‘ছেলেরা বুঝে ফেলেছে, প্রতিকূল পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবিলা করতে হয়’
জালাল ইউনুস নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতেই পারেন। ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি প্রধানের দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। শুধু জিতেইনি। আগে কখনো যা হয়নি বা করা সম্ভব হয়নি- সেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আফগানদের ‘বাংলা ওয়াশের’ সম্ভাবনাও জেগেছে।
২৮ ফেব্রুয়ারি, সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তামিমের দল জিতে গেলেই রচিত হবে সাফল্যর নতুন গল্প। প্রথমবার আফগানরা হবে ধবল ধোলাই।
এই যে ঘরের মাঠে আফগানদের নাকানি চুবানি খাইয়ে চরমভাবে পর্যদুস্ত করার মঞ্চ প্রস্তুত। ভক্ত ও সমর্থকদের পাশাপাশি বিসিবি কর্মকর্তারাও খুশি, সন্তুষ্ট। বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির নতুন প্রধান জালাল ইউনুস কেমন অনুভব করছেন?
দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম সিরিজে এমন সাফল্য, ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি প্রধান হিসেবে এটা কতটা ভাল লাগার? জাগো নিউজের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্নর মুখোমুখি হয়ে জালাল বলেন, ‘আগে যখন মিডিয়া এবং অন্য কমিটিতে ছিলাম, তখন অত ভাল লাগতো না। আর এখন ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আছি বলেই যে খুব ভাল লাগছে, ব্যাপারটা মোটেই এমন না। জাতীয় দল জিতলে তখনো ভাল লাগতো। এখনো ভাল লাগে। তবে হ্যাঁ, একটা চেঞ্জ আসছে। এখন সরাসরি ক্রিকেট অপারেশন্স এর দায়িত্বে। জাতীয় দলের দেখভাল করা এখন আমার দায়িত্ব ও কর্তব্যের অংশ। সেই দায়িত্ব থেকে প্লেয়াররা ভাল খেললে অবশ্যই ভাল লাগে। তাদের জয় মানে আমাদের সবার জয়। দেশের জন্যও খেলতেছে, ক্রেডিট গোজ টু টিম।’
সিরিজ শেষে দলকে কোথায় দেখতে চান? এ প্রশ্নের জবাবে জালাল বলেন, ‘আমরা তো সিরিজটা ক্লিন স্যুইপ করতে চাইবো। আমরা হোম অ্যাডভান্টেজে খেলছি। আমাদের কন্ডিশনে আমরা বেটার টিম। আফগানরাও টাফ অপোনেন্ট। তারপরও ঘরের মাঠে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখানো ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। আমার মনে হয় আমরা এরই মধ্যে সে চ্যালেঞ্জ অনেকটাই অতিক্রম করে ফেলেছি। আর শেষ ম্যাচ জিতলে সে চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব হবে। সেটা হবে অনেক ভাল লাগার।’
দুই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটারদের নিয়ে জালালের মূল্যায়ন, ‘বিপদে ধৈর্য্য ধরে খেলার প্রবণতা বেড়েছে। প্রথম ম্যাচে একসঙ্গে চট জলদি অতগুলো উইকেট পতনের পর দুই তরুন আফিফ-মিরাজ ব্রিলিয়ান্ট পার্টনারশিপ গড়ে তুললো। কি চমৎকার বোঝা-পড়া। সবচেয়ে বড় কথা ছিল ধৈর্য্য। সবাইতো আমরা রান দেখি। রানের মানদণ্ডে জুটির মূল্যায়ন করি। কিন্তু সেই রানটা যে এমন ধৈর্য্য নিয়ে করা যায়। তা দেখিয়েছে মিরাজ আর আফিফ। একটাও ব্যাড শট খেলেনি। ধৈর্য্য ধরে উইকেটে থেকে আস্তে আস্তে ইনিংস গড়ে পার্টনারশিপ তৈরি করেছে। অনেকক্ষণ ব্যাটিং করেছে। আফগান তিন টপ স্পিনারদের সবার কোটা পূর্ণ করে তারপর পেসারদের ওপর চড়াও হয়ে ক্যাপিটালাইজ করেছে। ক্রিজে থেকে নিজেরা যে প্ল্যান করেছে সেটা আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে। এটা ইউনিক। সত্যিই আমি খুব উপভোগ করেছি।’
দ্বিতীয় ম্যাচে লিটন দাস এবং মুশফিকের সাজানো গোছানো ব্যাটিং দেখেও দারুণ সন্তুষ্ট ক্রিকেট অপসের প্রধান। ‘প্রথম দিনের মত এত উইকেট না পড়লেও দ্বিতীয় ম্যাচে আমরা প্রথম দিকে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু তারপরও ধৈর্য্য ধরে খেলে সেই সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা দেখলাম লিটন দাস আর মুশফিকের। তা দেখে সত্যিই খুব ভাল লাগলো। মুশফিক আর লিটন যেভাবে ধরে ধরে আস্তে আস্তে খেলে বিরাট জুটি রচনা করলো সেটা দেখেও দারুণ অনুভুতি হলো। বোঝাই গেল যে তারা এখন বুঝতে পেরেছে এ উইকেটে খারাপ শট না খেলে ধৈর্য্য ধরে ব্যাটিং করলে আউট হওয়ার সম্ভাবনা কম। রানও আসবে। বড় জুটিও তৈরি হবে।’
জালালের শেষ কথা, ‘আমাদের ছেলেরা এখন পরিষ্কার বুঝে ফেলেছে, প্রতিকুল পরিস্থিতিতে হতচকিত কিংবা ভিত-সন্ত্রস্ত না হয়ে ঠান্ডা মাথায় ধৈর্য্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করতে হবে। এটাই দরকার ছিল।’
এআরবি/আইএইচএস