হঠাৎ অবসরের ঘোষণা ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের
বেশ কিছুদিন ধরেই ইনজুরি আর অফফর্মে ভুগছিলেন ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান। যে কারণে ধারণা করা হচ্ছিল, হয়তো বা ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে পারেন তিনি। আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকেও বিদায় জানাতে পারেন।
অবশেষে সে গুঞ্জনই সত্যি হলো। প্রায় সাড়ে সাত বছর পর অধিনায়কত্ব করার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে গুডবাই জানিয়ে দিলেন ইংল্যান্ডের ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক।
এই ইয়ন মরগ্যানের হাত ধরেই ২০১৯ সালে প্রথমবারের মত ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করে ইংল্যান্ড। এর আগে তিনবার ফাইনালে উঠেও তারা শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি।
ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন তিনি এবং সবচেয়ে বেশি রানও করেছেন। ওয়ানেডেতে খেলেছেন মোট ২৪৮ ম্যাচ। রান করেছেন ৩৯.২৯ গড়ে ৭৭০১। সেঞ্চুরি ১৪টি, হাফ সেঞ্চুরি ৪৭টি।
তবে এই ৭৭০১ রানের মধ্যে ইংল্যান্ডের হয়ে করেছেন ৬৯৫৭ রান। ২০০৯ সালের আগে তিনি খেলতেন আয়ারল্যান্ডের হয়ে। এরপর ইংল্যান্ডে এসে ইংলিশ ক্রিকেটার বনে যান এবং ২০১৪ সালে এসে পেয়ে যান অধিনায়কত্ব। ৬৯৫৭ রানও ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের সংগ্রহ।
টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ১১৫টি। ২৮.৫৮ গড়ে এবং ১৩৬.১৭ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন ২৪৫৮। সেঞ্চুরি নেই, হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ১৪টি।
৩৫ বছর বয়সী মরগ্যানের ইচ্ছা ছিল এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা খেলার এবং ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেয়ার। কিন্তু ক্রমাগত অফফর্ম আর ফিটনেস সমস্যা তাকে দারুণ চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। যে কারণে হঠাৎ সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে দিলেন। তবে ঘরোয়া ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলা চলমান রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
২০১৪ সালে ইংল্যান্ডের সাদা বলের ক্রিকেটে নেতৃত্বের দায়িত্ব নেয়ার পর ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি, এই দুই ফরম্যাটে ইংলিশ ক্রিকেটে বলতে গেলে বিপ্লব সাধন করে ফেলেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, বহু চেষ্টা-সাধনার পর ২০১৯ সালে বিশ্বকাপটাও ঘরে তুলেছে তারা মরগ্যানের নেতৃত্বেই।
২০১৫ সালে বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে অ্যালিস্টার কুকের কাছ থেকে নেতৃত্বভার নেন তিনি। এরপরই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বাংলাদেশের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় ইংলিশদের। তবে মরগ্যান এবং কোচ ট্রেভর বেলিসকে নিয়েই পথ চলতে থাকে ইংলিশরা।
খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ছোট ফরম্যাটের ক্রিকেটে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে ইংল্যান্ড এবং নিয়মিতই ৩০০ প্লাস স্কোর গড়তে শুরু করে। মাঝে মধ্যে ৪০০ প্লাস স্কোর গড়ে ফেলে তারা। যার ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে এলো বিশ্বকাপ জয়।
মরগ্যানের নেতৃত্বে ১২৬টি ওয়ানডে খেলে ইংল্যান্ড। জয় পেয়েছে ৭৬টিতে। হেরেছে ৪০টি। টাই দুটি এবং ফল হয়নি ৮টিতে। টি-টোয়েন্টি খেলে ৭২টি। এর মধ্যে জয় ৪২টিতে, হার ২৭টি, টাই ২টি এবং ফল হয়নি ১টিতে।
আইএইচএস/