বিশ্বকাপ শেষে গাড়ি ধোয়া-ডেলিভারিম্যানের কাজে ফিরেছেন তারা
ক্রিকেটারদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন দেশে এসব নিয়ে বিদ্রোহ-আন্দোলনের কথাও শোনা যায়। তবে জিম্বাবুয়ে, নেদারল্যান্ডসের ক্রিকেটারদের অনেকে কতটা আর্থিক দৈন্যতার মধ্যে থেকেও বিশ্বকাপের মঞ্চে পারফর্ম করেছেন, শুনলে চোখ কপালে উঠবে।
‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে অবাক করা কিছু তথ্য। জানা গেছে, নেদারল্যান্ডস-জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার কিংবা স্টাফদের অনেকে তাদের চাকরি থেকে বিনা বেতনে ছুটি নিয়ে বিশ্বকাপে এসেছিলেন।
নেদারল্যান্ডসের পেসার পল ফন ম্যাকেরেন বলেন, ‘আমাদের ম্যানেজারকে বেতন দেওয়া হয়নি। তাদের একজনকে (টুর্নামেন্টের মাঝপথে) অফিসে ফিরতে হয়েছে, কেননা তাকে সেখান থেকে কল করা হয়। ফলে আমাদের নতুন ম্যানেজার ডাকতে হয়।’
‘আমাদের দুজন খেলোয়াড় আছে স্টিভেন মাইবার্গ আর এন টেজা, দুজনই একটি কনসালটেন্সি কোম্পানিতে চাকরি করেন। তারা বিশ্বকাপে খেলছেন (বিশ্বকাপ চলার সময়ের কথা) বিনা বেতনে ছুটি নিয়ে। টুর্নামেন্ট শেষে তাদের অফিসে ফিরতে হবে।’
জিম্বাবুয়ের কয়েকজন ক্রিকেটারও ‘দিন এনে দিন খাওয়ার’ চাকরি করেন। ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে জিম্বাবুয়ের এক ক্রিকেটার বলেন, ‘আমি কারও নাম বলব না, কারণ আমরা সহানুভূতি নিতে চাই না। কিন্তু আমাদের একজন সতীর্থ গাড়ি ধোয়ার কাজ করেন, আরেকজন ডেলিভারিম্যান, আরেকজন খেলাধুলার সরঞ্জাম বিক্রি করে সংসার চালান।’
ক্রিকেট বোর্ড তাদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারে না, এমনকি অনুশীলনের সময় পানি এবং ক্রিকেট বল কিনে দেওয়ার মতো সামর্থ্যও নেই। জিম্বাবুয়ের একজন খেলোয়াড় বলেন, ‘আমাদের কেউ কেউ তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলের ফি দিতে ধারকর্জ করেছেন।’
অনেকটা একইরকম অবস্থা ডাচ ক্রিকেটারদের। ফন মিকেরেন বলেন, ‘আমাদের অনেক ক্রিকেটারকে দেখবেন কম বয়সেই অবসরে চলে যাচ্ছে। কারণ তারা অন্য চাকরির অফার পাচ্ছে কিংবা পড়াশোনা শেষ করে চাকরিতে ঢুকতে হচ্ছে। আমাদের দলে বয়স্ক ক্রিকেটার নেই, কারণ ডাচ খেলোয়াড়রা ২৩-২৪ বছরেই খেলা শেষ করে ফুলটাইম চাকরিতে ঢুকে যাচ্ছে।’
ফন মিকেরেন নিজেও ফুড ডেলিভারির কাজ করেছেন, যখন তার সঙ্গে ইংলিশ কাউন্টি সমারসেটের চুক্তি শেষ হয়ে যায়। গ্লুচেস্টারশায়ারের সঙ্গে নতুন করে দুই বছরের চুক্তি হওয়ার আগে উবারে এবং খণ্ডকালীন সেলসম্যান হিসেবেও চাকরি করেছেন মিকেরেন।
এমএমআর/জিকেএস