হাসপাতাল থেকে ফিরেই মাঠে নামলেন রিজওয়ান

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৬ পিএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আগে বুকে সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। সেখান থেকে মাঠে ফিরেছিলেন তিনি। এশিয়া কাপেও সেই ঘটনা দেখা গেল। এবারও হাসপাতাল থেকে ফিরলেন মাঠে।

দলে তাকে ডাকা হয় ‘যোদ্ধা’ নামে। খুব সহজে কাবু করা যায় না মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। চোট সামলে হাসি মুখে খেলেন পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেটা দেখা গিয়েছিল। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন। দু’দিন হাসপাতালের আইসিইউতে কাটিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। আবার সেই ছবি দেখা গেল এশিয়া কাপে। ভারতকে হারানোর পরে তাকে নিয়ে ছুটতে হয়েছিল হাসপাতালে। সেখান থেকে মাঠে ফিরলেন তিনি। খেলতে নামলেন আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে।

ভারতের বিরুদ্ধে ফিল্ডিং করার সময় মোহাম্মদ হাসনাইনের করা একটি বাউন্সার ধরতে গিয়ে চোট পান রিজওয়ান। লাফিয়ে উঠে মাটিতে পড়ার সময় তার ডান পা মচকে যায়। সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রণায় মাটিতে পড়ে কাতরাতে থাকেন রিজওয়ান। ছুটে আসেন দলের ফিজিও।

বেশ কিছুক্ষণ রিজওয়ানের চোট পরীক্ষা করে দেখেন তিনি। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে রিজওয়ান ফের খেলা শুরু করেন; কিন্তু তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, দৌড়াতে সমস্যা হচ্ছে তার। ব্যাট করার সময়ও দৌড়াতেও সমস্যা হচ্ছিল রিজওয়ানের। কিন্তু লড়াই ছাড়েননি তিনি। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭১ রান করেন। তার রানের ওপর ভর করেই ভারতকে পাঁচ উইকেটে হারায় পাকিস্তান।

খেলা শেষে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। রিজওয়ানের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চায়নি পাকিস্তান দল। এমআরআই করা হয়েছিল। পরেরদিন বোর্ড জানিয়ে দেয়, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলবেন তিনি।

এর আগেও দেখা গিয়েছিল রিজওয়ানের লড়াই। ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের ঠিক আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রিজওয়ান। বুকে প্রবল সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। হাসপাতালে নিয়ে যেতে ২০ মিনিট দেরি হলে বড় বিপদ ঘটতে পারত।

তবু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে মাঠের বাইরে থাকতে চাননি তিনি। তাকে হাসপাতালের নার্স সতর্ক করে জানিয়েছিলেন, এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকতে হবে; কিন্তু রিজওয়ানের মাথায় তখন শুধুই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল।

না ছোড় ছিলেন রিজওয়ান। তার জেদের সামনে হার মানতে বাধ্য হয়েছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড নিযুক্ত চিকিৎসকও। শেষ পর্যন্ত রিজওয়ানকে সুস্থ করার জন্য আইসিসির দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে আইসিসির নিষিদ্ধ তালিকায় থাকা একটি ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন রিজওয়ানকে। এরপর দু’দিন আইসিইউতে কাটানো রিজওয়ান অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে নেমে করেছিলেন ৫২ বলে ৬৭ রান।

বিশ্বকাপ চলাকালীনই অসুস্থ বোধ করার পর হাসপাতালে গিয়েছিলেন রিজওয়ান। পরীক্ষা করে দেখা যায় তার ফুসফুসে মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছে। পরে রিজওয়ান বলেছিলেন, ‘যখন হাসপাতালে পৌঁছাই, তখন শ্বাস নিতে পারছিলাম না। নার্স আমাকে জানান, আমার শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এর বেশি কিছুই জানানো হয়নি আমাকে। যদিও তখনই জানিয়ে দিয়েছিলাম, পরের দিন সকালে একটু সুস্থ বোধ করলেই হাসপাতাল থেকে চলে যাব।’

অসুস্থতা সত্ত্বেও মনের জোরে দেশের জন্য খেলতে চেয়েছিলেন রিজওয়ান। প্রতিযোগিতায় ভালো ছন্দে ছিলেন রিজওয়ান। তাই সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠের বাইরে থাকতে চাননি। শেষ পর্যন্ত সেই ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। এবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল।

আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।