সাইফউদ্দীনের কি কপাল পুড়লো?
‘১৩ নাকি অপয়া! সংস্কারবাদীরা বেশ মানেন। খেলোয়াড়দের অনেকেই ১৩ সংখ্যাকে অপয়া বলেই বিশ্বাস করেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর কী সাইফউদ্দীনের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সত্যিই ‘অপয়া’ হয়ে থাকবে?
ক্রাইস্টচার্চে আজ বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন জাতি আসরের শেষ ম্যাচের অনুজ্জ্বল পারফরমেন্সে কি সাইফউদ্দীনের এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই শেষ হয়ে যাবে?
কারণ সত্যিই আজ ১৩ অক্টোবর ক্রাইস্টচার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি খুব বাজে কেটেছে সাইফউদ্দীনের। বল হাতে সুবিধা করতে পারেননি। বেদম মার খেয়েছেন।
পুরো ৪ ওভার (৩.৫ ওভার) বোলিং না করেও ৫৩ রান দিয়ে ফেলেছেন। শুধু আলাগা বোলিংই নয়; প্রচুর রান দেয়ার পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচও ফেলে দলের পরাজয় ত্বরান্বিত করেছেন সাইফউদ্দীন। ৬৯ রানের হার না মানা ও ম্যাচ জেতানো ইনিংস উপহার দেয়া পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক কাম ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানের সহজ ক্যাচ ধরেও ফেলে দিয়েছেন সাইফউদ্দীন।
রিজওয়ানের রান তখন ৩২। ম্যাচের চালচিত্র বলে দেয়, রিজওয়ানের ক্যাচটি সাইফউদ্দীন ধরে রাখতে পারলে ম্যাচের ফল ভিন্নও হতে পারতো। কিন্তু সাইফউদ্দীনের হাত থেকে সে ক্যাচ ফস্কে পড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনাও যায় নিঃশ্বেস হয়ে। সেটাও শেষ নয়। সাইফউদ্দীনের ব্যর্থতা আরও লম্বা।
ঠিক ১১ নম্বর ওভারে পেসার হাসান মাহমুদের বলে রিজওয়ানের ক্যাচ ফেলার ঠিক পরের ওভারে তার হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক সাকিব। ভাইটাল ক্যাচ ড্রপ করা সাইফউদ্দীন মানসিকভাবে বিধ্বস্ত, তাকে আক্রমণ করার এবং তার বোলিংয়ের ওপর চড়াও হওয়ার এটাই মোক্ষম সময় ও সুযোগ।
তা বুঝে সাইফউদ্দীনের ওপর প্রবল আক্রমণ করেন বাবর আজম আর রিজওয়ান। ওই ওভারে নো আর ওয়াইড দুই’ই করেন সাইফউদ্দীন। বাবর আজম আর রিজওয়ান ১৯ রান তুলে নিজেরা হন উজ্জীবিত, ছন্দও ফিরে পান। উল্টো বাংলাদেশের বোলার ও ফিল্ডাররা হন হতোদ্যম।
এভাবেই একটি অনুজ্জ্বল পারফরমেন্সে ভরা বাজে দিন কাটলো সাইফউদ্দীনের। কে জানে এই অনুজ্জ্বল পারফরমেন্সে তার কপাল পুড়তে পারে। এমনকি এ পেস বোলিং অলরাউন্ডারের এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে।
এটা মোটামুটি নিশ্চিত, যে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে দুটি পরিবর্তন আসছে। জাগো নিউজের পাঠকরা বুধবার তার আগাম পুর্বাভাসও পেয়েছেন এবং ধারণা করা হচ্ছিল, সাব্বির রহমান রুম্মনের পরিবর্তে সৌম্য সরকার এবং পেসার এবাদত হোসের জায়গায় বাঁ-হাতি শরিফুল ইসলামের অন্তর্ভুক্তি ঘটতে যাচ্ছে।
কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) অনুজ্জ্বল, শ্রী-হীন পারফরমেন্সের পর পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দীনের বাদ পড়ার সম্ভাবনা খুব বেশি বলে জানা গেছে।
তাকে পেস বোলিং অলররাউন্ডার ধরা হলেও এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্যের পরিচয় দিতে পারেননি সাইফউদ্দীন। ৩৪ খেলায় রান মোটে ২০০। শেষ ৮-১০ ম্যাচের একটিতেও সাইফউদ্দীন শেষ দিকে এমন ব্যাটিং করদে পারেননি যে তাকে অলরাউন্ডার ভাবা যায়।
বরং তার চেয়ে তাসকিনের ব্যাটের তেজই বেশি মনে হয়েছে। কাজেই শেষ মুহূর্তে এবাদতকে রেখে সাইফউদ্দীনকে বাদ দেয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে। এমন অনুজ্জ্বল আর আড়ষ্ট পারফরমেন্সের পর সত্যিই যদি সাইফউদ্দীন বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়েন, সেটা কি খুব বড় বিস্ময় হবে?
এআরবি/আইএইচএস