্তু কভেন্ট্রির মত ২০০’র কাছাকাছি না হোক, আমাদেরও তো একজন তামিম ইকবাল আছেন। যিনি কভেন্ট্রিকে পাল্ট জবাব দিলেন। করলেন দেড়শোর্ধ্ব রানের ইনিংস। প্রথমবারের মত দেড় শো পার হলো কোনো বাংলাদেশির ইনিংস। চার্লস কভেন্ট্রির ইনিংস ছাপিয়ে তামিমের ১৩৮ বলে ১৫৪ রানই (৭ বাউন্ডারি, ৬ ছক্কা) হয়ে গেলো সেরা। বাংলাদেশ ১৩ বল হাতে রেখেই জয় পেলো ৪ উইকেটের ব্যবধানে।

Tamim

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৫, ২০১০, মিরপুর

ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর। মিরপুরে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ। টস হেরে প্রথম ব্যাট করতে নেমে ইংলিশ বোলারদের সামনে একের পর এক উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। কিন্তু একপ্রান্তে অবিচল ছিলেন শুধু তামিম ইকবাল। সেদিন ইংলিশ বোলিংয়ের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে ১২০ বলে খেলেছিলেন ১২৫ রানের অনবদ্য ইনিংস। যদিও বাংলাদেশ করেছিলো কেবল ২২৮ রান। ৬ উইকেটে জয় তুলে নেয় ইংলিশরা। তবে, সেঞ্চুরির সুবাধে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন তামিম ইকবাল।

Tamim

টানা চার ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি, চার আঙ্গুল প্রদর্শন, ২০১২ এশিয়া কাপ

২০১১ বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ ক্রিকেটের ওপর দিয়ে হালকা ঝড় বয়ে গিয়েছিলো। অধিনায়কত্ব হারান সাকিব। সহ অধিনায়কের পদ থেকেও সরিয়ে দেয়া হয় তামিমকে। তারওপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি হাফ সেঞ্চুরিছাড়া দীর্ঘসময় তামিম রানখরায় ভুগছিলেন। মাঝে জিম্বাবুয়ে সফরে একটি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। এছাড়া ২০১১ সালের বাকি সময়টা আর কোনো রানই যেন করতে পারছিলেন না তামিম ইকবাল।

এ সময় তুমুল সমালোচনা ওঠে তামিমকে নিয়ে। ২০১২ সালের এশিয়া কাপের দলে কেন তাকে রাখা হলো এ নিয়ে একের পর এক সমালোচনায় বিদ্ধ হতে থাকেন তিনি। বলা হচ্ছিল, চাচা আকরাম খানের খুঁটির জোরে টিকে আছেন তামিম।

Tamim india

এসব সমালোচনার জবাব দিতে মাঠের পারফরম্যান্সের দিকেই তাকিয়ে ছিলেন। যথারীতি জবাব দেয়ার ভিত্তিও খুঁজে পেলেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬৪ রান দিয়ে ২০১২ সালের মার্চে এশিয়া কাপ শুরু হলো তামিমের। এরপর ভারতের বিপক্ষে ৭০, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫৯ এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে আবারও ৬০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তিনি।

পাকিস্তানের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেই তামিম সমালোচকদের জবাব দেন এভাবে- মুষ্টিবদ্ধ হাত থেকে একে একে চারটি আঙ্গুল বের করে এনে প্রদর্শন করেন। সেবার শচীনের শততম সেঞ্চুরির ম্যাচটি ভারত হেরে যায় তামিমের ৭০ রানের কাছে। শ্রীলঙ্কাকেও হারিয়েছিলো টাইগাররা এবং এশিয়া কাপের ফাইনালও খেলেছিলো তারা।

Tamim at khulna

২০৬, পাকিস্তানের বিপক্ষে, খুলনায়, ২০১৫

২০১৫ বিশ্বকাপের পর তখন অন্য বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে ভারত, পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে সিরিজ হারিয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর টেস্ট সিরিজ। কিন্তু টেস্টে পাকিস্তান নিঃসন্দেহে অনেক শক্তিশালী একটি দল। খুলনায় প্রথম টেস্ট। বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ করেছে ৩৩৩ রান। মোটামুটি ভালো সংগ্রহ বলা যায়।

কিন্তু পাকিস্তান মোহাম্মদ হাফিজের ডাবল সেঞ্চুরির (২২৪) ওপর ভর করে সংগ্রহ করে ৬২৮ রান। টেস্ট বাঁচাতে হলে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করতে হবে। দায়িত্ব নিলেন তামিম এবং ইমরুল। এই জুটি রীতিমত রেকর্ড গড়লেন। ওপেনিং জুটিতেই তুললেন ৩১২ রান। বাংলাদেশের হয়ে যে কোনো জুটিতে সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

ইমরুল ১৫০ রান করে আউট হলেও তামিম ইনিংসটাকে নিয়ে যান ডাবল সেঞ্চুরির ওপারে। ২৭৮ বলে ২০৬ রান করে থামলেন তিনি। বাংলাদেশ ৬ উইকেটে সংগ্রহ করে ৫৫৫ রান। টেস্টে তামিমের ক্যারিয়ারে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। সে সঙ্গে পুরো ৫দিন খেলে পাকিস্তানের সঙ্গে জয়ের সমান ড্র করলো টাইগাররা।

tamim

এক হাতে ব্যান্ডেজ, অন্যহাতে নেমে গেলেন ব্যাট করতে, ২০১৮ এশিয়া কাপ

২০১৮ সালের এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচ। প্রতিপক্ষ লাসিথ মালিঙ্গার শ্রীলঙ্কা। টুর্নামেন্টে ভালো করতে হলে প্রথম ম্যাচ থেকেই ভালো খেলতে হবে। কিন্তু ম্যাচের শুরুতেই আঙ্গুলের ইনজুরিতে পড়েন তিনি। বাম হাতের কব্জিতে ছিড় ধরেছিলো তার। নিতে হয়েছিলো হাসপাতালে। খেলার মাঝপথেই দেখা গেছে ড্রেসিংরুমে স্লিংয়ে ঝুলিয়ে রেখেছেন বাম হাত।

এদিকে মাঠে প্রাণপন লড়াই করেছেন মুশফিক-মিঠুন। তবে বাংলাদেশ থেমে যেতে পারতো ২২৯ রানে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সবাইকে অবাক করে দিয়ে মাঠে নেমে পড়লেন তামিম। বাম হাত পুরোপুরি ব্যান্ডেজ বাধা। আর্ম স্লিং খুলে ফেললেন। ডানহাত দিয়ে ধরলেন ব্যাট। একহাতে স্ট্রাইক নিলেন। বাম হাত রাখলেন শরীরে আড়ালে।

Tamim

তামিম মাঠে নেমে এক বল মোকাবেলা করতে হয়েছে সুরঙ্গা লাকমালকে। বডি লাইনে আসা বলটি তামিম এক হাত দিয়ে ধরা ব্যাটে মোকাবেলা করলেন। এরপর বাংলাদেশ দল আরও ১৫ বল মোকাবেলা করেছে শ্রীলঙ্কাকে। প্রতিটি বলই খেলেছেন মুশফিক। তামিমের সঙ্গে সিঙ্গেল ছিল ২টি। অর্থ্যাৎ, দুই ওভারের শেষ দুই বলে। মুশফিক গেছেন স্ট্রাইকে।

মুশফিককে সঙ্গ দিয়ে তামিম বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন আরও ৩২ রান। বাংলাদেশ করেছিলো ২৬১ রান। দলের জন্য তামিমের এই অবিশ্বাস্য আত্ম নিবেদন, বিস্ময় জাগানিয়া। আর্ম স্লিং খুলে রেখে এমন বিপজ্জনক অবস্থায় মাঠে নেমে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, তা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে ক্রিকেট ইতিহাসে। বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত জিতেছিলো ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে।

আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।