বোনের মৃত্যু বদলে দিয়েছে পাকিস্তানি এই ক্রিকেটারের জীবন

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৪০ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

দারুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটার তিনি। তবুও এক সময় বাজে ফর্মের কারণে দল থেকে ছিটকে পড়তে হয়েছিল শান মাসুদকে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারছিলেন না। তবে একটি বড় দুর্ঘটনা তার জীবন বদলে দিয়েছে। যে ঘটনার কারণে, ক্রিকেটীয় ফর্মেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন।

মূলতঃ শান মাসুদের জীবন বদলে দিয়েছে তার বোনের মৃত্যু। বোনের মৃত্যুর পর নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আবার বাইশ গজে নিজেকে ফিরে পেতে মরিয়া পাকিস্তানের এই ব্যাটোর। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাত ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে তো বটেই, বিশ্বকাপেও সুযোগ পেয়ে গেছেন তিনি।

করাচী ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরুর আগে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শান মাসুদ বলেন, ‘সময় পেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু শিখেছি। ব্যক্তি এবং ক্রিকেটার হিসাবে এখন আমি অনেক পরিণত। ক্রিকেট ছাড়াও জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যেগুলো মাথায় রাখতে হয়। দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলতে পেরে আমি গর্বিত। বোনের মৃত্যুর পর জীবনটা অন্যরকম ভাবে দেখতে শিখেছি। দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার থেকে বড় আর কিছু নেই। ক্রিকেটে ব্যর্থতা এবং সাফল্যের বাইরেও অনেক কিছু রয়েছে।’

এক সময় তো শান মাসুদকে শুধুই টেস্ট ব্যাটার হিসেবে ধরা হতো। টি-টোয়েন্টি কিংবা ওয়ানডেতে সুযোগ ছিল না তার। ৫টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হলেও টি-টোয়েন্টিতে এখনও অভিষেকই হয়নি ৩২ বছর বয়সী এই ব্যাটারের।

পাকিস্তানের সাবেক কোচ মিকি আর্থার মনে করেছিলেন, শান শুধুই একজন টেস্ট ব্যাটার। ইংল্যান্ডে কঠিন এক সফর শেষে মিকি আর্থারের দলে এই জায়গাটাও হারিয়ে ফেলেন তিনি। এরপরই তিনি মনযোগ দেন ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করার। মিকি আর্থারই বলেছিলেন, ‘শান মাসুদ যেন কোনো কিছুতেই সন্তুষ্ট ছিলো না। এ কারণেই তাকে আমি আবার দলে ডেকেছি।’

তার আগে অবশ্য ঘরোয়া লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্স করে নজর কাড়তে সক্ষম হন শান। ৫৭.১৪ গড়ে রান করে পিএসএলে মুলতান সুলতান্সেরও চোখে পড়ে যান এবং তারা তাকে দলেও নিয়ে নেয়।

এক বছরের কঠোর পরিশ্রমের পর শান মাসুদ এখন একজন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেই নয় শুধু জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বকাপের দলেও।

পিএসএলে মুলতান সুলতান্সের হয়ে ৩২.৭৮ গড়ে, ১৩৬.১০ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন তিনি। ২০২০ সালে হয়েছেন দলটির অধিনায়ক এবং ২০২১ সালে তুলে নিয়েছেন টুর্নামেন্টের শিরোপা। মুলতান সুলতান্সে জেমস ভিন্স, রাইলি রুশো, টিম ডেভিড, মোহাম্মদ রিজওয়ান কিংবা খুশদিল শাহদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে দারুণ উপকার হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন শান মাসুদ।

টেস্টে খেলেন বিশেষজ্ঞ ওপেনার হিসাবে। টি-টোয়েন্টি দলে তাকে মিডল অর্ডারে ব্যবহার করা হতে পারে।পাকিস্তান সুপার লিগ, ইংল্যান্ডে ভাইটালিটি ব্লাস্ট এবং জাতীয় টি-টোয়েন্টি কাপে দুর্দান্ত খেলার কারণেই সুযোগ পেয়েছেন খেলেছেন তিনি। পারফরম্যান্সই সুযোগ করে দিয়েছে জাতীয় দলে। জাতীয় দলের হয়ে প্রথম বার টি-টোয়েন্টি খেলতে নামবেন। সফল না হলেও কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে চান না মাসুদ।

বলেছেন, ‘সুযোগ পেলে সেটাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। তবে ভাল খেলতে না পারলে কাউকে দোষী বানাতে চাই না। ফলাফল আমার হাতে নেই। কিন্তু ব্যর্থ হলে তার দায় আমারই। সেটা কেউ দায়িত্ব নেবে না।’

আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।