বিজয়-সাইফউদ্দীনের পরিবর্তে কেন ইয়াসির-মৃত্যুঞ্জয়?
এনামুল হক বিজয় নিজেকে খানিকটা দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন। আগের প্রিমিয়ার লিগে হাজারের বেশি রান করা এ টপ অর্ডারের ব্যাট থেকে এবারও রানের ফলগুধারা বইছে। এরই মধ্যে তিন-তিনটি শতরান আর দুটি পঞ্চাশ সহ ১০০.০০ গড়ে ৬০০ প্লাস রান করে প্রিমিয়ার লিগে রান তোলায় সবার ওপরে বিজয়।
আবাহনীর অন্য ওপেনার নাইম শেখের ব্যাট থেকেও এসেছে জোড়া সেঞ্চুরি। ১১৬.৪০ গড়ে বাঁ-হাতি নাইম শেখের সংগ্রহ ৫৪২ রান। তিনিও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী। ওদিকে বল হাতে আগুন ঝরাচ্ছেন সাইফউদ্দীনও। এ পেসারের ঝুলিতে এরই মধ্যে জমা পড়েছে ১৭ উইকেট। লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জের পারভেজ রাসুলের (১৯ উইকেট) এর সাইফউদ্দীনই দ্বিতীয় সর্বাধিক উইকেট শিকারী।
কিন্তু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের স্কোয়াডে তাদের কারো জায়গা হয়নি। তার মানে এবারের প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে স্থানীয়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজরকাড়া ও রান সংগ্রহকারী এবং শীর্ষ উইকেট শিকারীর একজন কেউই মূল্যায়িত হননি।
অথচ তাদের চেয়ে অনেক কম রান করা প্রাইম ব্যাংকের ইয়াসির আলী রাব্বি বিবেচনায় এসেছেন। এমনকি সাইড স্ট্রেইনের কারণে আইরিশদের সাথে সিরিজে না থাকা তাসকিন আহমেদের বদলেও সাইফউদ্দীনকে বিবেচনায় আনা হয়নি। নেয়া হয়েছে বাঁহাতি মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে। দলে মোস্তফিজ ও শরিফুল দু’দুজন বাঁহাতি পেসার থাকার পরও আরেক বাঁ-হাতি মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে দলে নেয়া হয়েছে।
কেন কি কারণে, প্রিমিয়ার লিগে দারুন পারফর্ম করেও এনামুল হক বিজয়, নাইম শেখ আর সাইফউদ্দীন বিবেচনায় আসলেন না? এ প্রশ্ন অনেকেরই। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কাছে এ প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ‘দল তো শুধু নির্বাচকরা করে না। টিম ম্যানেজমেন্টের মতামত নিয়েও করা হয়। যেহেতু খেলা হবে ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে। সেখানকার পরিবেশ, পরিস্থিতি আর আইরিশদের টিম কম্বিনেশন ও শক্তি-সামর্থ্যের কথা মাথায় রেখে টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলেই দল চূড়ান্ত করা হয়েছে। কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখেই আমরা দল সাজিয়েছি।’
প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যা, টিম ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে থেকে যাদের ব্যাপারে আগ্রহ দেখানো হয়েছে, তাদেরকেই অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
মানা গেল- তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস ও রনি তালুকদার- সবাই ইংল্যান্ডের সাথে ভাল খেলেছেন। রানও করেছেন। তাই তাদের জায়গায় আপাততঃ বিজয়ের কথা চিন্তা করা হয়নি। কিন্তু সাইফউদ্দীন তো দারুন পারফরম করছেন। আবাহনীর হয়ে প্রতি ম্যাচেই বল হাতে জ্বলে উঠে উইকেট নিচ্ছেন।
যেহেতু দলে একঝাঁক পেসার, তাই পেস বোলিং অলরাউন্ডার কোটায় তো সাইফউদ্দীনকে বিশেষ বিবেচনায় আনা যেত, তা করা হলো না কেন?
প্রধান নির্বাচকের কথা শুনে মনে হলো যেহেতু সাইফউদ্দীন এর আগে জাতীয় দলের হয়ে ভাল করেননি, তাই তার বিকল্প হিসেবে আরও একজন পেস বোলার কাম লেট অর্ডারের কথা মাথায় এনেছেন। তাই মৃত্যুঞ্জয়কে নেয়া। নান্নর মুখে এই ব্যাখ্যা, ‘আমরা একজন সীমিং অলরাউন্ডারকে পরখ করে দেখতে চাচ্ছি। দেখি ইংলিশ কন্ডিশনে সে কতটা কার্যকর হয়!’
এআরবি/আইএইচএস