‘ম্যাচটা যেন না হারি, অন্তত যেন ড্র করি’
বাংলাদেশ সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর করেছিল ২০১৮ সালে। সেবারও বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন সাকিব আল হাসান। তবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজটিতে বাংলাদেশ হেরেছিল খুব বাজেভাবে। প্রথম ম্যাচে তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস ব্যবধানেই হেরেছে। দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের পরাজয় ১৬৬ রানে।
এরপর গত বছর ফ্রেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরে এসেছিল ক্যারিবীয়রা। এই সফরের প্রথম টেস্টে চট্টগ্রামে নিশ্চিত জয়ের পথে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কাইল মায়ার্সের অতি মানবীয় ডাবল সেঞ্চুরির ওপর ভর করে বাংলাদেশ হেরে যায় ৩ উইকেটের ব্যবধানে।
দ্বিতীয় টেস্ট ছিল ঢাকায়। ওই ম্যাচেও জিততে জিততে হেরে গেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩১ রানের প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু মুমিনুল হকের দল থেমে যায় ২১৩ রানে। হেরেছে মাত্র ১৭ রানের ব্যবধানে।
এবার কী হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে? অ্যান্টিগা আর সেন্ট লুসিয়ার গ্রস আইলেটে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে কী করবে বাংলাদেশ?
তিন বছর আগে সর্বশেষ জাতীয় দলে খেলা ইমরুল কায়েসের আশা, জিততে না পারুক অন্তত ড্র যেন করতে পারে বাংলাদেশ। ইমরুলের আশা, এবার যে শক্তি নিয়ে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলতে গেছে, তাতে ভালো কিছুই হবে।
আজ মিরপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ইমরুল বলেন, ‘দেখুন আমার কাছে মনে হয় যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজে সর্বশেষ সফরটা আমরা ভালো খেলিনি; কিন্তু এ বছর যারা আছে এবং আমাদের পেস আক্রমণ এবং স্পিন আক্রমণ মিলিয়ে ভালো একটা দল গেছে। আমি আশাবাদী আমরা যেন ম্যাচটা না হারি, আমরা যেন অন্তত জিততে না পারলেও ম্যাচটা যেন ড্র করতে পারি। আমি আশা করি ভালো কিছু হবে ইনশাল্লাহ।’
ভালো খেলার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজে কী কী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে? জবাবে ইমরুল বলেন, ‘সেখানে চ্যালেঞ্জ তো অবশ্যই। ব্যাটারদের রান করতে হবে, বোলারদের উইকেট নিতে হবে, ২০টা উইকেট নিতে হবে। এটাই চ্যালেঞ্জ। সব থেকে বড় কথা হচ্ছে ওখানে পেস বোলার যারা আছে উইন্ডিজের ওরা হচ্ছে অ্যাকুরেসি মেইন্টেন করে বোলিং করে, প্লানওয়াইজ বোলিং করে।’
‘আমাদের টপ অর্ডাররা যদি ভালো একটা শুরু দিতে পারে তাহলে মিডল অর্ডারে জন্য কাজটা সহজ হবে এবং ভালো একটা রান হবে। অন্যথায় কঠিন। যদি টপ অর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ হয়, তাহলে মিডল অর্ডারের ব্যাটারের জন্য কাজটা করা অনেক কঠিন। এটা ডিউক বল, বল যত পুরান হয় তত সুইং করতে থাকে। তো ওদিক থেকে বলবো যে অবশ্য এটা টপ অর্ডার ব্যাটাররা যেন বড় বড় ইনিংসে এগিয়ে নেয়।’
মুমিনুলকে নিয়েই এখন আলোচনাটা বেশি। টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার নিঃসন্দেহে। তবে গত কিছুদিন রানে নেই। তার সম্পর্কে জানতে চাইলে ইমরুল বলেন, ‘ভাই আমরা কিন্তু এক সিরিজ আগেও মুশফিককে নিয়ে এরকম কথা বলেছি। তবে মুশফিক কিন্তু প্রমাণ করে দিয়েছে। আমার কাছে মনে হয় ধৈর্য হারানোর কিছু নাই। মুমিনুল বাংলাদেশের বর্তমানে এখনো ১১টা সেঞ্চুরির মালিক। মুমিনুল জানে কিভাবে রান করতে হয় এবং সে ১১টা সেঞ্চুরি করেই বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার, আমি মনে করি। আপনারা একটু ওকে ভরসা দেন, আমার মনে হয় ও কামব্যাক করবে। শক্তভাবে ফিরে আসবে আমার বিশ্বাস।’
নেতৃত্ব যেহেতু নেই, সে কারণে ব্যাটিংয়ে ফোকাসটা বেশি দিতে পারবে মুমিনুল। সেটা জানিয়ে ইমরুল বলেন, ‘সে তো এখন ব্যাটিংয়ে আরও বেশি ফোকাস করবে। বেশি ফোকাস থাকবে, আরও বেশি নির্ভর থাকবে ব্যাটিং নিয়ে। তার নিজের কাজটা সে ঠিকভাবে করতে পারবে। অধিনায়ক থাকলে যেটা হয় পুরো দলকে নিয়ে পরিকল্পনা করা লাগে। অনেক পরিকল্পনা থাকতে হবে। এ জিনিসটা তো তার থেকে সরে গেছে এখন সে ফোকাস থাকবে তার ব্যাটিংয়ে।’
সাকিব জ্বলে উঠলে দারুণ একটি ম্যাচ হবে বলে মনে করেন ইমরুল। তিনি বলেন, ‘সাকিব যদি ৫/৫ দশ উইকেট নিয়ে নেয় তাহলে তো আর কঠিন না (হাসি)। কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। তাইজুল আছে বা যারাই আছে না কেন সবাই অনেক সামর্থ্যবান দশ উইকেট করে নেওয়ার। আমার কাছে মনে হয় এক্সসাইটিং একটা টেস্ট ম্যাচ হবে।’
আইএইচএস/