‘শোয়েব আখতারের ইয়র্কারে উড়ে গেলো নিউজিল্যান্ড’
ক্রিকেট বিশ্বে প্রতিনিয়তই কত ঘটনা ঘটে যায়। কত কিছুই না ইতিহাস হয়ে লিপিবদ্ধ রয়েছে ক্রিকেটের পাতায়। প্রায় দেড়শত বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রতিদিনই জমছে নানা রকমের ঘটনা। সেই জমানো ইতিহাস থেকেই বের করে আনা হয় সংশ্লিষ্ট দিনটির উল্লেখযোগ্য কোনো বিষয়।
আজ ১৬ জুন, ২০২২। ক্রিকেট ইতিহাসে এই দিনে ঘটেছে অনেকগুলো ঘটনা। যেগুলো তুলে ধরা হলো জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য।
১৯২৭: ইংল্যান্ডের সবচেয়ে মার্জিত ব্যটারের জন্ম
ইংল্যান্ডের সবচেয়ে মার্জিত ব্যাটার হিসেবে গণ্য করা হয় তাকে। টম গ্রাভেনি, যাকে তার অসাধারণ স্ট্রোক প্লে’র জন্য সমর্থকরা নিজেদের হৃদয়ে ঠাঁই দিয়েছিলেন খুব অল্প সময়ের মধ্যে; কিন্তু উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসার প্রবণতা তাকে ইংল্যান্ড নির্বাচকদের কাছে আস্থাহীন করে তুলেছিল। শুধু তাই নয়, ১৯৬৩ সালে তাকে দল থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় তার এই খামখেয়ালিপনা প্রবণতা।
তবে ওস্টারশায়ারের হয়ে দুর্দান্ত ব্যাট করার কারণে তিনবছর পর আবারও দলে ফিরে আসেন এবং ৩৯তম জন্মদিনের পর ক্যারিয়ারে খেলা ৭৯ টেস্টের মধ্যে টানা ২৪টি টেস্ট ম্যাচও খেলেন তিনি।
এর মধ্যে, ১৯৬৮ সালে হেডিংলিতে একবার ইংল্যান্ড দলকেও নেতৃত্ব দেন গ্রাভেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ছিলেন সবচেয়ে বিধ্বংসী। এই দলটির বিপক্ষে তার রানের গড় ৫৯ এবং ১৯৫৭ সালে ট্রেন্টব্রিজে ২৫৮ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন তিনি। ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় টেস্টেই, ১৯৫১-৫২ মৌসুমে বোম্বেতে ভারতের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১৭৫ রানের ইনিংস। কুইন্সল্যান্ডের হয়ে খেলা এবং কোচিং করানো দুটোই করেন তিনি। আজ তার জন্মদিন। ২০১৫ সালের ৩ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন গ্রাভেনি।
১৯৯৯: বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিলো পাকিস্তান
১৯৯৯ সালের এদিনে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ড। উড়তে থাকা পাকিস্তানের সামনে এদিন অসহায় হয়ে পড়ে কিউইরা।
স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বাধীন নিউজিল্যান্ড টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু গতির রাজা শোয়েব আখতারের গতির কাছে থমকে গিয়েছিল কিউইদের বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন।
১০ ওভারে ৫৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন শোয়েব। তার তিনটি উইকেটই ছিল ইয়র্কার। তার দেখানো পথে ওয়াসিম আকরাম এবং আবদুল রাজ্জাক নেন ২টি করে উইকেট। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করতে সক্ষম হয় নিউজিল্যান্ড।
জবাব দিতে নেমে সাঈদ আনোয়ারের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। ওয়াজহাতুল্লাহ ওয়াস্তি আর সাঈদ আনোয়ার উদ্বোধনী জুটিতে গড়ে তোলেন ১৯৪ রান। ওয়াস্তি অপরাজিত থাকেন ৮৪ রানে।
১৯৩২: উদ্বোধনী জুটিতে বিশ্বরেকর্ড, যা কখনোই ভাঙেনি
১৯৩২ সালে এমন একটি রেকর্ড ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ হয়েছিল, যা এখনও পর্যন্ত ভাঙতে পারেনি কেউ। ক্রিকেটে রেকর্ড সৃষ্টিই হয় মূলতঃ ভাঙার জন্য। কিন্তু কখনও কখনও কোনো কোনো রেকর্ড তৈরিই হয় আজীবন অক্ষুণ্ন থাকার জন্য। ১৯৩২ সালের আজকের এই দিনে গড়া উদ্বোধনী জুটিতে ৫৫৫ রানের রেকর্ডটি তেমনই একটি।
এসেক্সের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচে মাঠে নেমেছিল ইয়র্কশায়ার। ওই ম্যাচেই প্রথমে ব্যাট করতে নামে ইয়র্কশায়ারের দুই ওপেনার হার্বার্ট সাচলিফ এবং পার্সি হোমস। দু’জন মিলে ম্যাচের প্রথমদিনই তুলে ফেলেন ৪২৩ রান।
ইংল্যান্ডের পত্রিকাগুলো সারারাত ধরে নিউজ ছাপালো, ১৮৯৮ সালে গড়া জ্যাক ব্রাউন এবং জন টানিক্লিফ-এর ৫৫৪ রানের রেকর্ড ভেঙে দিতে পারেন সাচলিফ এবং হোমস।
পরদিন লেইটনে দর্শকের ঢল নামে এবং তাদেরকে হতাশও করেননি ইয়র্কশায়ারের দুই ওপেনার। লরি ইস্টম্যানকে হুক করে বাউন্ডারি মেরেই সাচলিফ ৫৫৪ রান পার করে ইয়র্কশায়রের স্কোর নিয়ে যান ৫৫৫ রানে। সে সঙ্গে গড়ে ফেলেন ওপেনিং জুটিতে সর্বকালের সেরা রেকর্ড।
রহস্যজনকভাবে পরের বলেই উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন সাচলিফ। ভেঙে যায় ৫৫৫ রানের জুটি। ইয়র্কশায়ার অধিনায়ক ব্রায়ান সেলার্স ইনিংস ঘোষণা করে দেন। সাচলিফ ৩১৩ এবং পার্স হোমস ২২৪ রান করেন।
আইএইচএস/