মাঠে তো সাকিবের সঙ্গে আমার কোনো সমস্যা নেই: তামিম

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:১০ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বাংলাদেশ দলের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালের মধ্যে সম্পর্ক ভালো নেই। দুজনের মধ্যে বিরোধ নিয়ে মিডিয়ায় মন্তব্য করেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তবে মাঠের বাইরে সম্পর্ক যেমনই থাকুক, মাঠের ভেতরে তাদের মধ্যে সম্পর্ক খুবই স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

আজ রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসে তামিম ইকবাল বলেন, ‘পরিষ্কার করে বলছি যে, বাংলাদেশের জার্সি গায়ে আমরা যখন মাঠে নামি, তখন আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা থাকে না। আমরা একসঙ্গে ব্যাটিং করি, পার্টনারশিপ করি। তখন আমাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা থাকে না। আমি ওয়ানডে অধিনায়ক। ম্যাচে তার যখন প্রয়োজন তখন তাকে দিয়ে বোলিং করাই। ফিল্ডিং সাজাই। সে উইকেট পেলে তাকে কংগ্রাচুলেট করি, হাইফাই করি। সেও করে। কাজেই আপনাদের বলতে পারি, মাঠের মধ্যে আমাদের সম্পর্কে কোনো সমস্যা নেই।’

একদিন আগেই এক সাক্ষাৎকারে বোমা ফাটিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বলেছিলেন, দলের মধ্যে গ্রুপিং আছে। এছাড়া সাকিব এবং তামিমের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। একজনের সঙ্গে আরেকজনের মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ। এ নিয়ে তিনি নিজে উদ্যোগ গ্রহণ করেও দুজনের বিরোধ মেটাতে পারেননি বলে মন্তব্য করেছিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট।

পাপনের এই সাক্ষাৎকারে যখন বাংলাদেশের ক্রিকেটে তোলপাড়, তখনই ইংল্যান্ড সিরিজ সামনে রেখে আজ দুপুরে মিডিয়ার মুখোমুখি হলেন ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই সংবাদ সম্মেলনে বোর্ড প্রেসিডেন্টের করা মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। সেখানে তামিম ইকবাল মন্তব্য করেন, মাঠের মধ্যে তাদের সম্পর্ক খারাপ নয়। তারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই দেশের জন্য খেলেন।

তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমরা দুজন দুজনের জায়গা থেকে বাংলাদেশের জন্য যতটুকু করণীয় কাজ ততটুকু করি। মাঠে আমাদের পূর্ণ আত্মনিবেদন থাকে। সেখানে কোনো ব্যক্তিগত দ্বন্দের চিন্তাই আসে না।’

সংবাদ সম্মেলনে তামিমের কাছে প্রশ্ন উঠলো, ‘বোর্ড প্রেসিডেন্টের ইন্টারভিউতে আপনি কতটা বিস্মিত? তার এই ইন্টারভিউ দলের মধ্যে কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে? সামনেই ইংল্যান্ড সিরিজ, সেখানে অ্যাডজাস্টমেন্টে সমস্যা হবে কি না? দলের মধ্যে আপনার বন্ধু কমে গেলো কি না?’

তামিম বলেন, ‘আমরা যদি দুজন মাঠে আমাদের করণীয় কাজগুলো ঠিকমতো করি, সেটা ক্যাপ্টেন্সি বলেন, বোলিং কিংবা ব্যাটিং বলেন, সেখানে যদি কোনো সমস্যা না হয়, তাহলে তো আর ব্যাপারটা খুব বড় করে দেখার কিছু নেই। অন দ্য ফিল্ড সব কিছু ঠিক থাকলে তো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। মাঠে আমরা ওকে। খেলা নিয়ে আমাদের আন্ডারস্ট্যান্ড ঠিক থাকলে অন্য কোনো সমস্যাও হবে না।’

পরক্ষণেই প্রশ্ন উঠলো, আপনারা দুজন সিনিয়র ক্রিকেটার। আপনার কথায়ই বোঝা গেলো, মাঠে না হলেও মাঠের বাইরে আপনাদের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ। তো এই পরিস্থিতিতে মাঠের বাইরেও তো অনেক সময় কাটান। সেখানে যদি সম্পর্ক ঠিক না থাকে, তাহলে তার প্রভাব দলের মধ্যে পড়তেই পারে। তো, আপনাদের মধ্যে সম্পর্কের এই সমস্যাটা ঠিক করা কী সম্ভব নয়?

তামিম জানান, অবশ্যই সম্ভব এবং তিনি এ ব্যাপারে ইতিবাচক। শুধু তাই নয়, এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেও ইচ্ছুক তিনি। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই সম্ভব। কেন সম্ভব নয়? আমি আমার দিক থেকে বললাম। আপনাদের তো অন্যপক্ষ থেকেও শুনতে হবে। আমি যতটুকু সম্ভব সহজ হওয়ার হবো। সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে সবকিছুই সম্ভব।’

প্রশ্ন উঠলো যে, একাধিক বোর্ড পরিচালক আপনাদের দুজনকে নিয়ে বসেছিলেন কয়েক মাস আগে এবং সেখানে আপনি নাকি ইতিবাচক ছিলেন সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে। সেখানে সাকিব তেমন ইতিবাচক মানসিকতা পোষণ করেননি। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?

তামিম স্বীকার করেন সেই বৈঠকের বিষয়ে। তবে সেখানে কী কথা হয়েছে, তা বলতে চাননি। তামিম বলেন, ‘হ্যাঁ, এমন একটা বৈঠক হয়েছিল। তবে, সেই বৈঠকে কনভারসেশনটা আসলে কী ছিল, তা আমি বলতে চাচ্ছি না। সেটা আমাদের মধ্যেই থাকুক।’

এরপরই তামিমের কাছে প্রশ্ন ছুটে আসলো, ‘দলের মধ্যে এখন তাহলে আপনার বন্ধু কে (এক সময় সাকিব তামিম দুজনই ছিলেন খুব ভালো বন্ধু)?

তামিম বলেন, ‘না, বন্ধু আছে তো! আমি তো ডিনার করি মিরাজ, তাসকিন, লিটন, শান্ত, মুশফিকদের সঙ্গে। অন্যদের সঙ্গে তো আমার কোনো সমস্যা নেই। অবশ্যই দলের মধ্যে আমার বন্ধু আছে।’

আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।