চূড়ান্ত নাটকীয়তা দেখিয়ে ইংল্যান্ডকে ১ রানে হারালো নিউজিল্যান্ড
নাটকের চেয়েও নাটকীয়, সিনেমার চাইতেও সিনেমেটিক দৃশ্য বাস্তবেও এভাবে দেখা যায়! যে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস আর কোচ ম্যাককালামের হাত ধরে টেস্ট ক্রিকেটকে পুরোপুরি হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে, টি-টোয়েন্টি স্টাইলে মারমার-কাটকাট ব্যাটিং-বোলিং কিংবা ফিল্ডিংয়ে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুধ করে ছাড়ছে, তাদের সামনে জয়ের জন্য ২৫৮ রান খুবই মামুলি একটি ব্যাপার ছিল।
যেখানে প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডকে ফলোঅন করিয়েছে ইনিংস ব্যবধানে হারানোর আশায়, সেখানে এই ২৫৮ রানও করতে পারলো না ইংলিশরা! চূড়ান্ত নাটকীয়তা উপহার দিয়ে ২৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৫৬ রানে অলআউট হয়ে গেছে বেন স্টোকসের দল।
যে টেস্টে ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কা তৈরি হয়েছিলো নিউজিল্যান্ডের সামনে, সেই টেস্ট শেষ পর্যন্ত মাত্র ১ রানের ব্যবধানে জিতে নিয়েছে কিউইরা। জো রুটের লড়াই সত্ত্বেও এভাবে ইংল্যান্ড হেরে যাবে, তা স্বপ্নেও কল্পনা করেনি তারা।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ৪৩৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছিলো ইংল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে ২০৯ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ডের চেয়ে পিছিয়ে ছিলো ২২৬ রানে। সুযোগটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন স্টোকস। নিজেরা ব্যাট করতে না নেমে অলোঅন করিয়ে আবারও নিউজিল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠায়।
এবার দৃঢ়চেতা কিউইরা স্কোরবোর্ডে তোলে ৪৮৩ রান। কেনে উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরি আর অন্য কয়েকজন ব্যাটারের বড় হাফ সেঞ্চুরির সুবাধে এই স্কোর গড়তে সক্ষম হয় তারা এবং সে সঙ্গে লিড দাঁড়ায় ২৫৭ রানের। ২৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৫৬ রানে অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড।
মূলত টিম সাউদি, ম্যাট হেনরি এবং নেইল ওয়েগনারের বোলিং তোপের মুখেই ভেঙ্গে পড়ে ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপ। তারওপর, ইংলিশ মিডল অর্ডারে এখন সবচেয়ে বড় ভরসার নাম হ্যারি ব্রুকস। তিনি প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ১৮৬ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে রানের খাতা খোলার আগেই রানআউট হয়ে যান তিনি। এটাই ইংল্যান্ডকে শেষ পর্যন্ত ভুগিয়ে ছাড়লো।
মাত্র ১ রানের ব্যবধানে জিতে সিরিজটাও ড্র করলো নিউজিল্যান্ড। ২ ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো ১-১ অমিমাংসিতভাবে।
২৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর চতুর্থ দিন বিকেলেই জ্যাক ক্রাউলির উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে মাঠে নামার ওলি রবিনসন রাতটা পার করে আজ সকালে মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই আউট হয়ে যান মাত্র ২ রান করে। এরপর ওলি পোপ মাঠে নেমে করেন কেবল ১৪ রান।
ইংলিশদের দুর্ভাগ্য, হ্যারি ব্রুক মাঠে নেমেই আউট হয়ে গেলেন। একটি বলও মোকাবেলা করার সুযোগ পাননি। তার রান আউট হওয়াটাই সবচেয়ে বড় কাল হয়েছে ইংল্যান্ডের জন্য।
তবে লড়াই গড়ে তুলেছিলেন জো রুট। এই ব্যাটার ১১৩ বলে খেলেন ৯৫ রানের ইনিংস। নেইল ওয়েগনারের বলে ব্রেসওয়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৫ রান দুরে থাকতে। রুট সেঞ্চুরিটি করতে পারলে হয়তো ইংল্যান্ডকেও হারতে হতো না।
অধিনায়ক বেন স্টোকস ১১৬ বল খেলে করেন কেবল ৩৩ রান। বেন ফোকস ৫৭ বল খেলে করেন ৩৫ রান। এরপর স্টুয়ার্ট ব্রড ১১ রান করে আউট হন। নেইল ওয়াগনারের বলে উইকেটের পেছনে টম ব্লান্ডেলের হাতে যখন জেমস অ্যান্ডারসন ক্যাচ দিলেন, সঙ্গে সঙ্গেই বিজয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে কিউইরা।
আইএইচএস/