যে কারণে সিরিজ হারতে হলো বাংলাদেশকে
শেষ ম্যাচে দলে যুক্ত হলেন ‘পঞ্চ পাণ্ডবে’র অন্যতম সদস্য মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ; কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হলো না। জিম্বাবুয়ের কাছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হারলো টাইগাররা।
আজ ২ আগস্ট, মঙ্গলবার হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত বাহিনীর ১০ রানের পরাজয়ে সত্যি হলো অনেকের সন্দেহ, সংশয়।
‘শীর্ষ তারকাদের ছাড়া কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে পারবে সোহানের দল?’- এই শিরোনামে গত ২৭ জুলাই জাগো নিউজে প্রকাশিত হয়েছিল এক প্রতিবেদন। শিরোনামই বলে দিচ্ছে কী ছিল তার প্রতিপাদ্য বিষয়?
সে প্রতিবেদনেই একটা বিষয় পরিষ্কার ছিল। তাহলো- পাঁচ শীর্ষ ও জনপ্রিয় তারকাকে ছাড়াই এবার জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে টাইগাররা। এক যুগেরও বেশি সময় সব ফরম্যাটেই যারা ছিলেন টিম বাংলাদেশের প্রধান চালিকাশক্তি, তাদের ঘিরেই আবর্তিতত হতো সব কিছু।
বিশেষ করে সাকিব, তামিম, মুশফিক আর রিয়াদের অন্তত তিনজন ছাড়া ক্রিকেটের ছোট পরিসরে দল হয়েছে খুব কম। এবার তারা কেউ নেই। তাদের অনুপস্থিতিতে একঝাঁক তরুণ ও নবীন ক্রিকেটারে গড়া দল কী জিম্বাবুয়ের সঙ্গে পেরে উঠবে?
পাশাাপাশি আরও একটি প্রশ্ন ছিল কারো কারো মনে- এক বছর আগে দুই ম্যাচ জিতিয়ে সৌম্য সরকার যে সিরিজ সেরা হয়েছিলেন, এবার তার ভূমিকা কেউ নিতে পারবে কি না?
অনেকের মনেই সংশয় ছিল, সিনিয়র ও অভিজ্ঞ এবং অপরিহার্য্য সদস্যদের অনুপস্থিতিতে এসব তরুণরা কী পারবেন নিজেদের মেলে ধরে দলকে সাফল্যের বন্দরে পৌঁছে দিতে?
সে সংশয় সত্য বলেই প্রমাণ হলো। তরুণরা শেষ পর্যন্ত কুলিয়ে উঠতে পারলেন না জিম্বাবুয়ের সাথে। কেউ সৌম্য সরকারের ভূমিকাও নিতে পারেননি। সৌম্যর মত জোড়া অর্ধশতক উপহার দেয়া বহুদুরে, লিটন দাস ছাড়া আর কেউ একটি হাফ সেঞ্চুরিও হাঁকাতে পারেননি।
দিন শেষে টি-টোয়েন্টি হলো ব্যাটারদের খেলা। ব্যাটাররা জ্বলে উঠতে না পারলে সাফল্য পাওয়া কঠিন। এ সিরিজে একটি মাত্র ম্যাচ জেতানো ফিফটি এসেছে টাইগারদের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় ম্যাচে ৫৬ রান করেছিলেন লিটন দাস। এছাড়া ম্যাচ জয়ের মত আর কোনো ইনিংস উপহার দিতে পারেননি টাইগার ব্যাটাররা।
বোলিংয়ে পুরো সিরিজে একটিই ম্যাচ উইনিং পারফরমেন্স আছে। সেটা দ্বিতীয় ম্যাচে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ‘ম্যাজিক্যাল বোলিং স্পেলটি (৪ ওভারে ২০ রানে ৫ উইকেট)।
আজ শেষ ম্যাচেও সব বাটাররা ব্যর্থ। ১৫৭ রানের মাঝারিমানের টার্গেট ছুঁতে গিয়েও লিটন দাস, পারভেজ হোসেন ইমন, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, শেখ মাহদির কেউই দল জিতিয়ে বিজয়ীর বেশে সাজঘরে ফিরতে পারেননি।
মূলতঃ ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতানো ভূমিকা নিতে পারেননি কেউই। তার প্রমাণ তিন ম্যাচে একটি মাত্র ফিফটি। দ্বিতীয় ম্যাচে লিটন দাসের ৩৩ বলে ৫৬ রানের ঝড়ো ও আকর্ষণীয় ইনিংসটি ছাড়া আর একজন ব্যাটারও পুরো সিরিজে পঞ্চাশে পা রাখতে পারেননি।
একটি দলের ব্যাটারদের অবস্থা এমন হলে সেই দলের পক্ষে সিরিজ জেতা কঠিন হয়ে পড়ে। আজ শেষ দিনও কারো ব্যাট কথা বলেনি। সিনিয়রদের অনুপস্থিতিতে জুনিয়রদের কেউ হাল ধরতে পারেননি। এমনকি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কাছে যে প্রত্যাশা ছিল, সেটাও মেটাতে পারেননি তিনি। সুতরাং, ১৫৭ রানের টার্গেটও হয়ে থাকলো অধরা।
এআরবি/আইএইচএস